গত সেপ্টেম্বরে নেপালে প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন সাবিনা খাতুনরা। এরপর দেশের মাটিতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী টুর্নামেন্টের দ্বিতীয়। এবার ঘরের মাঠে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফ জেতার চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে।
আগামীকাল ঢাকার কমলাপুর স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফে বাংলাদেশকে এই চ্যালেঞ্জ জানাবে ভারত ও নেপাল। টুর্নামেন্টের আরেক দল ভুটানের পক্ষে চ্যালেঞ্জ জানানো সম্ভব নয়, বলাই যায়।
বাফুফে ভবনে আজ টুর্নামেন্টের চার দলের সংবাদ সম্মেলনে কোচ, অধিনায়কদের কথাবার্তায় সেটাই বোঝা গেছে। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল—তিন দলই শিরোপা জিততে চায়। তবে স্বাগতিক হিসেবে বাংলাদেশ সুবিধা পাবে বলেছে নেপাল ও ভারত—দুই দলই। ভারতীয় দলে সে দেশের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলা একঝাঁক খেলোয়াড় আছে। তবু দলটি বাংলাদেশকে সমীহ করছে আলাদাভাবে।
চার দল একে অন্যের সঙ্গে একবার করে খেলবে। তারপর শীর্ষ দুই দলের ফাইনাল। আর এই ফাইনালেই চোখ বাংলাদেশ অধিনায়ক সামছুন্নাহারের। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের টার্গেট আমরা ফাইনাল খেলব। সেভাবেই আমরা মাঠে নামব। প্রথম ম্যাচে আমরা ভালো শুরুর লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামব।’
বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানীর চোখে মেয়েরা প্রতিনিয়ত উন্নতি করছেন। একটা টুর্নামেন্ট থেকে অন্য টুর্নামেন্টে কতটা উন্নতি করছেন, সেটা তাঁরা দেখেন। কোচ বলেন, ‘উন্নতি করাই আমাদের লক্ষ্য। যেহেতু এটা টুর্নামেন্ট, মেয়েদের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে জয়–পরাজয়ের বিষয়টা তো থাকছেই। মেয়েরা বুঝতে পারছে, তাদের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও প্রত্যাশা বেড়ে গেছে। তারা প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করবে। আমরা চ্যাম্পিয়ন হতেই চাইব।’
গত ৩১ ডিসেম্বর মেয়েদের ঢাকা লিগ শেষ হয়েছে। পরদিনই তাঁরা বাফুফের ক্যাম্পে যোগ দেন এবং তখন থেকে কঠোর অনুশীলনের মধ্যে আছেন। আজও সকালে অনুশীলন হয়েছে জানিয়ে কোচ বলেন, ‘সবাই সুস্থ আছে এবং ভালো আছে। আশা করি, সবার প্রত্যাশা পূরণে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টাই করবে। দেশের মাঠে আগের চেয়ে এবার ভালো পারফরম্যান্স করবে, এটা আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে পারি।’
মেয়েরা ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার পর প্রথম লক্ষ্যই ছিল ফিটনেস নিয়ে কাজ করা। সেটার ওপরই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছ বেশি। কোচের কথায়ও এসেছে বিয়ষটা, ‘আপনারা দেখবেন, আমরা সব সময় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই রিদমে ফুটবল খেলার চেষ্টা করি। তারা ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার পর ফিজিক্যাল ও মেন্টাল ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি। এ ছাড়া টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিক্যাল ফিটনেসের দিকেও নজর দিয়েছি।’
এই টুর্নামেন্টকে খুবই গুরুত্বসহকারে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। ভবিষ্যতে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্ট আছে। সেটার জন্যই এই টুর্নামেন্টকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এটি নতুন খেলোয়াড়দের দেখার সুযোগও।
সেই প্রসঙ্গে কোচ বলেন, ‘জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা তো আমাদের আছেই। এ ছাড়া বেশ কিছু সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়ও তৈরি হচ্ছে। যেমন ধরুন রিপা, আফিদা। এরাও তৈরি হচ্ছে আগামী দিনের জন্য। এই টুর্নামেন্টে তারা নিজেদের মেলে ধরতে পারবে এবং জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে আমার বিশ্বাস।’
আগামীকাল শুক্রবার টুর্নামেন্টের প্রথম দিনে সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশের প্রতিপক্ষে নেপাল। প্রথম প্রতিপক্ষ নিয়ে কোচের কথা, ‘নেপাল অবশ্যই ভালো দল। সাফ বলতে আগে আমরা বুঝতাম নেপাল-ভারত। তবে এখন আমরাও ভালো করছি। আমরা সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলোতে নিজেদের মেলে ধরেছি।’
২০১৭ সালে বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট শুরু করেছে সাফ। প্রথমে অনূর্ধ্ব-১৫ দিয়ে বয়সভিত্তিক সাফ শুরু। তাতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এ পর্যন্ত সাফের যতগুলা নারী বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে হয়েছে, সব কটির ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুবার। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার লক্ষ্য থাকবে এবার বাংলাদেশের। সেটাই বারবার বললেন কোচ গোলাম রব্বানী।