রেফারিকে ঘুষি মারা ক্লাব সভাপতি গ্রেপ্তার
ফুটবল মাঠে মারামারির ঘটনা নতুন কিছু নয়, তবে কাল রাতে তুরস্কের সুপার লিগে তা নতুন মাত্রা পেল। মাঠে ঢুকে রেফারিকে ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়েছেন আঙ্কারাগুজু ক্লাবের সভাপতি। আঙ্কারায় আঙ্কারাগুজু ও রিজেসপোরের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হওয়ার পর ঘটে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
এরপরই তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে নিজেদের শীর্ষ ফুটবল লিগকে। পরে অভিযুক্ত ক্লাব সভাপতি ফারুক কোজাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তুরস্কের বিচার মন্ত্রী ইলমাজ টুঙ্ক। তিনি বলেছেন, ‘দায়িত্বে নিয়োজিত একজনকে আহত করার দায়ে কোজা ও সন্দেহভাজন আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা বয়ান নেওয়ার পর তাঁদের গ্রেপ্তার করেছেন। এ ঘটনার তদন্ত নিবিড়ভাবে চলছে।’
আঙ্কারাগুজু ক্লাবের প্রধান ফারুক কোজা রেফারি হালিল উমুত মেলেরের মুখে ঘুষি মারেন। সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে পড়ে যান রেফারি। পরে কালশিটে পড়া ফোলা বাঁ চোখ নিয়ে মাঠ ছাড়তে দেখা যায় রেফারিকে। ৩৭ বছর বয়সী রেফারিকে পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে দেখতে যান তুরস্কের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী ওসমান আসকিন বাক।
ফিফা ও উয়েফার তালিকাভুক্ত তুরস্কের অন্যতম নামী এই রেফারি মারধরের শিকার হওয়ার পর তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশন (টিএফএফ) লিগ স্থগিতের খবর জানিয়ে বিবৃতি দেয়। এই ঘটনাকে তুরস্কের ফুটবলের ওপর আঘাত হিসেবেই দেখছে টিএফএফ, ‘শুধু হালিল উমুত মেলেরের ওপরই নয়, এই অমানবিক ও ঘৃণিত আঘাত তুরস্কের ফুটবল–সংশ্লিষ্ট সবার ওপরই হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবেই অমানবিক এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত ক্লাব, ক্লাবটির সভাপতি, কোচ ও আরও যাঁরা হালিল উমুত মেলেরের ওপর হামলা করেছেন, তাঁদের সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।’
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এ ঘটনাকে পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমাদের সমাজে বা খেলাধুলায় সহিংসার কোনো স্থান নেই। ম্যাচ পরিচালনাকারী ছাড়া ফুটবল চলতে পারে না। রেফারি, খেলোয়াড়, সমর্থক এবং কর্মীদের নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থেকে খেলা উপভোগ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আমার আহ্বান, খেলার নিয়ম–কানুন যেন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয় এবং সর্বস্তরে সম্মান করা হয়।’
ম্যাচের যোগ করা সময়ে রিজেসপোর সমতা ফেরানোর পরপরই কোজা মাঠে ঢুকে রেফারির ওপর চড়াও হন। রেফারি ঘুষি খেয়ে পড়ে যাওয়ার পরও আবার আঘাত করা হয় তাঁকে।
ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় তুরস্কের ফুটবল-পাগল প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও নিন্দা জানিয়েছেন। এক্সে এক বার্তায় এরদোয়ান লিখেছেন ‘খেলাধুলা হলো শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক। সহিংসতার সঙ্গে খেলাধুলা যায় না। তুরস্কের ক্রীড়াঙ্গনে আমরা সহিংসতা বরদাশত করতে পারি না।’