সানসিরোতে নিষ্ঠুর ভিএআরে ভন্ডুল কিশোর কামারদার রেকর্ড–উৎসব
বেচারা ফ্রান্সেসকো কামারদা!
এসি মিলানের কিশোর ফুটবলার কাল উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল করে ভাবল ইতিহাস হয়ে গেছে। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার ইতিহাস। কিন্তু সেই ইতিহাস কেড়ে নিল ভিএআর।
১৬ বছর বয়সী কামারদা কাল ক্লাব ব্রুগার বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচের শেষ দিকে তিজানি রেইন্ডার্সের ক্রসে হেড করে গোলের ইতিহাস গড়ার উৎসবে মাতে। দৌড়ে সমর্থকদের কাছে গিয়ে কানের কাছে হাতটাকে কাপ বানিয়ে তাঁদের আরও জোরে চিৎকার করতে বলার পর তার সতীর্থরা কাঁধে তুলে নেন তাকে। এ সময়ে টেলিভিশন পর্দায় গ্যালারিতে উপস্থিত কামরাদার মা ও বান্ধবীকে সুখের কান্না কাঁদতে দেখা যায়।
কামারদার উৎসব পণ্ড করতে তখনই হাজির ‘নিষ্ঠুর’ ভিএআর। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি জানিয়ে দেয়, অফসাইড ছিল কামারদা। কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেওয়ার মতো জার্সি খোলায় কামারদাকে হলুদ কার্ড দেখান মাঠের রেফারি।
ম্যাচ শেষে সেই কামারদা চোখে–মুখে একরাশ হতাশা নিয়েই বর্ণনা করল সেই সময়ের অনুভূতি, ‘খুবই আবেগপ্রবণ ব্যাপার ছিল, আমার মনে হয়, জীবনের সবচেয়ে সুখের মুহূর্ত ছিল সেটি। কিন্তু ভিএআর ছলনা করল। আমি খুব হতাশ, তবে আজকালের ফুটবলে এমন তো হতেই পারে।’
১৬ বছর ২২৬ দিন বয়সী কামারদার গোলটি টিকে গেলে চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ড হারাতেন আনসু ফাতি। ২০১৯ সালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ১৭ বছর ৪০ দিন বয়সে গোল করেছিলেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
ফাতির রেকর্ড কেড়েও হারানো কামারদা অবশ্য আরেকটি রেকর্ড মাঠে নেমেই গড়েছে। ৭৫ মিনিটে মাঠে নামা কামারদাই এখন চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলা সবচেয়ে কম বয়সী ইতালিয়ান।
বড় রেকর্ডটা হারানোর দুঃখ থাকলেও এই রেকর্ড নিয়েও গর্বিত কামারদা, ‘সত্যি বলছি, এই রেকর্ডটাও খুব গর্বের। আশা করছি, এমন রাত আরও আসবে। অবশ্যই এটি আমার জীবনের সেরা রাত।’
জীবনের সেরা রাতে ম্যাচের পর মাঠের পাশেই বাবার আলিঙ্গনে বাঁধা পড়া কামারদা সিরি ‘আ’ ইতিহাসেরও সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়। গত মৌসুমে মিলানের হয়ে ফিওরেন্তিনার বিপক্ষে ১৫ বছর বয়সে মাঠে নেমেই রেকর্ডটা গড়ে সে।
কামারদার ম্যাচে মিলানের জয়ের নায়ক রেইন্ডার্স। ডাচ মিডফিল্ডার করেছেন জোড়া গোল। ৩৪ মিনিটে মার্কিন তারকা ক্রিস্টিয়ান পুলিসিকের অলিম্পিক গোলে (কর্নার থেকে সরাসরি গোল) এগিয়ে যায় এসি মিলান। ৫১ মিনিটে কিরিয়ানি সাবের গোলে সমতা ফেরায় ব্রুগা। ৬১ ও ৭১ মিনিটে দুই গোল করে বেলজিয়ান ক্লাবটির সান সিরো থেকে পয়েন্ট নিয়ে বাড়িতে ফেরার স্বপ্ন কেড়ে নেন রেইন্ডার্স, তৃতীয় ম্যাচে দলকে এনে দেন প্রথম জয়।
তিন ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে নতুন কাঠামোর চ্যাম্পিয়নস লিগের পয়েন্ট তালিকার ২১ নম্বরে আছে।