গার্দিওলা জানালেন, তাঁকে যে কারণে ‘খুন’ করা হতো
গত বছরের গ্রীষ্মকালীন দলবদল থেকে এ পর্যন্ত খেলোয়াড় কেনায় প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ড খরচ করেছে চেলসি। ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা চেলসির সঙ্গে তুলনা টেনে বলেছেন, সিটি যদি খেলোয়াড় কেনায় এই পরিমাণ টাকা খরচ করত, তাহলে তাঁকে ‘খুন’ করা হতো।
চোটে পড়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির তারকা মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা। গার্দিওলার মতে, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিটির বেলজিয়ান তারকাকে মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে। সংবাদকর্মীরা তাই গার্দিওলার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ডি ব্রুইনার শূন্যতা পূরণে সিটির স্কোয়াড এই দলবদলে শক্তিশালী করা উচিত কি না? উত্তরে চেলসির সঙ্গে তুলনা টানেন গার্দিওলা।
চেলসির সমালোচনা করতে কথাটা তিনি বলেননি, পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সংবাদকর্মীদের সিটি কোচ বলেছেন, ‘আমাদের তুলনায় চেলসির জন্য কাজটা সহজ। গত দুটি দলবদলে চেলসি যে পরিমাণ খরচ করেছে, সেটা আমরা করলে এখানে আমি বসে থাকতে পারতাম না; আপনারা আমাকে খুন করে ফেলতেন। আমরা এমন সমালোচনার মধ্যে থাকতাম, যা চিন্তাও করা যেত না।’
গার্দিওলা এরপর নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন, ‘(দলবদলের) বাজার কেমন যাচ্ছে, সেটা আমাদের খেয়াল রাখতে হয়। যে দামটা ন্যায্য মনে করি, সেটাই দিই। আমরা (২০১৯ সালে) হ্যারি ম্যাগুয়ারকে চেয়েছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিনিনি, কারণ দামটা ন্যায্য মনে হয়নি। মার্ক কুকুরেয়াকে চেয়েছিলাম, তার দামটাও ন্যায্য মনে হয়নি। তাই কিনিনি। অ্যালেক্সিস সানচেজকেও কিনতে চেয়েছিলাম; কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিনিনি। যেটা ন্যায্য দাম, সেটা দিয়েই আমরা (খেলোয়াড়) কিনি, নইলে একাডেমি তো আছেই।’
চেলসির খরচের উদাহরণ টেনে ক্লাবটির যে সমালোচনা করছেন না, সেটাও বুঝিয়ে বললেন গত মৌসুমে সিটিকে ‘ট্রেবল’ জেতানো এই কোচ, ‘আমি এক সেকেন্ডের জন্যও চেলসির সমালোচনা করছি না। বোঝাতে চাইছি, আমরা যদি একই কাজ করতাম, তাহলে আমাদের খুন করা হতো। পৃথিবীর যেকোনো ক্লাব নিজেদের ইচ্ছেমতো যা খুশি করতে পারে। টড বোয়েলিকে (চেলসির মালিক) আমি পছন্দ করি, দেখাও হয়েছে। তারা যা খুশি করতে পারে। আমি ঠিক জানি না, তবে তিনি (বোয়েলি) আসার পর সম্ভবত ৯০ কোটি পাউন্ড খরচ করেছেন কিংবা তারও বেশি। তারা এই মৌসুমে বেশ কিছু খেলোয়াড় বিক্রি করেছে, তাই তারা এটা করতেই পারে।’
২০০৮ সালে আরব আমিরাতের ধনকুবের শেখ মনসুর সিটির মালিক হওয়ার পর খেলোয়াড় কেনায় প্রচুর টাকা খরচ করেছে ক্লাবটি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২০১৬ সালে গার্দিওলা সিটির কোচ হওয়ার পর নতুন খেলোয়াড় কেনায় এ পর্যন্ত ১০০ কোটি পাউন্ডের বেশি খরচ করেছেন। আর ২০০৮ থেকে খেলোয়াড় কেনায় সিটির এ পর্যন্ত মোট খরচ প্রায় ১৪৫ কোটি পাউন্ড। আর্থিক নিয়ম ভাঙায় এরই মধ্যে সিটির বিরুদ্ধে ১১৫টি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে আদালতে।
সৌদি আরবের প্রো লিগ নিয়েও কথা বলেছেন গার্দিওলা। টাকার জোরে ইউরোপ থেকে বেশ কিছু তারকা ফুটবলারকে নিয়ে গেছে সৌদি ক্লাবগুলো। সিটিও দেশটির ক্লাব আল আহলির কাছে ৩ কোটি পাউন্ডে রিয়াদ মাহরেজকে বিক্রি করেছে।
এসব বিষয়ে গার্দিওলার দৃষ্টিভঙ্গি একটু অন্য রকম, ‘সৌদি আরব নিয়ে সবাই অভিযোগ করে আবার তাদের জন্যই দরজা খুলে দিচ্ছে, লালগালিচা বিছিয়ে জিজ্ঞেস করছে, কী লাগবে, বন্ধু? আসলে সবাই খেলোয়াড় বিক্রি করছে আবার অভিযোগও করছে। এই লিগ (ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ) কিংবা অন্য লিগের ক্লাবগুলো চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত অভিযোগ করে যাচ্ছে।’