ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে যে দলটির হয়ে তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা, মাঠে সে দলটাই ভুগলে খারাপ তো লাগবেই। রবি ফাওলার কষ্ট গোপন করেননি। তাঁর টুইট, ‘আমি লিভারপুলের বিশাল ভক্ত। লিভারপুলকে ভালোবাসি, কিন্তু আজ রাতের খেলা দেখে কষ্ট পেয়েছি।’
ফাওলার সম্ভবত লিভারপুল ভক্তদের মনের কথাটাই বলেছেন। প্রথমার্ধেই অন্তত পাঁচ গোল হজম করতে পারত ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। আলিসনের পেনাল্টি সেভ ও ভার্জিল ফন ডাইক গোললাইন থেকে সেভ করায় ৩-০ গোলে পিছিয়ে বিরতিতে যায় লিভারপুল। শেষ বাঁশি বাজার পর স্কোরলাইনে তাকাতে লিভারপুল সমর্থকদের নিশ্চয়ই কষ্ট হয়েছে। নাপোলির কাছে ৪-১ গোলের হারে চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন মৌসুমে শুরুটা দুঃস্বপ্নের মতোই হলো লিভারপুলের।
দুঃস্বপ্ন নয় তো কী! এই মৌসুমে ৭ ম্যাচে মাত্র ২ জয়, লিগে সপ্তম, কে বলবে এই দলটাই চ্যাম্পিয়নস লিগের গত মৌসুমে ফাইনাল খেলেছে! তারওপর মাঠও নাপোলির। এখান থেকে লিভারপুল কখনো জিতে ফিরতে পারেনি। ডিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামে এবার আরও বাজে হার। নিজেদের ইউরোপিয়ান ইতিহাসে লিভারপুল এর চেয়ে বাজে ব্যবধানে হেরেছে একবারই। ১৯৬৬ ইউরোপিয়ান কাপে আয়াক্সের কাছে ৫-১ গোলের হার।
স্বাগতিক দর্শকদের হইচইয়ে মুখর মাঠে লিভারপুলের শুরুটা ছিল ঢিলেঢালা। একটু বেখেয়ালিও। নইলে ম্যাচের ৫ মিনিট না পেরোতেই জেমস মিলনার বক্সে ‘হ্যান্ডবল’ করবেন কেন! নাপোলি উইঙ্গার মাত্তেও পোলিতানোর শট মিলনারের হাতে লাগায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পটকিক থেকে গোল করে লিভারপুলের দুঃস্বপ্নের শুরু করেন পিওতর জেলেনস্কি।
১৮ মিনিটেই গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত নাপোলি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তিতে ধরা পড়ে, নাপোলির ভিক্টর ওসিমেনকে নিজেদের বক্সে ফাউল করেছেন লিভারপুল ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইক। আবারও পেনাল্টি। চমকে দেয় নাপোলি। আগের পেনাল্টিতে গোল করা জেলেনস্কি এবার শটটি নেননি! ওসিমেন শটটি নেন, কিন্তু আলিসনের দৃঢ়তায় স্কোরলাইন পাল্টায়নি।
চাপ বিস্তার করে খেলা স্বাগতিকরা দ্বিতীয় গোল পেয়েছে আধ ঘণ্টার মাথায়। জেলেনস্কির পাস ধরে গোল করেন আন্দ্রে আঙ্গুইসা। বিরতির আগে ৪৪ মিনিটে জিওভান্নি সিমিওনের গোলে আরও পিছিয়ে পড়ে লিভারপুল।
২৭ বছর বয়সী নাপোলির এই স্ট্রাইকার চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষেকেই গোল করেই হাতে আঁকানো প্রতিযোগিতাটির লোগোর ট্যাঁটুতে চুমু খান। ১৩ বছর বয়সে এই ট্যাঁটু আঁকিয়ে জিওভান্নি তাঁর বাবা-মা বলেছিলেন, চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল করে ট্যাঁটুতে চুমু খাবেন। স্বপ্নপূরণ! আর বাবার নাম ডিয়েগো সিমিওনে, আতলেতিকো মাদ্রিদের কোচ।
দীর্ঘ ৮ বছর পর (২০১৪, রিয়াল মাদ্রিদ) চ্যাম্পিয়নস লিগে কোনো ম্যাচের প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে বিরতিতে যায় লিভারপুল। ম্যাচের শেষ দুটি গোল হয়েছে বিরতির পর ৫ মিনিটের মধ্যে। ৪৭ মিনিটে আলিসনকে দ্বিতীয় চেষ্টায় ফাঁকি দিয়ে নাপোলিকে চতুর্থ গোলটি এনে দেন জেলেনিস্কি। এর দুই মিনিট পরই বাঁকানো শটে লিভারপুলকে সান্ত্বনার গোল এনে দেন লুইস দিয়াজ।
‘এ’ গ্রুপ থেকে অন্য ম্যাচে রেঞ্জার্সকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে আয়াক্স।