ফুটবলে একই শহরের দুই ক্লাবের মধ্যে দ্বৈরথ তো আর কম নয়। কিন্তু সেরা কোনটা?
উত্তরটা সিমোন ইনজাগির মুখ থেকে শুনুন—‘মিলান ডার্বি।’
খেলোয়াড়ি জীবনে লাৎসিওর হয়ে ইনজাগি ইউরোপের অন্যতম হিংস্র দ্বৈরথ হিসেবে পরিচিত ‘রোম ডার্বি’তে অনেকবারই অংশ নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর চোখে তবু সেটা নয়, মিলান ডার্বিই সেরা। লাৎসিওর সেই স্ট্রাইকার ইনজাগি বছর দুয়েক হলো ইন্টার মিলানের কোচ এবং এই সময়ে তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন মিলান ডার্বির তীব্রতাও।
আর সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তাঁর সিদ্ধান্ত, ‘এটা শুধুই একটা ডার্বি নয়, এটাই একমাত্র ডার্বি।’ তো চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে সে রকমই দুটি মিলান ডার্বি দেখা যাবে এবার, প্রথম লেগটা আজ, ফিরতি লেগ আগামী সপ্তাহে। দুই লেগের ফল যা-ই হোক, দুই মিলানের একটা এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে থাকছে, এটা নিশ্চিত।
এসি মিলান এমনিতে ইউরোপেরই পরাশক্তি, সাতবারের চ্যাম্পিয়নরা রিয়াল মাদ্রিদের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে সফলতম দল। তিনবার জিতেছে ইন্টারও। তবে দুই মিলানই এবার সেমিফাইনালে এসেছে দীর্ঘদিন পর। এসি মিলান সর্বশেষ সেমিফাইনাল খেলেছিল ২০০৬-০৭ মৌসুমে, যেবার তারা চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল।
কাকতালীয় ব্যাপার হচ্ছে, ইন্টার ২০০৯-১০ মৌসুমে সর্বশেষ যেবার সেমিফাইনাল খেলেছিল, সেবারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারাই। চ্যাম্পিয়নস লিগে মিলান ডার্বিও ১৮ বছর পর। ২০০৪-০৫ মৌসুমের সেই কোয়ার্টার ফাইনালটা একটা বড় উদাহরণ হতে পারে মিলান ডার্বির তীব্রতা বোঝাতে।
প্রথম লেগে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা ইন্টার মিলানের সমর্থকেরা ফিরতি লেগে দলকে ১-০ গোলে পিছিয়ে যেতে দেখে মাঠে নেমে এত বিশৃঙ্খলা শুরু করেছিলেন যে ম্যাচটা পণ্ড হয়ে গিয়েছিল, উয়েফা ৩-০ ব্যবধানে জয়ী ঘোষণা করেছিল এসি মিলানকে।
এ রকম দ্বৈরথে এ ধরনের কিছু ঘটার ভয় সব সময় থাকে। তবে ইনজাগির প্রত্যাশা, ইন্টার এবার মাঠে খেলেই সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে, ‘আমি জানি এই ম্যাচের গুরুত্ব আমাদের কাছে, ক্লাবের কাছে এবং সমর্থকদের কাছে কতটা। তবে আমি খুবই শান্ত ও স্থির থাকছি, কারণ আমি দেখছি, আমার খেলোয়াড়েরাও খুবই মনোযোগী।’
একই প্রত্যাশা এসি মিলান কোচ স্তেফানো পিওলিরও। ইউরোপের সাফল্যের বিচারে তাঁর ক্লাব ঢের এগিয়ে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে। ফলে মনে হতে পারে, প্রত্যাশার চাপটাও বোধ হয় তাঁর দলের ওপরই বেশি।
তবে পিওলি এটাকে চাপ নয়, শক্তি হিসেবেই দেখতে চান, ‘ক্লাবের যে ইতিহাস, সেটা বরং আমাদের আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে, আরও শক্তিশালী। এই ধরনের মুহূর্ত এবং আবেগ সামলানোটা আমাদের ডিএনএ-তেই আছে।’
আসলে শেষ পর্যন্ত কোন দল এই আবেগ আর চাপ সবচেয়ে ভালো সামলায়, সেটা অবশ্য মাঠেই বোঝা যাবে।