রোনালদোর সঙ্গে আল নাসরও যেখানে শীর্ষে
গোল, পুরস্কার বা ট্রফি—বেশির ভাগ রেকর্ড বা মাইলফলকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসি।
তবে মঞ্চটা যখন আন্তর্জাতিক ফুটবলের, লড়াইয়ের ময়দানে ঢুকে পড়ে কম চেনা নামও। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডের কথাই ভাবুন। ১৭ বছর ধরে রেকর্ডটা ছিল আলী দাইয়ির দখলে। ইরানের এই স্ট্রাইকার বায়ার্ন মিউনিখের মতো ক্লাবেও খেলেছেন।
কিন্তু তাঁর সময়ে আলোচিত ও জনপ্রিয় স্ট্রাইকারদের প্রথম সারিতে সেভাবে রাখা হতো কই! প্রায় দেড় যুগ আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড ছিল দাইয়ির অধিকারে। দুই বছর আগে যা নিজের করে নেন রোনালদো।
৩৮ বছর বয়সী পর্তুগিজ তারকা এবার আন্তর্জাতিক ফুটবলের আরেকটি রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচের রেকর্ডে কুয়েতের বাদের আল-মুতাওয়াকে টপকে গেছেন তিনি। গতকাল রাতে লিখটেনস্টেইনের বিপক্ষে ১৯৭তম ম্যাচটি খেলেন রোনালদো। ১৯৬ ম্যাচ খেলা আল-মুতাওয়া নেমে গেছেন দুইয়ে।
কুয়েতের এই স্ট্রাইকার অবশ্য আন্তর্জাতিক ফুটবলকে এখনো বিদায় জানাননি। কুয়েতের ক্লাব কাদসিয়ায় খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। বয়সে রোনালদোর চেয়ে মাত্র এক মাসের বড় আল-মুতাওয়া। তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আর খেলতে পারবেন কি না, পরিষ্কার নয়; কুয়েত জাতীয় দলে তাঁকে আর ডাকা হচ্ছে না।
আল-মুতাওয়া অবশ্য খুব বেশি সময় সর্বোচ্চ ম্যাচের রেকর্ডের মালিক থাকতে পারেননি। ২০১২ সাল থেকে শীর্ষে থাকা মিসরের আহমেদ হাসানকে টপকে ১ নম্বরে ওঠেন ২০২১ সালের শুরুর দিকে। এর কয়েক মাস পরই ন্যূনতম ১০০টি ‘এ’ ক্যাটাগরির ম্যাচ খেলা ফুটবলারদের তালিকা প্রকাশ করে ফিফা।
বৈশ্বিক ফুটবল কর্তৃপক্ষের তালিকা অনুসারে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচের রেকর্ডটা হয়ে যায় মালয়েশিয়ার সোহ চিন অ্যানের। ১৯৮৪ সালে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা এই মালয়েশিয়ান ফুটবলার জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন ২১৯ ম্যাচ। তবে প্রতিপক্ষ ও প্রতিযোগিতা বিবেচনায় সব ম্যাচ ফিফা মানদণ্ডে ‘এ’ ক্যাটাগরির ছিল না।
শেষ পর্যন্ত ২৪ ম্যাচ বাদ পড়ে গেলেও ১৯৫ ম্যাচ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার স্বীকৃতি পেয়ে যান চিন অ্যান, তা–ও খেলা ছাড়ার ৩৭ বছর পর!
চিন অ্যান যখন ম্যাচের সংখ্যায় শীর্ষ খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হন, আল-মুতাওয়ার ম্যাচ তখন ১৮৫টি।
তবে খেলার মধ্যে থাকায় ১০ মাস পর ২০২২ সালের জুনেই আবার রেকর্ড পুনরুদ্ধার করেন তিনি। তবে জর্ডানের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের সেই ম্যাচের পর দলে জায়গা হারিয়ে ফেলেন আল-মুতাওয়া। এখনো থমকে আছেন সেখানেই। গতকাল ইউরো বাছাইয়ের ম্যাচে আল-মুতাওয়াকে পেছনেই ফেলে দিলেন রোনালদো।
তবে রোনালদো আর আল-মুতাওয়ার মধ্যে দারুণ একটি মিল আছে। দুজনই আল নাসরের খেলোয়াড়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে এ বছরই সৌদি আরবের ক্লাবটিতে যোগ দিয়েছেন রোনালদো। আর আল-মুতাওয়া খেলেছেন ২০০৯-১০ মৌসুমে। কাদসিয়া থেকে ধারে গিয়ে আল নাসরের হয়ে ১৯ ম্যাচ খেলেন তখন, গোলও করেন ৯টি।
শুধু রোনালদো আর আল-মুতাওয়াই নন, সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা শীর্ষ পাঁচের আরও একজন খেলেছেন আল নাসরে। তিনি হচ্ছেন ওমানের আহমেদ মুবারক। ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে পা রাখা এই মিডফিল্ডার ওমানের হয়ে খেলেছেন ১৮৩ ম্যাচ, সর্বশেষ খেলেছেন ২০১৯ সালে।
আল-মুতাওয়া যদি আর কুয়েত জাতীয় দলে ডাক না পান, রোনালদোর বেশি ম্যাচের রেকর্ড বেশ কিছুদিন অক্ষতই থাকার কথা। বর্তমান ফুটবলারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছেন মেক্সিকোর আন্দ্রেস গুয়ারদাদো—১৭৯টি। ১৭৩ ম্যাচ নিয়ে তৃতীয় স্থানে মেসি।