রোনালদোর বিরুদ্ধে ইউরোর নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ

পেনাল্টি মিস করে কেঁদেছেন রোনালদোএএফপি

ফ্রাঙ্কফুর্টে গত সোমবার রাতে স্লোভেনিয়াকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে পর্তুগাল। এই ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউটের সময় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর শারীরিক অবস্থা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফিটনেস ট্র্যাকার প্রতিষ্ঠান ‘হুপ।’ তারা জানিয়েছিল, টাইব্রেকারে পর্তুগালের হয়ে প্রথম শটটি নেওয়ার আগমুহূর্তে পর্তুগিজ কিংবদন্তির হৃৎস্পন্দন সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। প্রতি মিনিটে রোনালদোর স্পন্দন (বিপিএম) ১০০-এর আশপাশে ছিল।

তবে ওই তথ্য সামনে আসার পরই রোনালদোর বিরুদ্ধে ‘অ্যামবুশ মার্কেটিং’–এর অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ‘হুপ’ প্রতিষ্ঠানে তিনি বিনিয়োগ করেছেন। তাদের বানানো হুপ ৪.০ মডেলের স্মার্ট রিস্টব্যান্ড পরে খেলেছেন রোনালদো। এই রিস্টব্যান্ডের বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশন ফি ২২৯ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৪ হাজার ২০৩ টাকা)। নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইকও এই রিস্টব্যান্ড পরে ইউরোয় মাঠে নেমেছেন।

আরও পড়ুন

রোনালদো গত মাসে হুপ–এর বৈশ্বিক দূত হন। রোনালদোর হৃৎস্পন্দন নিয়ে নিজেদের ‘এক্স’ হ্যান্ডলে হুপ জানায়, টাইব্রেকারে পর্তুগালের হয়ে প্রথম পেনাল্টি শটটি নেওয়ার আগে ৩৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের হৃৎস্পন্দন নেমে গিয়েছিল। ম্যাচের অতিরিক্ত সময় শেষে রোনালদোর হৃৎস্পন্দন বেড়ে প্রতি মিনিটে ১৮০ (বিপিএম) ছাড়িয়ে গিয়েছিল বলেও জানায় হুপ। টাইব্রেকারে প্রথম শটটি নেওয়ার আগে সেটি নেমে আসে ১০০-এর নিচে। টাইব্রেকারে বের্নার্দো সিলভার শটে পর্তুগালের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর রোনালদোর হৃৎস্পন্দন আবারও বেড়ে ১৮০ (বিপিএম) ছাড়িয়ে যায়।

তবে ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে পেনাল্টি মিস করার সময় রোনালদো হৃৎস্পন্দন কত ছিল তা জানায়নি হুপ। ফ্রি–কিক থেকে ম্যাচে যে চারটি শট নিয়েছেন, সে সব সময় রোনালদোর হৃৎস্পন্দনও জানানো হয়নি। ম্যাচের ১০৫ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি মিস করে কেঁদেছিলেন রোনালদো।

আরও পড়ুন
ফ্রান্সের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল সামনে রেখে অনুশীলনে পর্তুগালের অধিনায়ক রোনালদো
এএফপি

ইউরোর শুরুতে ডাচ অধিনায়ক ফন ডাইকের ঘুমানোর বিভিন্ন মেট্রিকসও জানিয়েছিল হুপ। সে যাহোক, ইউরোর ম্যাচে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশের দায়ে রোনালদো ও হুপ–এর বিরুদ্ধে গতকাল ‘অ্যামবুশ মার্কেটিং’–এর অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছে টেলিগ্রাফ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’–এ এই অভিযোগ করেছেন ভিসা ও কোকাকোলার সাবেক বৈশ্বিক স্পনসরশিপ–প্রধান রিকার্ডো ফোর্ট। অ্যামবুশ মার্কেটিং একটি বিপণন কৌশল, যেখানে বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান কোনো ইভেন্টে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে নিজেদের পণ্যের প্রচার করে কিংবা সেটি গ্রহণ বা দেখায় বাধ্য করে।

ফুটবলে প্রযুক্তিগত বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি আছে। আবার হুপ-এর প্রকাশিত তথ্যে ইউরোর কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি। তবে এটি ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সংশ্লিষ্ট নিয়ম লঙ্ঘন করে। তবে উয়েফার সঙ্গে চুক্তি থাকলে ভিন্ন কথা, তখন টুর্নামেন্টে নিজেদের ব্র্যান্ডিং করতে পারত প্রতিষ্ঠানটি। হুপের সঙ্গে উয়েফার কোনো চুক্তি নেই। আয়োজকদের সঙ্গে চুক্তি না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঠিকই কৌশলে ইউরো, বিশ্বকাপ কিংবা অলিম্পিকের মতো বড় আসরে এভাবে নিজেদের পণ্যের প্রচার ও প্রসার ঘটায়।

আরও পড়ুন