আবারও বিশ্বাসভঙ্গ নেইমারের, এবার প্রেমিকার বোনের তোপ
লিলের বিপক্ষে গত ২০ ফেব্রুয়ারি অ্যাঙ্কেলে চোট পাওয়ার পর আর মাঠে ফিরতে পারেননি নেইমার। মৌসুম শেষ হলো, পিএসজিও লিগ জিতেছে, নেইমারও চোট থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এর মাঝে মাঠের বাইরে সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না ব্রাজিলিয়ান তারকার।
গত মাসে সন্তানসম্ভবা প্রেমিকা ব্রুনা বিয়ানকার্দির বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল নেইমারের বিরুদ্ধে। নিজের ভুল স্বীকার করে সে জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন পিএসজি ফরোয়ার্ড। কিন্তু নেইমার সেই ভুল থেকে শিক্ষা নেননি। অন্তত তাঁকে তাক করে ব্রুনা বিয়ানকার্দির বোন বিয়ানকা বানকার্দি যে বিস্ফোরক চিঠি লিখেছেন, সেটা পড়লে তা–ই মনে হয়।
ব্রাজিলিয়ান সংবাদকর্মী এরলান বাস্তোস গত মাসে দাবি করেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ইনফ্লুয়েন্সার ফের্নান্দো কাম্পোসের সঙ্গে নাকি প্রেম করছেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘ল্যান্স’ জানিয়েছে, কাম্পোস নিজেই জানিয়েছেন যে সর্বশেষ ভালোবাসা দিবসে ব্রাজিলিয়ান তারকার সঙ্গে ভালোবাসায় মজেছিলেন তিনি। ব্রাজিলের অনলাইন সংবাদমাধ্যম মেট্রোপলিসকে নিজের দাবির সমর্থনে প্রমাণও দেখিয়েছেন ফের্নান্দো কাম্পোস।
এসব নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় ব্রুনার কাছে ক্ষমা চেয়ে ইনস্টাগ্রামে একটি খোলা চিঠি পোস্ট করেছিলেন নেইমার, ‘ব্রুনা, আমি এটা তোমাদের (বিয়ানকার্দি ও সন্তান) জন্য করছি। অসমর্থনীয় বিষয়কে যৌক্তিক বানানোর চেষ্টা করছি। এটা করার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু তোমাকে আমার জীবনে প্রয়োজন। আমি জানি, এসব ঘটনায় তুমি কতটা ভুগছ এবং কতটা আমার পাশে থাকতে চাও। আমিও তোমার পাশে আছি। আমি ভুল করেছি। তোমার সঙ্গে ঠিক কাজটা করিনি।’
কিন্তু এ সপ্তাহে নতুন বিতর্ক শুরু হয় নেইমারকে নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক মডেল সেলেস্তে ব্রাইট দাবি করেন, তাঁকে ব্যক্তিগত খুদে বার্তা পাঠিয়েছেন পিএসজি ফরোয়ার্ড। ইনস্টাগ্রামে ১৩ লাখ অনুসারী আছে সেলেস্তের। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ইউওএল জানিয়েছে, সেলেস্তে ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সেই ছবিতে করতালির ইমোজি দিয়ে টেক্সট করেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। সেলেস্তে বিষয়টি মোটেও ভালোভাবে নেননি।
ইউওএল জানিয়েছে, নেইমারের খুদে বার্তার স্ক্রিনশট প্রকাশ করে সেলেস্তে লিখেছিলেন, ‘প্রেমিকা কিংবা বউ থাকলে মেয়েদের এমন বার্তা পাঠানো অনুচিত। এটা ঠিক না। নিজের সঙ্গীর প্রতি ভীষণ অসম্মানজনক।’
তবে এ ঘটনার পর সেলেস্তের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের হদিস মেলেনি। সম্ভবত অ্যাকাউন্টটি বন্ধ রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন হাউস ফ্যাশননোভার এই দূত। যাহোক, ল্যান্স জানিয়েছে, এ ঘটনার পর শুক্রবার নেইমার টুইটারে একটি পোস্ট দেন, ‘আর কেউ আছে?’ পিএসজি তারকার এই পোস্টে নেটিজেনরা আন্দাজ করে নেন, নেইমার সম্ভবত তাঁর প্রতি ওঠা অভিযোগ নিয়ে সরস কিন্তু তির্যক মন্তব্য করেছেন, অর্থাৎ এমন অভিযোগ তোলার মতো আর কেউ আছে কি না!
নেইমারের এই পোস্টের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর প্রেমিকার বোন ও পুষ্টিবিদ বিয়ানকা বানকার্দি। নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে নেইমারের প্রতি একটি খোলা চিঠি লেখেন তিনি। আর এ চিঠি যেন শুধু পারিবারিক লোকজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে, সবাই যেন পড়তে পারে, সে জন্য এটি ‘পাবলিক’ করে দেন বানকার্দি। বেশ বড় এই চিঠির শুরুতেই বানকার্দি লিখেছেন, ‘আমি এটা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে পারতাম। কিন্তু সে (নেইমার) যেহেতু ইন্টারনেটে মজা করতে পছন্দ করে, তাই সেটাই হোক।’
নেইমারকে তাক করে সেই চিঠিতে বানকার্দি লিখেছেন, ‘মূল্যবোধ, প্রতিশ্রুতি ও চরিত্রের অস্তিত্ব নেই। লজ্জিত না হয়ে সে এ পরিস্থিতি নিয়ে মজা করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে হাস্যরস চলছে, যা আমার বোনকে আবারও লজ্জায় ফেলেছে। সে মনে করে বাকিরা তার মানসম্মানের হানি করতে চায়, আসলে সে নিজেই নিজের সম্মানহানি করছে। একটা মানুষ যার মধ্যে পৌরুষের অভাব আছে, পরিণত হতে চায় না এবং কৃতকর্মের জন্য নিজেই দোষ স্বীকার করে।’
নেইমারের এসব কাজের সমর্থন দেওয়া মানুষদেরও সমালোচনা করে বানকার্দি লিখেছেন, তাঁর আশপাশের লোকজন ‘তাকে ঈশ্বরতুল্য ভক্তি করে এবং আজেবাজে কাজগুলোর প্রশংসা করে।’
এই চিঠিতে বানকার্দি স্পষ্ট করেই লিখেছেন, তাঁর পরিবার নেইমারের সঙ্গে সহ-অবস্থানেই থাকতে চায়, কিন্তু এ ধরনের বিতর্ক আর সহ্য করবে না। চিঠিতে বানকার্দি সরাসরিই প্রশ্ন করেছেন নেইমারকে, ‘পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে কি লাভ যদি এমন শিশুসুলভ কাজ চলতেই থাকে?’