‘বিশ্বসেরা’ মেসিতে শিরোপা জিতে মার্তিনো–বুসকেতসদের আনন্দ
২০১৮ সালে যাত্রা শুরুর পর কখনোই শিরোপার দেখা পায়নি ইন্টার মায়ামি। সাফল্য পেতে তারা নিয়ে আসে বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসিকে। মাত্র এক মাস আগে ইন্টার মায়ামির জার্সিতে অভিষেক হয় মেসির। আর এক মাস না যেতেই মেসির পায়ের জাদুতে ইন্টার মায়ামি পেল নিজেদের ইতিহাসে প্রথম শিরোপা।
লিগস কাপে ইন্টার মায়ামির খেলার ৭ ম্যাচের প্রতিটিতে গোল করেছেন মেসি। এই প্রতিযোগিতায় সব মিলিয়ে ১০ গোল করে পেয়েছেন সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার। সঙ্গে জিতেছেন টুর্নামেন্ট–সেরার পুরস্কারও। এমন সাফল্যের পর মেসিকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ইন্টার মায়ামির কোচ জেরার্দো মার্তিনো। মেসির হাত ধরে শিরোপা জিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দলের মিডফিল্ডার সের্হিও বুসকতেসও।
মার্তিনোর সঙ্গে এর আগেও জুটি বেঁধেছিলেন মেসি। যেখানে তাঁদের আছে অম্লমধুর অভিজ্ঞতা। এই জুটি দুটি শিরোপা জিতলেও আছে ফাইনালে হারের যন্ত্রণাও। আর্জেন্টিনার হয়ে কোপা আমেরিকাতেই পরপর দুবার হারের তেতো স্বাদ পেয়েছিলেন মেসি-মার্তিনো জুটি। তবে এবারের অভিজ্ঞতাটা তিক্ত হলো না, বরং ট্রফি হাতে উদ্যাপন করে মাঠ ছাড়েন তাঁরা। শিরোপা জয়ের পর আরও একবার মেসিকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন কোচ। তিনি বলেছেন, ‘আপনি যখন লিওর (মেসি) নাম বলছেন, মানে আপনি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়টির কথা বলছেন। এর চেয়ে বড় কোনো প্রশংসা হয় না। সে ম্যাচের পর ম্যাচে সেটা প্রমাণ করেছে।’
মেসিকে ইন্টার মায়ামিকে বেছে নেওয়ার পর অনেকেই বলেছিল, চাপহীন থাকার জন্য এই ক্লাবটিকে বেছে নিয়েছেন মেসি। তবে মার্তিনো সেটা ভুল বলে মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, মেসি শিরোপার জন্য লড়াই করতে এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম শিরোপা জয়ের পর আরও একবার তিনি একই মন্তব্য করেছেন, ‘সে জিততে এসেছে, সে লড়াই করতে এসেছে। বুসকেতস এবং আলবাও একই কথা বলেছিল। তারা দলকে একটা পরিচয় দিয়েছে। আমাকে যেটা করতে হচ্ছে, তা হলো এই তিনজনের বৈশিষ্ট্যকে অনুসরণ করা এবং তা দলের অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া।’
এই ম্যাচে ইন্টার মায়ামির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলেছে ন্যাশভিল। মুখোমুখি লড়াইয়ে ন্যাশভিল এগিয়ে থাকলেও ভয় ছিল মেসিকে নিয়ে। সেই মেসিই শেষ পর্যন্ত গড়ে দিয়েছেন পার্থক্য। এরপরও প্রতিপক্ষকে লড়াইয়ের কৃতিত্ব দিতে ভুললেন না মার্তিনো, ‘ম্যাচটা কঠিন ছিল। বেশ জটিলও। আমি মনে করি ড্রটা ঠিকই ছিল। তারা তাদের সুযোগ পেয়েছে। আমাদের শট পোস্টে লেগেছে এবং শেষ মুহূর্তে লিও কাম্পানার মিসটাও ছিল। দুই দল সমান সমান থেকেই পেনাল্টিতে গিয়েছে। আমরা জিতেছি, তবে ন্যাশভিলও জিততে পারত।’
ম্যাচের শেষ মুহূর্তে গোলরক্ষককে একা পেয়েও দলকে জেতানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন লিও কাম্পানা। সে সময় কোপা আমেরিকার সেই হারের দুঃস্মৃতি ফিরে এসেছিল মার্তিনোর। যদিও এবার আর হতাশায় পুড়তে হয়নি তাঁকে, ‘যখন কাম্পানা মিস করল এবং আমরা পেনাল্টিতে গেলাম, তখন আমার চিলির বিপক্ষে কোপা আমেরিকার ফাইনাল দুটির কথা মনে পড়ছিল। সৌভাগ্যবশত এবার আমার আশঙ্কা ভুল ছিল।’
মেসির পদচিহ্ন অনুসরণ করেই ইন্টার মায়ামিতে আসেন সের্হিও বুসকেতস। মেসির পাশাপাশি ইন্টার মায়ামির ট্রফি জয়ে ভূমিকা আছে তাঁরও। তবে কৃতিত্বটা দলের সবাইকে দিলেন এই স্প্যানিশ তারকা। আলাদাভাবে মেসির প্রশংসা করতেও অবশ্য ভুললেন না বুসকেতস, ‘আমার মনে হয়, আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা দলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরেছি। এই শিরোপার কৃতিত্ব সবাইকে দিতে হবে। আমরা দারুণ একটি দল গঠন করেছি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দলে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়টি আছেন, তিনি লিওনেল মেসি।’