পেনাল্টি নিয়ে রেফারির ‘শিশুতোষ’ সিদ্ধান্তে খেপেছে আর্সেনাল–বায়ার্ন দুদলই
এমিরেটসে কাল রাতে আর্সেনাল জেতেনি, জেতেনি প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখও। চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ২-২ গোলে ড্র করেছে ইংলিশ ও জার্মান ক্লাব দুটি। সমতায় শেষ হওয়া প্রথম লেগের ম্যাচটিতে স্কোর লাইন ছাড়াও সমতা ছিল আরেকটি বিষয়ে। দুই দলই যে ম্যাচ শেষে ‘ন্যায্য’ পেনাল্টি না পাওয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছে।
শেষ মুহূর্তে আর্সেনালকে পেনাল্টি না দিয়ে গানার সমর্থকদের দুয়ো শুনে মাঠ ছেড়েছেন রেফারি গ্লেন নিবার্গ। তবে সুইডিশ রেফারির ওপর রাগটা বেশি ঝেড়েছেন বায়ার্ন মিউনিখ কোচ টমাস টুখেল। দলটির ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন পেনাল্টি থেকে একটি গোল করলেও টুখেল মনে করছেন আরেকটি পেনাল্টি প্রাপ্য ছিল তাঁর দলের।
ম্যাচের ৬৬ মিনিটের ঘটনা সেটি। শুধু ঘটনা না বলে উদ্ভট ঘটনাই বলতে হয়। আর্সেনাল গোলরক্ষক দাভিদ রায়া গোল কিক নেওয়ার পর পেনাল্টি বক্সেই হাত দিয়ে বলটি ধরে আবার গোলরক্ষককে সেটি ফেরত দেন দলটির ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল মাগালাইস। পরিষ্কার হ্যান্ডবল হলেও রেফারি ‘শিশুতোষ’ কারণ দেখিয়ে দেননি পেনাল্টি।
ম্যাচ শেষে এ নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন টুখেল, ‘আমাদের প্রাপ্য পেনাল্টি দেওয়ার মতো সাহসও আজ ছিল না রেফারির। আমি জানি, ঘটনাটি অদ্ভুতই ছিল। ওরা বলটি রাখল, তিনি (রেফারি) বাঁশি বাজালেন, এরপর ডিফেন্ডার আবার হাত দিয়ে বলটাকে তুলল। মাঠে রেফারি (পেনাল্টি না দেওয়া নিয়ে) যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা নিয়েই আমার মেজাজ খারাপ। তিনি আমাদের খেলোয়াড়দের বলেছেন, এটা নাকি ‘‘শিশুতোষ ভুল’’, আর এই কারণে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের মতো ম্যাচে তিনি পেনাল্টি দিতে পারেন না। কী মারাত্মক ব্যাখ্যা। শিশুতোষ ভুল, বড়দের ভুল, তাতে কী আসে যায়।’
হতাশ টুখেল বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না কেন পেনাল্টি দিলেন না রেফারি, ‘খেলা চলা অবস্থায় খেলা চলছে না মনে করে সে হাত দিয়ে বল ছুঁল। রেফারিও মানছেন বল খেলার মধ্যে ছিল ও হ্যান্ডবল হয়েছে। আমরা রাগে ফুঁসছি, কারণ বড় একটা সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গেছে। খুবই হতাশজনক।’
আর্সেনালের ঘটনাটি ম্যাচের যোগ করা সময়ের। বায়ার্নের পেনাল্টি বক্সে দলটির গোলরক্ষক মানুয়েল নয়্যার বাধা দেন আর্সেনাল ফরোয়ার্ড বুকায়ো সাকাকে। নয়্যারের বাড়িয়ে দেওয়া ডান পা ফেলে দেয় সাকাকে। আর্সেনালের খেলোয়াড়ের আবেদন করলেও রেফারি পেনাল্টি দেননি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিও (ভিএআর) হস্তক্ষেপ করেনি।
আমি নিশ্চিত সাকারটা পেনাল্টি ছিল, তবে আমি আরও বেশি নিশ্চিত ওটা (গ্যাব্রিয়েলের হ্যান্ডবল) নিয়ে। কী অবিশ্বাস্য! আর্সেনালের চেয়ে বায়ার্নেরটাই বেশি পেনাল্টি ছিল।
ম্যাচের পর আর্সেনালের সমতা ফেরানো গোলদাতা লিয়ান্দ্রো ত্রোসার টিএনটি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্ষোভ ঝাড়েন, ‘আমার কাছে তো এটা পেনাল্টিই ছিল, এটা পরিষ্কার পায়ে পা লেগেছে।
রেফারি কেন পেনাল্টির বাঁশি বাজালেন না, সেটি বুঝতে পারছেন না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক তারকা ও বর্তমানে ফুটবল-বিশেষজ্ঞের কাজ করা রিও ফার্ডিনান্ড, ‘কেন পেনাল্টি দেওয়া হলো না? ভিএআর ছিল, তারপরও দেওয়া হলো না, অবিশ্বাস্য!’
ফার্ডিনান্ড অবশ্য বলেছেন বায়ার্নকে পেনাল্টি না দেওয়াটা আরও বড় ভুল ছিল, ‘আমি নিশ্চিত সাকারটা পেনাল্টি ছিল, তবে আমি আরও বেশি নিশ্চিত ওটা (গ্যাব্রিয়েলের হ্যান্ডবল) নিয়ে। কী অবিশ্বাস্য! আর্সেনালের চেয়ে বায়ার্নেরটাই বেশি পেনাল্টি ছিল।’
আগামী বুধবার আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হবে দুই দল।