‘মদ-কাণ্ডে’ নিষিদ্ধ ফুটবলারদের জন্য বন্ধ হচ্ছে জাতীয় দলের দরজাও
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বসুন্ধরা কিংসের পাঁচ ফুটবলারদের সামনে জাতীয় দরজাও আপাতত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ১২ ও ১৭ অক্টোবর মালদ্বীপের সঙ্গে ২০২৬ বিশ্বকাপের প্রাক্–বাছাইয়ের দুটি ম্যাচে সম্ভবত তাঁদের নেওয়া হবে না। এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও ঘটনাক্রম সেদিকেই যাচ্ছে।
আজ বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে তেমন ইঙ্গিতই মিলেছে। বিষয়টা নিয়ে বাফুফের সভায় আলোচনা হয়নি। তবে সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তের বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘ওই খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করা কঠিন। কারণ, আমি মনে করি শৃঙ্খলাজনিত শাস্তি সবার জন্যই হওয়া উচিত। আমার যেটা মনে হয়, কোচ সম্ভবত তাদের জাতীয় দলে নেবে না।’
এরপর বাফুফে সভাপতি জানিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত মতও, ‘যখন একটা ক্লাব শৃঙ্খলাজনিত ব্যবস্থা নেয়, বাফুফেকে একটা চিঠি দিয়ে ফেলে, তখন আমার মনে হয় না তারা জাতীয় দলের জন্য বিবেচনায় আসবে।’
বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘৩–৪ দিন আগে বসুন্ধরা কিংস থেকে আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, শৃঙ্খলাজনিত কারণে তারা ৪-৫ জন খেলোয়াড়কে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। খেলোয়াড়েরা ক্লাবের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। ক্লাব যখন শৃঙ্খলাজনিত কারণে ব্যবস্থা নেয়, বাফুফের দায়িত্ব হয়ে যায় বিষয়টা দেখা। আমরা সেটা দেখছি। তদন্ত করতে দিয়েছি।’
সভা শেষে বাফুফের এক সদস্য প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, নিষিদ্ধ খেলোয়াড়দের দলে নিতে চান না বলে কোচ হাভিয়ের কাবরেরাই বাফুফেকে জানিয়ে দিয়েছেন। ওই সদস্য বলেন, কোচ এই খেলোয়াড়দের না নেওয়ার পক্ষে। কোচ বাফুফে সভাপতিকে বলেছেন, এটা বিবেচনা করা যাবে না।
অভিযুক্ত ৫ ফুটবলার হলেন তপু বর্মণ, আনিসুর রহমান, তৌহিদুল আলম সবুজ, শেখ মোরসালিন ও রিমন হোসেন। এর মধ্যে আনিসুর রহমান ও তপু বর্মণ নিয়মিত জাতীয় দলের একাদশের খেলোয়াড়। রিমন কিছুদিন আগে জাতীয় দলে নিয়মিত খেললেও এখন নিয়মিত নন। ১৮ বছরের তরুণ শেখ মোরছালিন গত জুন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নজর কেড়েছেন। আফগানিস্তানের সঙ্গে সর্বশেষ দুটি ম্যাচেও খেলেছেন। এখন তিনি জাতীয় দলে নিয়মিত মুখ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গোল করেছেন। জাতীয় দলের খেলেছেন ৭ ম্যাচ। তৌহিদুর রহমান সবুজ অবশ্য জাতীয় দলে নেই বেশ কয়েক বছর। কিংসের হয়েও তিনি খুব নিয়মিত নন।
অভিযোগ আছে, গত ২০ সেপ্টেম্বর এএফসি কাপে মালদ্বীপের মাজিয়া ক্লাবের বিপক্ষে মালেতে ৩-১ গোলে অপ্রত্যাশিত হারের পরদিন দেশে ফেরার সময় ওই পাঁচ ফুটবলার অবৈধ মদ এনেছিলেন। হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তারা তাঁদের কাছে ৬৪ বোতল বিদেশি মদ পেয়েছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। তবে অনেকের সন্দেহ, ১০০ বোতলের কাছাকাছি ছিল মদ। বিমানবন্দর কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, দুটি ব্যাগে আসা মদের মোট পরিমাণ ১০০ লিটারের বেশি।
ওই পাঁচ ফুটবলারকে বসুন্ধরা কিংস সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। ২ অক্টোবর এএফসি কাপে ভারতের ওডিশা এফসির সঙ্গে তাদের স্কোয়াডে রাখা হয়নি। পাশাপাশি বিষয়টা অধিকতর তদন্ত করছে কিংস কর্তৃপক্ষ। আজ বাফুফের সভা শেষে বাফুফের সহসভাপতি ও বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেছেন, ‘একটা অভিযোগ এসেছে। আমরা সাময়িকভাবে তাদের নিষিদ্ধ করেছি। একটা তদন্ত কমিটির গঠন করেছি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। প্রথমে আমরা খেলোয়াড়দের শোকজ করেছি। তাদের কাছে উত্তর পেয়ে বরখাস্ত করার পরদিন বাফুফেকে জানিয়েছি।’