বার্নব্যুতে ক্রুসের অশ্রুসিক্ত বিদায়
গত মঙ্গলবারই ঘোষণা দিয়েছেন টনি ক্রুস—মৌসুম শেষে ছাড়বেন রিয়াল মাদ্রিদ আর ইউরো শেষে ফুটবল। সেই ঘোষণার পর সবার চোখ ছিল গতকাল রাতে রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে রিয়ালের ম্যাচের দিকে। এটিই ছিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালের জার্সিতে ক্রুসের শেষ ম্যাচ। ঘরের মাঠে ক্রুসের বিদায়টা যে আবেগপ্রবণ ও স্মরণীয় হবে, তা জানাই ছিল। কাল রাতে হয়েছেও তাই।
গার্ড অব অনার, শূন্যে ছুড়ে অভিবাদন জানানো—ক্রুসের বিদায়বেলার সম্ভাব্য সব রীতিই যেন পালন করা হয়েছে। ১০ বছর ধরে যে মানুষটি রিয়ালের মাঝমাঠকে দক্ষ সেনার মতো আগলে রেখেছিলেন, এমন বিদায় তো তাঁর প্রাপ্যও। ম্যাচ শেষে একই কথা বলেছেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তিও, ‘বার্নাব্যু টনি ক্রুসকে সেভাবে বিদায় দিয়েছে, যা তার প্রাপ্য।’
বার্নাব্যুর ম্যাচটিতে পুরো স্টেডিয়ামই যেন ছিল ক্রুসময়। তাঁকে গার্ড অব অনার দিয়েছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। এ সময় রিয়ালের সব খেলোয়াড়দের গায়ে ছিল ক্রুস লেখা ৮ নম্বর জার্সি। গ্যালারিতে দুই দলের সমর্থকেরাও ‘ক্রুস ক্রুস’ ধ্বনি তুলে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানায় ‘স্নাইপার’খ্যাত এই মিডফিল্ডারকে। মাঠের দক্ষিণ পাশে লাগানো ছিল ক্রুসের ছবি আঁকা বিশাল এক ব্যানার। যেখানে রিয়ালের হয়ে ক্রুসের ২২টি ট্রফি জেতার কথাও উল্লেখ ছিল। আর পাশে আরেকটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ধন্যবাদ তোমাকে, কিংবদন্তি।’
ম্যাচের ৮৭ মিনিটে ক্রুসকে যখন তুলে নেওয়া হয়, তখনো দেখা মেলে একই রকম দৃশ্যের। দুই দলের খেলোয়াড়েরা হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানান ক্রুসকে। মাঠ ছেড়ে যেতে যেতে হাত উঁচিয়ে বিদায়ী অভিবাদনের জবাব দেন ক্রুস। তবে সবচেয়ে আবেগপ্রবণ দৃশ্যটি দেখা যায় বিদায়বেলায় সন্তানদের কাছে যাওয়ার পর। অঝোরে কাঁদতে থাকা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আবেগ আর সামলাতে পারেননি ক্রুস। পরে তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানদের প্রতিক্রিয়া আমাকে ভেঙেচুরে দিয়েছে। আমি শুধু বলতে পারি, রিয়াল মাদ্রিদ।’
প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ক্রুস আরও বলেছেন, ‘বিদায় বলাটা সহজ নয়। আমি রিয়াল মাদ্রিদকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি এখানে আমার ১০ বছর উপভোগ করেছি। রিয়াল মাদ্রিদ আমার ঘর।’
বার্নাব্যু বিদায় বললেও রিয়ালের জার্সিতে পথচলা শেষ হয়নি ক্রুসের। ওয়েম্বলিতে আগামী ১ জুন রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের মুখোমুখি হবে রিয়াল। সেদিন শেষবারের মতো রিয়ালের জার্সিতে দেখা যাবে ক্রুসকে। রিয়ালের জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগের পঞ্চম শিরোপা জিতে কিংবদন্তিতুল্য এ ফুটবলার বিদায় নিতে পারেন কি না, সেটা দেখার অপেক্ষায় তাঁর ভক্তরা।