‘হাজার ডলারে’ পেলে যখন কলামিস্ট

পেলে (১৯৪০–২০২২)ছবি: রয়টার্স

ফুটবল মানেই পেলে! এভাবেও কী বলা যায়? হয়তো, হয়তো না। তবে তিনি ছাড়া ফুটবলের ইতিহাস যে অসম্পূর্ণ তা বলতে দুবার ভাবার প্রয়োজন নেই। পেলে ফুটবল খেলেই ‘রাজা’ বনে গেছেন। ফুটবলের জন্যই পেয়েছেন জগৎজোড়া খ্যাতি। ফুটবলের এই রাজা কিন্তু কিছু সময়ের জন্য কলমও হাতে তুলে নিয়েছিলেন।

স্প্যানিশ নিউজ এজেন্সি ‘ইএফই’ বলছে, ১৯৭০ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপে ইএফইর কলামিস্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন পেলে। মজার ব্যাপার হলো, পেলে নিজের বুট তুলে রেখেছেন আরও ৭ বছর পর, ১৯৭৭ সালে। অর্থাৎ অবসর নেওয়ার আগেই লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন এই কিংবদন্তি।

আরও পড়ুন

স্প্যানিশ এই এজেন্সি যাত্রা শুরু করে ১৯৩৯ সালে। তবে এই নিউজ এজেন্সি ব্রাজিলে কাজ শুরু করে ১৯৬৮ সালে। ব্রাজিলে স্প্যানিশ এই এজেন্সির দায়িত্ব নেন এলতেরিয়ো রোমেরো নামের এক সাংবাদিক। ফুটবলের দেশ ব্রাজিলে কাজ শুরু করার পর থেকেই পেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তারা। রোমেরো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতেও সক্ষম হয়।

পেলে এখন শুধুই ছবি
ছবি: রয়টার্স

পেলের সঙ্গে যোগাযোগ করবার পেছনে তাদের যুক্তি ছিল এমন, এই মানের একজন ফুটবলার শুধু বলেই কিক মারতেই জানে না। কীভাবে ভাবতে হবে, লিখতে হবে সেটাও জানে। রোমেরো পেলেকে মেক্সিকো বিশ্বকাপে পাঁচটি কলাম লেখার প্রস্তাব দেয়।

সেই লেখার প্রস্তাবে রাজিও হয় পেলে। কিন্তু প্রতিটি লেখার জন্য সংযুক্ত কর ছাড়া এক হাজার ডলার দাবি করেন এই ব্রাজিলিয়ান। ওই মুহূর্তে ইএফই এজেন্সির জন্য যা দেওয়া সম্ভব ছিল না। তবে হাল ছাড়েন নি রোমেরো।

পেলের ক্লাবের অফিসের সামনে তাঁর সঙ্গে আবার কথা বলতে অপেক্ষা করেন রোমেরো। সেখানে একদিন অপেক্ষার পর মেলে পেলের দেখা। রোমেরো স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, ‘সেই সময়টাতে নিজের কোনো এক অঙ্ক পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন পেলে। রোমেরাকে দেখতেই তাই লেখার চুক্তির কথা না বলে পেলে বলেন, “ ওই তুমি কী অঙ্ক জানো। আমাকে সাহায্য করতে পারবে?”

আরও পড়ুন

তবে পেলের সঙ্গে কথা বলার সুযোগটা নষ্ট করেননি রোমেরো। পরীক্ষা দিতে যাওয়া পেলের জন্য আবারও অপেক্ষা করতে থাকেন। তিন ঘন্টা পর মুখে হাসি নিয়েই পরীক্ষা দিয়ে বের হন পেলে। রোমেরোকে বলেন-আমি পাস করে গেছি। এরপর পুরো বিষয়টি পেলের সামনে আরও খোলাসা করেন সেই সাংবাদিক। প্রতিটি লেখায় এক হাজার ডলার পাওয়ার শর্ত রাজি হন পেলে।

১৯৭০ বিশ্বকাপে বিশ্বকাপের দলগুলো নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী পাঁচটি আর্টিকেল লেখেন পেলে। যে লেখা ৪০টি মিডিয়ার কাছে বিক্রি করে ওই এজেন্সি। পুরো প্রকল্পটি আর্থিকভাবেও সফল ছিল বলেই দাবি করেন রোমেরো।