পিএসজি সভাপতির বিরুদ্ধে অপহরণ ও আটকের অভিযোগ
অভিযোগটা ভয়ংকর। এক লোককে প্রায় ১০ মাস আটকে রেখেছিলেন পিএসজি চেয়ারম্যান নাসের আল খেলাইফি। তাঁর বিষয়ে কিছু গোপন তথ্য জানা ছিল সেই লোকের। ফাঁস করে দিতে পারেন, এই শঙ্কা থেকেই সেই লোককে নাকি গোপন একটি জায়গায় আটকে রেখেছিলেন খেলাইফি।
সেই লোক খেলাইফির বিষয়ে গোপন সব নথিপত্র তাঁর আইনজীবীর কাছে হস্তান্তরের পর তাঁকে ছাড়া হয়। ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম ‘লিবারেশন’ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
আটক থাকা সেই লোকটির নাম তায়েব বি। তিনি ফ্রাঙ্কো–আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী। এই লোককে আটকে রাখার কারণেই খেলাইফির বিরুদ্ধে অপহরণ ও অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছে ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘লিবারেশন’।
কাতার রাজপরিবারের কর্তৃপক্ষের ঘনিষ্ঠভাজন খেলাইফি ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতিতেও সম্পৃক্ত। পিএসজির মালিকপ্রতিষ্ঠান কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপের (কিউএসআই) চেয়ারম্যানও খেলাইফি।
এই প্রতিষ্ঠানের আসল মালিক কাতারের অর্থ মন্ত্রণালয় বলে এর আগে জানিয়েছিলেন সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সহযোগী সম্পাদক উনা গালানি।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০২০ সালের শুরুর দিকে দোহায় তায়েব বি–কে আটক করেন খেলাইফি। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ ফরাসি সংবাদমাধ্যমটির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি তায়েব বি–কে আটক করেন পিএসজি সভাপতি।
সে বছরেরই ১ নভেম্বর তাঁকে মুক্তি দেন। ফরাসি সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে কাতারকে ফিফার বেছে নেওয়ায় যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, এর পেছনে কলকাঠি নাড়ায় খেলাইফির ভূমিকা ছিল, এ–সম্পর্কিত বিভিন্ন নথিপত্র ছিল তায়েব বি–র কাছে।
মাসের পর মাস তাঁকে আটকে রেখে, নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে শেষ পর্যন্ত নথিগুলো উদ্ধার করেন খেলাইফি। পিএসজির এই সভাপতির আইনজীবীর কাছে সব নথিপত্র হস্তান্তরের পর মুক্তি পান তায়েব বি। গোপন চুক্তির মাধ্যমে এই নথি হস্তান্তর করা হয়। ৪১ বছর বয়সী তায়েব বি তাঁর স্ত্রী–সন্তান নিয়ে কাতারেই বসবাস করতেন।
এ বিষয়ে এখনো খেলাইফির কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পিএসজি সভাপতিকে ঘিরে এমন অভিযোগ কাতার বিশ্বকাপের বর্ণিল আয়োজনে একটু হলেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
দেশটিতে বিশ্বকাপ আয়োজনে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে এরই মধ্যে প্রতিবাদ জানানোর ঘোষণা দিয়েছে ডেনিশ ফুটবল। বিশ্বকাপে মাঠেই প্রতিবাদ জানাবে ডেনমার্ক।