নারী বিশ্বকাপের আগে রক্তাক্ত অকল্যান্ড, ফিফা বলছে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’
নারী বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের শহর নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড। সবাই অধীর মেয়েদের ফুটবল-উৎসবের জন্য। কিন্তু আজ নারী বিশ্বকাপ শুরুর আগমুহূর্তে অকল্যান্ড শহরে সকাল শুরু হয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত রক্তক্ষয়ী এক ঘটনা দিয়ে। বন্দুকধারীর হামলায় সেখানে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর গুলিতে মারা গেছেন সেই বন্দুকধারীও। এতে আহত হয়েছেন আরও ছয়জন।
আজ নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর অকল্যান্ডের একটি নির্মাণকাজের জায়গায় এই ঘটনা ঘটে। বিচ্ছিন্ন ঘটনা হলেও নারী বিশ্বকাপ শুরুর দিন শহরের কেন্দ্রে এমন একটা ঘটনা উৎসবের সুর কিছুটা হলেও বেসুরো করে দিতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা অবশ্য আশ্বস্ত করেছে নারী বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটি শুরু হবে যথা সময়েই। তারা বন্দুকধারীর হামলায় দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার বিষয়টিকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ই বলছে। নারী বিশ্বকাপ উপলক্ষে অকল্যান্ড শহরে সারা দুনিয়া থেকে মানুষ এসেছেন। বন্দুকধারী যে জায়গায় হামলা চালিয়েছেন, সেখান থেকে ফুটবল দর্শকদের একত্র হওয়ার একটি স্থানের দূরত্ব খুব বেশি নয়। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ের ম্যাচ দিয়ে আজ নারী বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার কথা।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিনস বলেন, ‘নারী বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো সংশয় নেই। উদ্বোধনী ম্যাচ সূচি অনুযায়ীই অনুষ্ঠিত হবে।’ নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করলেও এমন ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অকল্যান্ডে আসা ফুটবল-সংশ্লিষ্টরা।
নিউজিল্যান্ড ফুটবলের কাছে বন্দুকধারীর হামলা বড় এক ধাক্কাই। তবে তারা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফুটবল ভক্ত, খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার অঙ্গীকারই করেছে, ‘এটা হতবাক করে দেওয়ার মতোই একটা ঘটনা। আমরা ভাবতেও পারছি না, এখানে এমন কিছু হতে পারে। তবে আমরা ফুটবল–সংশ্লিষ্ট সবার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, তারা এই শহরে পুরোপুরি নিরাপদ।’
বন্দুকধারী যে নির্মাণ প্রকল্প এলাকায় হামলা চালিয়েছেন, সেই জায়গা থেকে নরওয়ে দলের টিম হোটেল খুব বেশি দূরে নয়। এক বার্তায় দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এই ঘটনার পর আপাতত তারা মানসিকভাবে শান্ত আছে। খেলোয়াড়েরা সবাই নিরাপদে আছে।’
নরওয়ে দলের অধিনায়ক এমেলদে বলেছেন, ‘আজ ভোরে আমাদের ঘুম ভাঙে হেলিকপ্টার ও নিরাপত্তারক্ষীদের গাড়ির হুটারের আওয়াজে। প্রথমে আমরা বুঝতে পারিনি, কী ঘটেছে, পরে বুঝলাম যা ঘটেছে, সেটি ভয়াবহ। আমরা এসব জানতে পেরেছি টেলিভিশন ও স্থানীয় গণমাধ্যমে। তবে সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমরা নিরাপদেই আছি। শান্ত আছি। ফিফা আমাদের জন্য ভালো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে, আমাদের দলেও একজন নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা আছেন।’