এল ক্লাসিকো—ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে সম্ভবত সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত দ্বৈরথ। মেসি-রোনালদো এবং গার্দিওলা-মরিনহোর সময়ে এই ক্লাসিকো পেয়েছিল নতুন মাত্রা। সাম্প্রতিক সময়ে নানা কারণে এল ক্লাসিকোর উত্তাপ কিছুটা কমলেও এখনো এটিই ক্লাব ফুটবলের অন্যতম সেরা দ্বৈরথগুলোর একটি। মৌসুমের অন্য এল ক্লাসিকোগুলোর চেয়ে লা লিগায় আজ রাতের লড়াইটি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। লিগ শিরোপা নির্ধারণে মহাগুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে ম্যাচটি।
গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে রিয়ালের সুসংবাদের বিপরীতে বার্সার জন্য আছে দুঃসংবাদ। চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে লিভারপুলের বিপক্ষে চোটে পড়েছিলেন বেনজেমা। ম্যাচ শেষে এল ক্লাসিকোতে তাঁর খেলা নিয়েও জেগেছিল শঙ্কা। তবে রিয়ালের জন্য স্বস্তির খবর হচ্ছে চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছেন বেনজেমা।
অন্যদিকে বার্সার জন্য দুঃসংবাদ, চোটের কারণে উসমান দেম্বেলে ও পেদ্রিকে দলে পাচ্ছে না তারা। ঘরের মাঠে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এ দুজনকে না পাওয়া কিছুটা হলেও পিছিয়ে থাকবে বার্সা।
লিগ শিরোপার লড়াইয়ে আপাতত ২৫ ম্যাচ শেষে শীর্ষে থাকা বার্সার পয়েন্ট ৬৫ এবং সমান ম্যাচে দুইয়ে থাকা রিয়ালের পয়েন্ট ৫৬। এই সমীকরণের কারণেই মূলত এল ক্লাসিকো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রাতে ক্যাম্প ন্যুতে রিয়াল যদি জিততে পারে তবে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে তারা বার্সার কিছুটা কাছাকাছি চলে আসবে। তখন দুই দলের পয়েন্টের ব্যবধান হবে ৬। লিগে বার্সার এখনো আতলেতিকো মাদ্রিদ কিংবা রিয়াল বেতিসের মতো দলগুলোর সঙ্গে খেলা বাকি আছে।
এল ক্লাসিকোতে হারলে তা বার্সার আত্মবিশ্বাসে বড় ধাক্কা দেবে। পরের ম্যাচগুলোতেও যার প্রভাব দেখা যেতে পারে। যা রিয়ালকে সুযোগ করে দেবে ওপরে উঠে আসার। নিজেদের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার হুমকিটা আগে থেকেই দিয়ে রেখেছেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি, ‘কোনো ঝুঁকি না নিয়ে রোববার আমরা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলব।’
আর রিয়াল যদি এই ম্যাচে হেরে যায়, তবে বার্সা শিরোপা জয়ের পথে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। দুই দলের পয়েন্টের পার্থক্য হবে তখন ১২। মনোবল হারানো রিয়ালের পক্ষে লিগের বাকি ম্যাচগুলো দিয়ে পয়েন্টের এই বিশাল পার্থক্য ঘোচানো মোটেই সহজ হবে না।
এই ম্যাচে রিয়াল যে আগ্রাসী হয়ে খেলবে, তা জানা আছে বার্সেলোনা কোচ জাভি হার্নান্দেজেরও। ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে জাভিও বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, রিয়াল মাদ্রিদ অনেক বেশি আগ্রাসী হয়ে খেলবে। যে পরিস্থিতিতে তারা এখন আছে সে কারণেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলবে।’
বার্সেলোনার স্কোয়াড:
গোলরক্ষক: টের স্টেগেন, ইনাকি পেনা, আরনু তেনাস।
রক্ষণভাগ: মার্কোস আলনসো, জর্দি আলবা, এরিক গার্সিয়া, বালদে, রোনালদ আরাউহো, আন্দ্রেস ক্রিস্টিনসেন, হুলেস কুন্দে।
মাঝমাঠ: সের্হিও বুস্কেতস, ফ্রাঙ্ক কেসি, সের্হিও রবার্তো, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়িং, গাভি, পাবলো তোরে।
আক্রমণভাগ: রবার্ত লেভানডফস্কি, আনসু ফাতি, ফেরান তোরেস, রাফিনিয়া, আনহেল আলারকন।
রিয়াল মাদ্রিদের স্কোয়াড:
গোলরক্ষক: থিবো কোর্তোয়া, লুনিন, লুইস লোপেজ।
রক্ষণভাগ: দানি কারভাহাল, এদের মিলিতাও, ভালেহো, নাচো ফার্নান্দেজ, অদ্রিওজোলা, লুকাস ভাসকে, রুডিগার, মেন্দি।
মাঝমাঠ: টনি ক্রুস, লুকা মদরিচ, এদোয়ার্দো কামাভিঙ্গা, ভালভার্দে, চুয়ামেনি, দানি সেবায়োস।
আক্রমণভাগ: এডেন হ্যাজার্ড, করিম বেনজেমা, মার্কো আসেনসিও, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো, মারিয়ানো।