প্রিমিয়ার লিগে এবার যত ঘটন–অঘটন

টানা চতুর্থবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়েছে সিটিরয়টার্স
ম্যানচেস্টার সিটির রেকর্ড টানা চতুর্থ লিগ জেতার মধ্যে শেষ হয়ে গেল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ২০২৩-২৪ মৌসুম। যথারীতি এ মৌসুমেও প্রায় প্রতি রাউন্ডেই দর্শকেরা সাক্ষী হয়েছেন চমকজাগানো সব ঘটনা ও কীর্তির। গত বছরের আগস্টে শুরু হওয়া লিগে প্রতি মাসের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা ও কীর্তি নিয়ে এ আয়োজন।

আগস্ট

* নিউক্যাসলের হয়ে ৬ মিনিটের মাথায় অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে গোল করেন সান্দ্রো টোনালি। ১১ মিনিটে মুসা দিয়াবি সমতা ফেরান অ্যাস্টন ভিলার হয়ে। এর ফলে ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে অভিষেকে ভিন্ন দুই খেলোয়াড়ের গোল দেখল প্রিমিয়ার লিগ।

* ক্রিস্টাল প্যালেসের মাঠে ১-০ গোলের জয় দিয়ে তৃতীয় দল হিসেবে ২০০ ম্যাচে ক্লিনশিট রাখার কীর্তি গড়ল আর্সেনাল। এর আগে এই মাইলফলক গড়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও চেলসি।

* নিউক্যাসলের বিপক্ষে লিভারপুলের ২-১ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচটি ছিল এডি হাওয়ের বিপক্ষে ইয়ুর্গেন ক্লপের টানা ১১তম লিগ ম্যাচ জয়। এটি প্রতিযোগিতায় কোনো কোচের বিপক্ষে অন্য কোচের সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড।

আরও পড়ুন

সেপ্টেম্বর

* প্রিমিয়ার লিগে প্রথম দল হিসেবে মৌসুমে প্রথম সাত ম্যাচে চারটি লাল কার্ড দেখেছে লিভারপুল।

* ২ সেপ্টেম্বর একই দিন তিনটি হ্যাটট্রিক দেখা যায় প্রিমিয়ার লিগে (সন হিউং-মিন, আর্লিং হলান্ড ও ইভারন ফার্গুসন)। এর আগে এই কীর্তি দেখা গিয়েছিল ১৯৯৫ সালে। সেবার এ কীর্তি গড়েছিলেন অ্যালন শিয়েরার, রবি ফাউলার ও টনি ইয়েবোয়াহ।

* নটিংহামের বিপক্ষে ৪৬ পাসে গোল করেন ফিল ফোডেন। প্রিমিয়ার লিগে পরিসংখ্যান রাখা শুরুর পর থেকে (২০০৬-০৭ মৌসুম) এত বেশি পাসে আর কখনো গোল করেনি সিটি। পাশাপাশি এটি ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাসে করা গোল। এর আগে ২০১৪ সালে নাচের চাদিল টটেনহামের হয়ে কিউপিআরের বিপক্ষে ৪৮ পাসে গোল করেছিলেন।

এ মৌসুমেও বেশ কিছু মাইলফলক গড়েছেন হলান্ড
রয়টার্স

অক্টোবর

* ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যান সিটির ২-১ গোলে জেতা ম্যাচটি ছিল সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সিটির টানা ২১তম জয়, যা প্রিমিয়ার কোনো ক্লাবের নতুন রেকর্ড।

* প্রিমিয়ার লিগে প্রথম ৩০ পয়েন্টের ২৬ পয়েন্ট পায় অ্যাগনে পোস্তেকোগলোর টটেনহাম (৮ জয় ও ২ ড্র)। এটি ছিল প্রথম ১০ ম্যাচে কোনো কোচের অর্জন করা সর্বোচ্চ পয়েন্ট।

* অক্টোবরে চেলসিকে ২-০ গোলে হারায় ব্রেন্টফোর্ড। এর ফলে প্রথম দল হিসেবে ব্রেন্টফোর্ড চেলসির বিপক্ষে স্টামফোর্ড ব্রিজে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচের সব কটি জিতল।

আরও পড়ুন

নভেম্বর

* বোর্নমাউথের বিপক্ষে ম্যান সিটির ৬-১ গোলে জয়ের পথে ১টি গোল এবং ৫টি গোলে সহযোগিতা করেন জেরিমি ডকু। ফলে প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের সবচেয়ে কনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ৫ গোলে অবদান রাখার কৃতিত্ব গড়েন ডকু। পাশাপাশি সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ৪ গোলে সহযোগিতার কীর্তিও গড়েন তিনি।

* বার্নলির বিপক্ষে লেয়ান্দ্রো ত্রোসারের করা প্রথম গোলটি ছিল এমিরেটসে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে আর্সেনালের করা হাজারতম গোল।

* লিভারপুলের বিপক্ষে আর্লিং হলান্ডের করা প্রথম গোলটি ছিল প্রিমিয়ার লিগে তাঁর ৫০তম গোল। মাত্র ৪৮ ম্যাচে এ মাইলফলক গড়েন তিনি। এর আগে আর কোনো ফুটবলার এত কম ম্যাচ খেলে ৫০ গোল করেননি।

বিদায়ের আগে দারুণ কিছু কীর্তি গড়েছেন ইয়ুর্গেন ক্লপও
রয়টার্স

ডিসেম্বর

* সিটির মাঠে প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যে দলের হয়ে গোল করার পাশাপাশি একটি আত্মঘাতী গোল হজম করার কারণ হন সন হিউং-মিন। এর আগে ১৯৯৯ সালের মে মাসে সর্বশেষ এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন অ্যাস্টন ভিলার গ্যারেথ ব্যারি।

* অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে কেবল দুটি শট নিতে পারে ম্যান সিটি। এটি ছিল পেপ গার্দিওলার অধীন কোনো দলের সর্বনিম্ন গোল প্রচেষ্টা।

* প্যালেসের বিপক্ষে লিভারপুলের সমতা ফেরানো গোলটি ছিল দলটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সালাহর ২০০ গোল। ‘অল রেড’দের হয়ে পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে এ মাইলফলক ছুঁয়েছেন এই মিসরীয় ফরোয়ার্ড।

আরও পড়ুন

জানুয়ারি

* চেলসি-লিভারপুল ম্যাচে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে চারটি শট পোস্টে মারেন লিভারপুলের দারউইন নুনিয়েজ।

* চেলসির বিপক্ষে লিভারপুলের ৪-১ গোলে জেতা ম্যাচটি ছিল ইয়ুর্গেন ক্লপের ২০০তম প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচ জয়। সপ্তম কোচ হিসেবে এ কৃতিত্ব গড়েন ক্লপ।

ফেব্রুয়ারি

* প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের দ্বিতীয় দল হিসেবে পিছিয়ে পড়ে চারটি অ্যাওয়ে জেতে ম্যান সিটি। এর আগে ২০২০ সালে ছয় ম্যাচে জিতেছিল ম্যানচেস্টার ইউনইটেড।

* চেলসির বিপক্ষে ৯টি শট নিয়েও গোল করতে পারেননি হলান্ড। সিটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে আর কখনো এর চেয়ে বেশি শট নিয়ে গোলহীন থাকেননি হলান্ড।

* লিভারপুলের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১০ গোল করেন সালাহ, দিয়োগো জোতা, দারউইন নুনিয়েজ, কোডি গাকপো ও লুইস দিয়াজ। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে যা প্রথম।

আবারও কাছাকাছি হতাশ হয়েছে আর্সেনাল
রয়টার্স

মার্চ

* চেলসি (৩৩) ও বার্নলি (১৮) ম্যাচে শট নেওয়া হয় ৫১টি। এর চেয়ে বেশি শটের ম্যাচটি দেখা গিয়েছিল ২০১৪। সেবার ৫২টি শট নেওয়া হয়েছিল কিউপিআর ও লেস্টারের ম্যাচে।

* ম্যান সিটির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করায় থেমেছিল আর্সেনালের প্রিমিয়ার লিগে টানা ৪৭ ম্যাচে গোল করার ধারা।

এপ্রিল

* শেফিল্ডের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জেতা ম্যাচে লিভারপুলের পজেশন ছিল ৮২.৯ শতাংশ। যা ছিল নতুন ক্লাব রেকর্ড এবং সব দল মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

* ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডর হয়ে চেলসির বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন কোল পালমার। প্রিমিয়ার লিগে ২০০তম খেলোয়াড় হিসেবে এ কীর্তি গড়েন এই ইংলিশ উইঙ্গার।

আরও পড়ুন

মে

* টটেনহামের বিপক্ষে ম্যাচে প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে গোলে সহায়তায় দুইয়ে উঠে আসেন কেভিন ডি ব্রুইনা। ১১২ গোলে সহায়তা করে তিনি ছাড়িয়ে যান সেস ফ্যাব্রেগাসকে (১১১)।

* লিভারপুলের বিপক্ষে ম্যাচে প্রিমিয়ার লিগে তৃতীয় আত্মঘাতী গোলটি হজম করেন অ্যাস্টন ভিলার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। যা প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

* প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা মৌসুমে ১০টির বেশি গোল এবং গোলে সহায়তা করেন সালাহ।

* প্রথম দল হিসেবে টানা চারটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জেতার কীর্তি গড়েছে ম্যান সিটি।