নতুন মৌসুম, নতুন কোচ এবং পুরোনো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ডাগ আউটে কোচ বদলাচ্ছে, একাদশে খেলোয়াড়। বদলাচ্ছে না শুধু ইউনাইটেডের পারফরম্যান্স। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন ৮ জন কোচ (অন্তর্বর্তীকালীন সহ)। এরিক টেন হাগের আগে যে ৭ কোচ ছিলেন, তাঁদের মধ্যে লুই ফন গাল ছাড়া বাকি ৬ জনেরই শুরুটা হয়েছিল জয় দিয়ে। টেন হাগ সেই ৬ জনের দলটাকে ৭ জনের বানাতে পারলেন না, তাঁকে ফন গালের ভাগ্যই বরণ করতে হলো। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ব্রাইটনের কাছে ২-১ গোলে হেরে শুরু হলো এরিক টেন হাগের নতুন ইউনাইটেডের নতুন মৌসুমের পথচলা।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজিয়েছিলেন টেন হাগ। সিদ্ধান্তটা খুব একটা বিস্ময় হয়ে আসেনি অবশ্য। ইউনাইটেড ছাড়তে চান বলে গত কিছুদিন ধরে এত গাঁইগুঁই করেছেন, তাঁর ওপর সমর্থকেরা তো বটেই কোচও কিছুটা বিরক্ত হয়ে গেছেন। টেন হাগ অবশ্য আগেই বলে রেখেছিলেন, ৩৭ বছর বয়সী রোনালদোকে বাকিদের মতো ফিটনেসের প্রমাণ দিয়েই একাদশে সুযোগ পেতে হবে। শুধু নামের ভারে তিনি জায়গা পেয়ে যাবেন না।
রোনালদোকে বেঞ্চে রাখলেও টেন হাগ একাদশে সুযোগ দিয়েছেন আয়াক্স থেকে কয়েক দিন আগে কেনা আর্জেন্টাইন সেন্টারব্যাক লিসান্দ্রো মার্তিনেজ ও ব্রেন্টফোর্ড থেকে আনা ড্যানিশ উইঙ্গার ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনকে। এরিকসেনকে নামিয়েছেন ‘ফলস নাইন’ হিসেবে, তাঁর পেছনে ব্রুনো ফার্নান্দেজ, জ্যাডন সাঞ্চো ও মার্কাস রাশফোর্ড।
কিন্তু এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় লাভ হয়নি কিছুই। প্রথম ১০-১২ মিনিটেই শুধু মনে হচ্ছিল, হয়তো নতুন ইউনাইটেডকে দেখা যাবে এই মৌসুমে। কিন্তু এরপরের সময়টা সেই ভুল ভাঙিয়ে দিল টেন হাগের দল। এলোমেলো রক্ষণভাগ, মাঝমাঠ বলতে কিছু ছিল বলেও মনে হয়নি। ওদিকে ৩০ ও ৩৯ মিনিটে দারুণ দুটি গোল করে ব্রাইটনকে এগিয়ে দেন জার্মান মিডফিল্ডার প্যাসকাল গ্রস। ওই দুই গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে গেছে ইউনাইটেড।
রোনালদো বদলি নেমেছেন ৫৩ মিনিটে। ইউনাইটেড দু-একটা গোলের সুযোগও পেয়েছে এর পরেই। ৬০ মিনিটে একেবারে গোলবারের সামনে থেকে নেওয়া রাশফোর্ডের শট ঠেকিয়ে দেন ব্রাইটন গোলরক্ষক রবার্ট সানচেজ। মিনিট ছয়েক পরে এরিকসেনের একটা শটও সানচেজ ঠেকিয়ে দেন কর্নারের বিনিময়ে।
ইউনাইটেড ব্যবধান কমানো গোলটা পায় ওই কর্নার থেকে আসা বলেই। উড়ে আসা বলে লাফিয়ে হাত লাগালেও সেটা বিপৎসীমার বাইরে পাঠাতে পারেননি সানচেজ। জটলার মধ্যে ইউনাইটেড ডিফেন্ডার দালোতের গায়ে লেগে সেটা জালের দিকে যাচ্ছিল। ব্রাইটন মিডফিল্ডার ম্যাক অ্যালিস্টার সেটা বাইরে পাঠাতে গিয়ে জালেই ঠেলে দেন।
আত্মঘাতী ওই গোলটা ছাড়া পুরো ম্যাচে ব্রাইটনই বরং মুগ্ধ করেছে, কী আক্রমণে, কী রক্ষণে! মনেই হয়নি মৌসুমের শুরুর আগে দলটা দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় মার্ক কুকুরেয়া ও ইয়েভেস বিসুওমাকে বিক্রি করে দিয়েছে। লিগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওল্ড ট্রাফোর্ডে জয় সেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার।