এমবাপ্পের জোড়া গোলে সমতায় ফ্রান্স
‘নাম্বারস, কালারস অ্যান্ড নয়েজ ফর আর্জেন্টিনা’—লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রথমার্ধে কথাটা ধারাভাষ্যকারের। গ্যালারির দুই-তৃতীয়াংশ আকাশি-সাদা সমর্থকে প্রায় আকাশি রং ধারণ করেছে। সে তুলনায় ফ্রান্সের সমর্থক কম। প্রথমার্ধের খেলায় কিলিয়ান এমবাপ্পেরাও গোছানো ফুটবল খেলতে পারেননি। আর্জেন্টিনাই সুযোগ তৈরি করেছে বেশি। শেষ পর্যন্ত গোলও আদায় করেছে দুটি।
২২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন মেসি। ৩৬ মিনিটে দুর্দান্ত আক্রমণ থেকে ম্যাক অ্যালিস্টারের পাস পেয়ে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে গোল করেন আনহেল দি মারিয়া। ফ্রান্সের বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করেছে আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের শুরু থেকেই আনহেল দি মারিয়া বাঁ প্রান্তে খেলেছেন। সেদিক দিয়েই বেশি আক্রমণ করে আর্জেন্টিনা। ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে দি মারিয়াকে ভালোভাবে মার্ক করতে পারেননি। এই ধারাবাহিকতায় ২১ মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ফ্রান্সের বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেন দি মারিয়া।
ফরাসি উইঙ্গার ওসমান দেম্বেলে পেছন থেকে তাঁকে ট্যাকল করতে গিয়ে ফেলে দেন। বলের সঙ্গে দেম্বলের কোনো সংযোগ হয়নি। রেফারি সিমন মার্চিনিয়াক পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ফাউলটি এতই স্পষ্ট ছিল যে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি প্রযুক্তিও (ভিএআর) ঘটনাটি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করেনি। স্পটকিক থেকে ফ্রান্সের গোলকিপার উগো লরিসকে ফাঁকি দিয়ে ডান দিক দিয়ে নেওয়া শটে গোল করেন মেসি।
এই গোলের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপে অনন্য একটি রেকর্ডও গড়লেন মেসি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে গোল করা ও করানো মিলিয়ে মোট ২০টি গোলে প্রত্যক্ষ অবদান রাখলেন মেসি। বিশ্বকাপে মেসি নিজে করেছেন ১২ গোল, আর বানিয়েছেন আরও ৮ গোল। বিশ্বকাপে গোল করা ও গোল বানানো মিলিয়ে এর আগে জার্মানির সাবেক স্ট্রাইকার মিরোস্লাভ ক্লোসা ও ব্রাজিলের কিংবদন্তি রোনালদোর সঙ্গে যৌথ অবস্থানে ছিলেন মেসি। গোল করা ও বানানো মিলিয়ে ১৯ গোলে অবদান ছিল তিনজনের।
প্রথমার্ধের ৩৬ মিনিটে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলটি ছিল চোখ ধাঁধানো। ফরাসি রক্ষণ ফাঁকা পেয়ে ডান প্রান্তে ম্যাক অ্যালিস্টারকে পাস বাড়ান মেসি। ম্যাক অ্যালিস্টার বাঁ প্রান্তে বল বাড়ান আরও ভালো অবস্থানে থাকা দি মারিয়াকে। ফ্রান্সের গোলকিপার লরিস দি মারিয়াকে আটকাতে এগিয়ে গেলেও ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে বল জালে চালান করেন দি মারিয়া।
গোল করার কিছুক্ষণ পর দি মারিয়াকে কাঁদতে দেখা যায়। খেলছিলেন আর চোখ মুখছিলেন। হয়তো ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালের স্মৃতি মনে পড়ছিল তাঁর। ঊরুর চোটে পড়ে আর্জেন্টিনার সেই ফাইনাল খেলতে পারেননি।