রোনালদো ইউনাইটেড ছাড়ায় লাভ আরেক পর্তুগিজের

দেড় বছর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে একসঙ্গে খেলেছেন দুই পর্তুগিজ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও ব্রুনো ফার্নান্দেজরয়টার্স

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি খুশি হয়তো কোচ এরিক টেন হাগ। বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারে ইউনাইটেড কোচের প্রতি যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রোনালদো।

৩৭ বছর বয়সী পর্তুগিজ তারকা ইউনাইটেড ছেড়ে যাওয়ায় অন্যতম লাভবান তাঁর জাতীয় দলের সতীর্থ ব্রুনো ফার্নান্দেজ।

২০২১ সালের জুনে ওল্ড ট্রাফোর্ডে এসেই দলের প্রধান মুখ হয়ে উঠেছিলেন রোনালদো। পাঁচবারের ব্যালন ডি’অরজয়ীর কারণে অনেকটা আড়ালে ঢাকা পড়েছিলেন ব্রুনো। ২৮ বছর বয়সী এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের নিজের পারফরম্যান্সেরও অবশ্য কিছুটা দায় ছিল।

আরও পড়ুন

দেড় বছর পর আবারও ইউনাইটেডের ‘প্রধান মুখ’ হয়ে ওঠার পথে এখন ব্রুনো। পর্তুগালের হয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে দারুণ এক বিশ্বকাপ খেলে এসেছেন। গ্রুপ পর্বে ঘানার বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানের জয়ে দুটি গোলে ছিল তাঁর সহায়তা। আর উরুগুয়ের বিপক্ষে পর্তুগালের ২-০ ব্যবধানের জয়ে দুটি গোলই ছিল তাঁর।

ক্লাবের মতো পর্তুগালের হয়ে বিশ্বকাপেও ফ্রি কিক নিয়েছেন রোনালদো। ছবিটি পর্তুগাল–উরুগুয়ে ম্যাচের
রয়টার্স

বিশ্বকাপের মাঝেই রোনালদো-ইউনাইটেড পারস্পরিক সমঝোতায় সম্পর্কচ্ছেদ হয়। রোনালদোবিহীন ইউনাইটেড গত এক সপ্তাহে ম্যাচ খেলেছে দুটি। দুটি ম্যাচেই ব্রুনো ছিলেন স্বচ্ছন্দ। সরাসরি গোল বা গোলে সহায়তা না থাকলেও মাঝমাঠে খেলার নিয়ন্ত্রণ ছিল তাঁর পায়ে। বিশ্লেষকদের মতে, আবারও ইউনাইটেডে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন ব্রুনো। আর সেটা সম্ভব হয়েছে রোনালদো না থাকায়।

মঙ্গলবার প্রিমিয়ার লিগে নটিংহাম ফরেস্টকে ৩-০ ব্যবধানে হারায় ইউনাইটেড। ম্যাচে ব্রুনোর নৈপুণ্য নিয়ে সাবেক ইউনাইটেড ডিফেন্ডার প্যাট্রিক এভরা বলেছেন, ‘ব্রুনো ফার্নান্দেজকে আবার দলের প্রধান খেলোয়াড় হয়ে উঠতে হবে। রোনালদো না থাকায় ভাবা যেতেই পারে, সে আবারও বস হয়ে উঠেছে।’ অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর ম্যাচ-বিশ্লেষণে সাবেক এই ডিফেন্ডার ব্রুনোর নেতৃত্বে উঠে আসার ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘সে এখন ফ্রি–কিক নিচ্ছে, কর্নার কিক নিচ্ছে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, এই কাজগুলো ব্রুনোরই করার দরকার ছিল।’

আরও পড়ুন

শুধু এভরা নন, ব্রুনোকে নিয়ে একই পর্যবেক্ষণ ইউনাইটেডের সাবেক গোলকিপার টিম হাওয়ার্ডেরও। এনবিসি স্পোর্টসের অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের এই সাবেক খেলোয়াড় বলেন, ‘রোনালদো আসার আগে ও-ই দলের নেতা ছিল। গোল করত, রেফারিং নিয়ে কথা বলত, উচ্চকিত ছিল।’

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও ব্রুনো ফার্নান্দেজ যখন পর্তুগাল জার্সিতে
রয়টার্স

একই অনুষ্ঠানে হাওয়ার্ডের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ফুটবলার ও কোচ রবি মুসটো। ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করা মুসটোর মতে, রোনালদো চলে যাওয়ায় ইউনাইটেডের অন্য খেলোয়াড়দের ওপর চাপ কমে গেছে, ‘রোনালদো ছাড়া ইউনাইটেড ভালোই আছে। অনেক কারণে এটা হচ্ছে। আমার মতে, তরুণ খেলোয়াড় এবং ফরোয়ার্ডের খেলোয়াড়দের মধ্যে সারাক্ষণ রোনালদোকে বল বাড়িয়ে দেওয়ার চাপ ছিল। যেটা এখন নেই।’