দুইবার পিছিয়ে পড়েও জয়ের সমান ড্র ১০ জনের লিভারপুলের
লিভারপুল ২ : ২ ফুলহাম
১ জন কম নিয়ে ২ বার পিছিয়ে থাকা। চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে তো এমন পরিস্থিতিতে থেকেই বদলাতে হয় ম্যাচের গতিপথ। লিভারপুলের জন্যও ফুলহামের বিপক্ষে আজকের ম্যাচটা ছিল তেমনই চ্যালেঞ্জের, নিজেদের প্রমাণের। যে চ্যালেঞ্জে আর্নে স্লটের দল উতরেও গেল দারুণভাবে।
শেষ পর্যন্ত জিততে না পারলেও পেয়েছে জয়ের সমান রোমাঞ্চকর এক ড্র। ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে ফুলহামের সঙ্গে লিভারপুল ড্র করেছে ২–২ গোলে। এই ড্রয়ের ফলে প্রিমিয়ার লিগে ১১ ম্যাচ অপরাজিত থাকল ‘অল রেড’রা।
আজ খেলার ধারার বিপরীতে ১১ মিনিটের মাথায় আন্দ্রেই পেরেইরার গোলে পিছিয়ে পড়ে লিভারপুল। সেই গোলের রেশ কাটানোর আগেই লিভারপুলের বিপদ আরও বাড়ে ১৭ মিনিটে দেখা অ্যান্ড্রু রবার্টসনের লাল কার্ডে। ভিএআরেও লাল কার্ডের সিদ্ধান্ত না বদলানোয় ১০ জন নিয়েই বাকি সময় খেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয় লিভারপুলকে। তবে এমন বিপর্যস্ত অবস্থাতেও হাল ছাড়েনি লিভারপুল।
মোহাম্মদ সালাহর ১০০তম অ্যাসিস্টে বিরতির পরপর লিভারপুলকে সমতায় ফেরান কোডি গাকপো। কিন্তু ৭৬ মিনিটে রদ্রিগো মুনিজের গোলে দ্বিতীয়বার পিছিয়ে পড়ার পর মনে হচ্ছিল লিভারপুলের কপালে বোধ হয় আজ হারটাই লেখা। কিন্তু ৮ ম্যাচ ও ৫৪ দিন পর চোট কাটিয়ে ফিরে নিজের গুরুত্ব বোঝালেন দিয়েগো জোতা।
৮৬ মিনিটে এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের গোলেই প্রায় হাত ফসকে যাওয়া ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেলে লিভারপুল। এই ড্রয়ে ১৫ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকল লিভারপুল। দুইয়ে থাকা চেলসির চেয়ে এখনো ৫ পয়েন্টে এগিয়ে আছে তারা।
ঘরের মাঠে ১৭ মিনিটের মধ্যেই মূলত ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে লিভারপুলকে। সম্ভবত এ মৌসুমে এর চেয়ে জটিল অবস্থায় আর পড়েনি স্লটের ছন্দে থাকা দলটি। তবে বিপর্যয়ের মধ্যেও পথ হারায়নি তারা। গুছিয়ে নিয়ে নিজের সহজাত খেলাটাই খেলার চেষ্টা করেছে।
লিভারপুলের গোছানো ফুটবলের সামনে একজন বেশি নিয়েও ফুলহামকে নির্ভর করতে হচ্ছিল প্রতি–আক্রমণের ওপর। এর মধ্যে ৪২ মিনিটে কাছাকাছি গিয়েও সমতা ফেরাতে পারেনি লিভারপুল। পিছিয়ে থেকেই তাই যেতে হয় বিরতিতে।
বিরতির পরও লিভারপুলের শুরুটা ছিল আগ্রাসী। যার ফলে মাত্র ২ মিনিটের মধ্যে গোল আদায় করে নেয় স্বাগতিকেরা। ডান প্রান্ত দিয়ে সালাহর অসাধারণ এক ক্রসে ডাইভিং হেডে বল জালে জড়িয়ে লিভারপুলকে সমতায় ফেরান গাকপো। সমতায় ফেরা লিভারপুলকে দেখে বোঝাই যাচ্ছিল না তারা একজন কম নিয়ে খেলছে।
এ সময় আক্রমণের পর আক্রমণে ফুলহামের নাভিশ্বাস তুলে ছেড়েছে টেবিল টপাররা। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে দমিনিক সোবোসলাইয়ের পাসে সুযোগ পেয়েও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি সালাহ। ফুলহামও অবশ্য চেষ্টা করছিল প্রতি–আক্রমণ থেকে গোল আদায়ের। কয়েকবার ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে ৭৬ মিনিটে আর ভুল করেনি অ্যানফিল্ডের অতিথিরা। প্রতি–আক্রমণ থেকেই মুনিজ গোল করে এগিয়ে দেন ফুলহামকে। দ্বিতীয়বার পিছিয়ে পড়া লিভারপুল অবশ্য গোলের লক্ষ্যে ঠিকই চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে।
৮২ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পেয়েও অল্পের জন্য ব্যর্থ হয় লিভারপুল। তবে ৮৬ মিনিটে অ্যানফিল্ডের দর্শকদের স্বস্তি এনে দেন বদলি নামা জোতা। মাঠে নামার ৭ মিনিটের মধ্যে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে লিভারপুলকে সমতায় ফেরান এই ফরোয়ার্ড। সমতায় ফিরে ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আক্রমণের ঝড় অব্যাহত রাখে লিভারপুল। একাধিকবার গোলের খুব কাছেও পৌঁছে গিয়েছিল তারা। যদিও শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত গোলটি আর পাওয়া হয়নি। ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় শীর্ষ থাকা দলটিকে।
রাতের অন্য ম্যাচে এভারটনের সঙ্গে ড্র করেছে আর্সেনাল। ঘরের মাঠে পয়েন্ট হারানোয় গানারদের ওপর চাপ আরও বাড়ল। ১৬ ম্যাচ শেষে তিনে থাকা আর্সেনালের পয়েন্ট এখন ৩০। চারে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ১৫ ম্যাচে ২৭। আগামীকাল ম্যানচেস্টার ডার্বিতে সিটি মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের।