হ্যাজার্ডের অবসরের গুঞ্জন, রামোস–দে হেয়ারা কী করবেন
১ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে ইউরোপের শীর্ষ লিগের দলবদলের দরজা। এরই মধ্যে দলবদলের পথে থাকা বেশির ভাগ তারকা খেলোয়াড় নিজেদের নতুন ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন। নেইমার–করিম বেনজেমারা সৌদি আরব গিয়ে ফুটবলের দলবদলে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছেন। অনেকে আবার ইউরোপের মধ্যেই খুঁজে নিয়েছেন নিজের ভবিষ্যৎ। তবে এমন অনেকে তারকা আছেন, যাঁদের ভাগ্য এখনো অনিশ্চিত। এই তারকাদের একজন হলেন স্পেনের কিংবদন্তি ডিফেন্ডার সের্হিও রামোস।
ফুটবলের পথচলায় বিশ্বকাপসহ সম্ভাব্য প্রায় সব শিরোপা জেতা রামোস অবশ্য এ তালিকায় একা নন। তাঁর সঙ্গে আছেন বেলজিয়ামের ইতিহাসে অন্যতম সফল ফুটবলারদের একজন এডেন হ্যাজার্ড ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক স্প্যানিশ গোলরক্ষক দাভিদ দে হেয়াও। ক্লাব খুঁজতে খুঁজতে হ্যাজার্ড নাকি এখন পেশাদার ফুটবল থেকে বিদায় নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন।
সের্হিও রামোস
সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডারদের তালিকায় অনায়াসেই জায়গা পাবেন রামোস। রক্ষণে রিয়াল মাদ্রিদ ও স্পেন জাতীয় দলকে লম্বা সময় ধরে দৃঢ়তা দিয়ে গেছেন এই ডিফেন্ডার। ১৬ বছর রিয়ালে কাটানোর পর ২০২১ সালে পাড়ি জমান পিএসজিতে। গত মৌসুমের শেষ পর্যন্ত পিএসজিতেই ছিলেন রামোস। তবে এ বছরের ২ জুন রামোস পিএসজি ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেন। এর পর থেকে ক্লাবের খোঁজেই আছেন এই স্প্যানিশ তারকা। মাঝে তাঁর ইন্টার মায়ামিতে যাওয়ার গুঞ্জন শোনা যায়। যদিও সে গুঞ্জন খুব বেশি দিন টেকেনি।
এরপর জানা যায়, রামোস যাচ্ছেন তুরস্কের ক্লাব বেসিকতাসে। কিন্তু পরে জানা যায়, চুক্তির অঙ্কের বনিবনা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত রামোস তুরস্কেও যাচ্ছেন না। বেসিকতাস ক্লাবের সহসভাপতি এমরে কোজাদাগ স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন, টাকা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় বেসিকতাসের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে না রামোসের। পাশাপাশি তাঁর আরেক তার্কিশ ক্লাব গালাতাসারইয়ে যাওয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে।
সব মিলিয়ে এখন অনিশ্চয়তার বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে রামোসের ভবিষ্যৎ। তবে ইউরোপের দরজা আগে বন্ধ হয়ে গেলেও সৌদি আরবে দলবদলের দরজা খোলা থাকবে আরও কিছুদিন। সেখানকার ক্লাব আল ইত্তিহাদের সঙ্গে জড়িয়ে তাঁর নামও শোনা যাচ্ছে। এখন রামোস শেষ পর্যন্ত কোথায় নিজের ঠিকানা খুঁজে নেন, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
দাভিদ দে হেয়া
বয়স এখনো ৩২। ক্যারিয়ারে আরও কয়েক বছর শীর্ষ স্তরের ফুটবল খেলার সুযোগ আছে দাভিদ দে হেয়ার। কিন্তু ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়ার পর এখনো নিশ্চিত হয়নি তাঁর ভবিষ্যৎ গন্তব্য। ২০১১ সালে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের হাত ধরে ওল্ড ট্রাফোর্ডে এসেছিলেন দে হেয়া। ৩২ বছর বয়সী গোলরক্ষক এরপর ইউনাইটেডের হয়ে প্রায় ৫৫০ ম্যাচ খেলেছেন।
নতুন মৌসুম শুরুর আগে তাঁর চুক্তি নবায়নের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তিনি ঘোষণা দিয়ে জানান, ‘নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য এখনই সঠিক সময়, সময় নতুন পরিবেশে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।’ দে হেয়ার সেই নতুন চ্যালেঞ্জের মঞ্চটি এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে দ্রুত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারলে হয়তো ইউরোপের বাইরেই ঠিকানা খুঁজে নিতে হবে তাঁকে।
এডেন হ্যাজার্ড
চেলসিতে সোনালি সময় পার করে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর শূন্যতা পূরণ করতেই রিয়াল মাদ্রিদে এসেছিলেন এডেন হ্যাজার্ড। কিন্তু কোথায় কী! চোটজর্জরিত হ্যাজার্ড চার মৌসুমে রিয়ালের হয়ে মাঠেই নামতে পেরেছেন মাত্র ৭৬টি ম্যাচে। গোল করেছেন মাত্র ৭টি। হতাশা নিয়েই শেষ পর্যন্ত রিয়ালকে বিদায় জানাতে হয়েছে হ্যাজার্ডকে। রিয়াল ছাড়ার পর থেকে হ্যাজার্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে শোনা যায় নানা গুঞ্জন।
ক্রিস্টাল প্যালেসের হয়ে তাঁর ফের প্রিমিয়ার লিগে ফেরার খবরও শোনা গিয়েছিল। এমনকি সৌদি আরব এবং এমএলএসের ক্লাব থেকেও তাঁর ব্যাপারে আগ্রহের খবর শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এখন নতুন খবর হচ্ছে, হ্যাজার্ড নাকি আর কোথাও না গিয়ে ফুটবলকেই বিদায় বলে দিতে যাচ্ছেন। যেকোনো সময় আসতে পারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। বিশ্বকাপের পরই বিদায় বলেছিলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলকে। এখন ক্লাব ফুটবলেও ইতি টানলে শেষ হবে হ্যাজার্ড–অধ্যায়।
জেসে লিনগার্ড
একসময় ইংলিশ ফুটবলে উদীয়মান তারকা হিসেবেই দেখা হতো জেসে লিনগার্ডকে। লম্বা সময় খেলেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো দলেও। কিন্তু প্রতিভার পূর্ণ–স্ফুরণ ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। বিভিন্ন ক্লাবে ধারে খেলার পর ২০২২ সালে তাঁকে কিনে নেয় নটিংহাম ফরেস্ট। কিন্তু মৌসুম শেষে তাঁকে ছেড়ে দেয় নটিংহামও। এখন লিনগার্ডের ফের ওয়েস্ট হামে ফেরার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে তাঁর ভবিষ্যৎ যে এখনো নিশ্চিত নয়, তা বলায় যায়।