চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে যে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন আর্জেন্টিনার আলভারেজ
হুলিয়ান আলভারেজের মধুর সময় যেন শেষই হচ্ছে না! গত বছরের জানুয়ারির মাসের শুরুতেও হয়তো ভাবতে পারেননি, সামনের দেড়টা বছর কী দুর্দান্তই না কাটতে চলেছে! জানুয়ারির শুরুতেও ছিলেন আর্জেন্টিনার ক্লাব রিভার প্লেটের খেলোয়াড়। কিন্তু ৩১ জানুয়ারি, তাঁর ২২তম জন্মদিনে নিশ্চিত হয়, তিনি প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে পা রাখছেন।
ম্যানচেস্টার সিটিতে ভালো খেলার পুরস্কার হিসেবে সুযোগ পান কাতার বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা দলে। ডিসেম্বরে হয়ে যান বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়। এরপর ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে জেতেন প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপের শিরোপা। আর কাল রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে তো ইতিহাসই হয়ে গেলেন আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ড।
এক মৌসুমে ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট, লিগ আর ঘরোয়া কাপের সঙ্গে বিশ্বকাপ—এই চার ট্রফি জেতা ফুটবল ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হয়ে গেলেন আলভারেজ। ২৩ বছর বয়সী আলভারেজের আগে ৯ জন খেলোয়াড় এক মৌসুমে ইউরোপিয়ান কাপ বা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি গড়েছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যেই কেউই সেই একই মৌসুমে ক্লাবের হয়ে ঘরোয়া কাপ জিততে পারেননি।
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন আলভারেজ। ৪ গোল নিয়ে টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছিলেন তিনি। এ মৌসুমে সিটির মোট ম্যাচের অর্ধেকেরও কম খেলায় শুরুর একাদশে না থাকা আলভারেজ ১৭ গোল নিয়ে ইতিহাদের ক্লাবটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা।
চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে কাল মাঠে না নেমেই এই কীর্তি গড়া আলভারেজ একই মৌসুমে ইউরোপিয়ান ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া দশম খেলোয়াড়। ইস্তাম্বুলে কাল যদি ইন্টার মিলান জিতত, তাহলে আলভারেজের জায়গায় এই কীর্তি গড়তেন তাঁর আর্জেন্টাইন সতীর্থ লাওতারো মার্তিনেজ।
একই মৌসুমে ইউরোপিয়ান ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া আগের ৯ খেলোয়াড়ের ৬ জন বায়ার্ন মিউনিখ ও জার্মান দলের। এই ৬ জন কীর্তিটা গড়েছিলেন ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে। সেবার তাঁরা বায়ার্নের হয়ে ইউরোপ সেরার মুকুট মাথায় পরার পর জার্মানির হয়ে জিতেছিলেন বিশ্বকাপ।
হানস-গিওর্গ সোয়ার্জেনবেক, জার্ড মুলার, উলরিখ হোয়েনেস, পল ব্রেইটনার, জোসেফ মায়ার ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়াররা অল্পের জন্য একই মৌসুমে বিশ্বকাপ, লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ঘরোয়া কাপ একটুর জন্য জিততে পারেননি। ১৯৭৪ সালে বায়ার্ন ইউরোপিয়ান কাপ ও বুন্দেসলিগা জিতেছিল। কিন্তু জার্মান কাপের সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিল।
৯ জনের বাকি ৩ জন ভিন্ন ভিন্ন বছরে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। ১৯৯৮ সালে রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পর ফ্রান্সের জার্সিতে বিশ্বকাপ জিতেছেন ক্রিস্টিয়ান কারেম্বু। ২০০২ সালে ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন রবার্তো কার্লোস আর ফ্রান্সের তারকা রাফায়েল ভারান এই কীর্তি গড়েছেন ২০১৮ সালে।