কথা বললেই এমবাপ্পে মেসির চেয়ে ভালো, ব্যস ক্লাসরুম শান্ত
স্কুলে বাচ্চাদের সামলানো সহজ নয়। শিক্ষকদের কত রকম কৌশল যে অবলম্বন করতে হয়! তবু কি সব সময় কাজ হয়? হয় না। তবে আর্জেন্টিনায় এক স্কুলের নারী শিক্ষক এমন এক পথ দেখিয়েছেন, যা দেশটির অন্য স্কুলগুলোও অনুসরণ করতে পারে। ক্লাসে বাচ্চাদের কোনোভাবেই সামলানো যাচ্ছে না? স্রেফ একটা কথা, হ্যাঁ, মাত্র একটি কথাতেই পিনপতন নীরবতা নেমে আসতে পারে ক্লাসে।
সবাই জানে, আর্জেন্টাইনরা ফুটবলপাগল। গত ডিসেম্বরে কাতারে লিওনেল মেসিরা বিশ্বকাপ জয়ের পর ব্যাপারটি অন্য মাত্রা পেয়েছে। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ক্লারিন জানিয়েছে, মেসিদের জাতীয় দলের জার্সি পরা তো আছেই পাশাপাশি খেলোয়াড়ের মুখের ছবিসংবলিত নোটবই, পেনসিল, ব্যাগ ব্যবহার করছে খুদে শিক্ষার্থীরা। মেসি-দি মারিয়াদের প্রতি বাচ্চাদের টান বোঝাতে সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, ‘তারা ফুটবলারদের সঙ্গে ভালোবাসা না দেখিয়ে অপরাধবোধে ভুগতে চায় না।’
এমনই একটি ঘটনা জানিয়েছে ক্লারিন। ভিডিওটি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আর্জেন্টিনার এক স্কুলের শিক্ষক মার্গারিটা নিজের টিকটকে ভিডিওটি ছাড়েন। এরপর তা ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। সেই শিক্ষক যে স্কুলে চাকরি করেন, সেখানে তাঁর নিজের ক্লাসরুমে এ ঘটনা ঘটেছে।
ক্লাসে ঢুকে বাচ্চাদের কোনোভাবেই সামাল দিতে পারছিলেন না। বাচ্চাদের কোলাহলের কারণে ক্লাস তাঁর নিয়ন্ত্রণে ছিল না। এরপর সেই শিক্ষক তাঁর ‘অস্ত্র’টি ছাড়েন। বাচ্চাদের বলেন, ‘যারা চুপ করবে না, তাদের কাছে মেসির চেয়ে এমবাপ্পে ভালো।’ ব্যস, সঙ্গে সঙ্গে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে ক্লাসরুমে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, বাচ্চাদের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে চুপ করে যাওয়া দেখে শিক্ষক নিজেই অবাক হয়েছেন। পরে বলেছেন, ‘বড়জোর ১০ সেকেন্ড সময় লেগেছে (চুপ করতে)। অসাধারণ লেগেছে। এটাই সর্বকালের সেরা ফুটবলারের ক্ষমতা।’
অনেকেই সেই শিক্ষককে অভিবাদন জানিয়েছেন। কেউ কেউ মজাও করেছেন। ভিডিওটির মন্তব্যে লিখেছেন, ‘আমি এখনো চুপ করে আছি। কথা বলিনি।’
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ক্লাসরুম শান্ত করতে মেসিদের ব্যবহার করার ঘটনা আর্জেন্টিনায় এই প্রথম নয়। কাতার বিশ্বকাপের আগে গত অক্টোবরে আর্জেন্টিনার কর্ডোবায় হাইস্কুলে দর্শনের এক শিক্ষক একই কৌশল ব্যবহার করেন। ক্লাসের কিছু শিক্ষার্থীকে কোনোভাবেই শান্ত করতে পারছিলেন না দর্শনের শিক্ষক আমাদেও লাগুয়েনস। এরপর তিনি ব্লাকবোর্ডে লেখেন, ‘যারা কথা বলবে, তারা আর্জেন্টিনা জাতীয় দলকে ঘৃণা করে।’ ব্যস, নীরবতা নেমে আসে শ্রেণিকক্ষে।