ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল
চ্যাম্পিয়ন গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদায় দিয়ে রাজশাহীর বড় চমক
চ্যাম্পিয়নরা অনেক সময়ই পরের টুর্নামেন্টে বিদায় নেয় দ্রুতই। গণ বিশ্ববিদ্যায়ের ক্ষেত্রে সেটা হয়তো পুরোপুরি বলা যাবে না। ইস্পাহানি-প্রথম আলো দ্বিতীয় আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের ‘এফ’ গ্রুপে দুটি ম্যাচ জিতে তারা কোয়ার্টার ফাইনালে আসে। কিন্তু ভাবতে পারেনি, শেষ আটের লড়াইয়ে তাদের জন্য কী ফাঁদ পেতে রেখেছে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে রাজশাহীর সেই ফাঁদে আটকা পড়ে বিদায় নিয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। বড়সড় চমক দেখিয়ে ঢাকার বাইরের প্রথম কোনো দল হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উঠে গেছে শেষ চারে। ২-০ গোলে জয়ের পর বাঁধভাঙা আনন্দে মেতে ওঠেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা।
সাভারের বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মাঠে টর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বের দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে রাজশাহী জিতেছে প্রতি–আক্রমণনির্ভর ফুটবল খেলে, রক্ষণ ঠিক রেখেছে আগাগোড়া, অনেকটা ইতালির মতো।
রক্ষণ সামলে আক্রমণ এবং প্রথম গোলটি আসে বিরতির পরপরই ৩৬ মিনিটে। বাঁ দিক থেকে আসা ক্রসে জামাল উদ্দিনের হেডে ১-০। নির্ধারিত ৭০ মিনিট শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে পাল্টা আক্রমণ থেকে অনেকটা জায়গা দৌড়ে বক্সে ঢুকে ঠান্ডা মাথার প্লেসিংয়ে শামীম রেজা করেন ২-০।
গণ বিশ্ববিদ্যালয় এই ম্যাচে তাদের সেরা দলটি পায়নি। প্রিমিয়ার লিগের তিনজন খেলোয়াড় একাদশে ছিলেন: ফকিরেরপুল ইয়ংমেনসের রাইটব্যাক সাব্বির হোসেন, ফরোয়ার্ড মেহেদী হাসান ও চট্টগ্রাম আবাহনীর ফরোয়ার্ড শুভরাজবংশী। তাঁরা চেষ্টা করেছেন সাধ্যমতো। দলকে সহায়তা করেছেন। সেই সুবাদে গণ বিশ্ববিদ্যালয় খেলেছে প্রায় একতরফাই। কিন্তু গোলের দেখা মেলেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলরক্ষক ইগ্নাসিউস সরেন অনমনীয় দৃঢ়তায় পোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে যাওয়ায়।
অপেশাদার এই গোলকিপার ছিলেন পেশাদার গোলকিপারদের মতোই বিশ্বস্ত। অন্তত ৫-৬ বার দলকে বিপদ থেকে বাঁচিয়েছেন। দল ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা অবস্থায় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভরাজবংশীর ফ্রি–কিক অসাধারণ দক্ষতায় কর্নারের বিনিময়ে আটকান গোলকিপার। দলকে সেমিফাইনালে তুলতে বড় অবদান রেখে ম্যাচসেরা হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ইগ্নাসিউস সরেনই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গ্রুপ পর্বে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে ৮-১ গোলে হারায়। গ্রুপ ফাইনালে ১৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয় আহ্ছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে। টুর্নামেন্টে প্রথমবার অংশ নিয়েই টানা তৃতীয় জয়। আর তৃতীয় জয়টি কি না গতবারের সেরাদের বিপক্ষে!
গণ বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় এবার গ্রুপ পর্বে দুটি ম্যাচেই জিতেছে। প্রথম ম্যাচে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজিকে ৫-০ গোলে হারায়। গ্রুপ ফাইনালে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে উড়িয়ে দেয় ৪-০ গোলে। তৃতীয় ম্যাচে এসে আজ টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্য, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক ও ইস্পাহানি গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের উপদেস্টা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী।