১০০০ পেনাল্টি নেওয়ার অনুশীলন করে কী লাভ হলো স্পেনের
টাইব্রেকারে স্পেনের দুর্ভাগ্যের অবসান ঘটল না। ২০০২ সালের বিশ্বকাপে টাইব্রেকারে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় হয়েছিল তাদের। ২০১৮ বিশ্বকাপে স্বাগতিক রাশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালেই উঠতে পারেনি স্পেন। ২০২০ ইউরোতেও ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হারতে হয়েছে সেমিফাইনালে। কাল মরক্কোর বিপক্ষে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতেও সেই টাইব্রেকার-হতাশা।
অথচ টাইব্রেকার-দুর্ভাগ্যের শেষ দেখতে এবার জোর প্রস্তুতি ছিল স্পেনের। কোচ লুইস এনরিকে নিজেই মরক্কো ম্যাচের আগে বড় গলায় বলেছিলেন সেই প্রস্তুতির কথা। মরক্কোর বিপক্ষে মাঠে নামার আগে তারা প্রত্যেকেই ১০০০টি করে পেনাল্টি অনুশীলন করে নেমেছিলেন। কিন্তু আসল সময়ে ২০১০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা শুট আউটে একটিও গোল করতে পারল না! পেনাল্টি মিস করলেন সের্হিও বুসকেটসের মতো তারকা!
গোটা ম্যাচে বলের দখল রেখে খেললেও গোল করতে পারেনি স্পেন। ১০০০ পেনাল্টির অনুশীলন করে নেমে ম্যাচে ১০১৯টি পাস খেলেও মরক্কোর গোল মুখ খুলতে না পারা স্পেনকে নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। পাস খেলতে খেলতে প্রতিপক্ষকে জেরবার করে দেওয়া স্পেন গোলে শটই নিতে ভুলে গেল কিনা! টাইব্রেকারে যে একটিও গোল করতে পারেনি লুইস এনরিকের দল।
ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিচারে মরক্কোর বিপক্ষে তো স্পেনের নির্ধারিত সময়ই গোল করে জিতে যাওয়া উচিত ছিল। ম্যাচে পাসের পর পাস খেলে যাওয়া স্পেন সেভাবে গোলের সুযোগই যে তৈরি করতে পারেনি। বরং মরক্কো সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারলে টাইব্রেকার পর্যন্ত তো ম্যাচ গড়াইই না।
টাইব্রেকারে মরক্কোর হাকিম জিয়েশ, আবদেল হামিদ সাবিরি আর আশরাফ হাকিমি গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। মরক্কোর গোলকিপার ইয়াসিন বুনু ঠেকান স্পেনের পাবলো সারাবিয়া, কার্লোস সোলার আর সের্হিও বুসকেটসের শট। টাইব্রেকারের স্কোরলাইনটা স্পেনের জন্য বিব্রতকরই—৩-০!
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এনরিকে পেনাল্টি নিয়ে কিছু কথা বলেছিলেন। দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ১০০০টি করে পেনাল্টি অনুশীলনের কথার পাশাপাশি তিনি বেশ বড় গলাতেই বলেছিলেন, টাইব্রেকারে পেনাল্টি শুট আউট কোনোভাবেই ‘লটারি’ নয়। এটা ভাগ্যের কোনো খেলা নয়। টাইব্রেকারে জিততে হলে টেকনিক ও স্কিল ধারালো করাটা খুব জরুরি। কারণ, বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে যেকোনো খেলোয়াড়কেই প্রচণ্ড চাপের মধ্য সেটি মারতে হয়।
এনরিকে নির্দিষ্ট স্কিলের কথা বলেন। কিন্তু সেই স্কিলের তো ছিঁটেফোটাও দেখা গেল না পেনাল্টি শুট আউটে। হাজারখানেক পেনাল্টি নিয়ে অনুশীলন করে তাহলে কী লাভ হলো স্পেন দলের!