ডি ব্রুইনা ও সালাহ কেন চেলসি ছেড়েছিলেন জানালেন মরিনিও

সালাহ যখন চেলসিতে খেলতেনটুইটার

নিজেদের সময়ের তো বটেই, প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের সর্বকালের সেরার তালিকায় অনায়াসে জায়গা পাবেন কেভিন ডি ব্রুইনা ও মোহাম্মদ সালাহ। ডি ব্রুইনা ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে এবং সালাহ লিভারপুলে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। কিন্তু ডি ব্রুইনা বা সালাহ কারোরই প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ক্লাব কিন্তু সিটি বা লিভারপুল নয়। এ দুজনই নিজেদের প্রিমিয়ার লিগ ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন চেলসির হয়ে। কিন্তু দুজনের কেউই চেলসিতে শেষ পর্যন্ত থিতু হতে পারেননি।

ডি ব্রুইনা ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে দুই মৌসুমে চেলসির হয়ে প্রিমিয়ার লিগে খেলেছিলেন মাত্র ৩ ম্যাচ, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৯। আর ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালে পর্যন্ত পর্যন্ত চেলসিতে থাকা সালাহ লিগে মাত্র ১৩ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে যে সংখ্যা ১৯। চেলসিতে কোচ থাকার সময় ডি ব্রুইনা ও সালাহকে শিষ্য হিসেবে পেয়েছিলেন পর্তুগিজ কোচ জোসে মরিনিও।

আরও পড়ুন

সম্প্রতি প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের দুই সেরা তারকাকে কেন চেলসি ধরে রাখতে পারেনি, তা নিয়ে কথা বলেছেন মরিনিওকে। এএস রোমার বর্তমান কোচ বলেন, নিজেদের ইচ্ছায়ই ক্লাব ছেড়েছিলেন ডি ব্রুইনা ও সালাহ। তবে ক্লাব বদলে দুজনের কেউই ভুল করেননি বলেও মন্তব্য করেন মরিনিও।

ডি ব্রুইনা যখন চেলসিতে ছিলেন
এএফপি

সম্প্রতি ওবি ওয়ান পডকাস্টে মরিনিওর কাছে জানতে চাওয়া হয় ডি ব্রুইনা ও সালাহর ক্লাব ছাড়ার প্রসঙ্গে। জবাবে মরিনিও বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, তারা নিজেদের ইচ্ছায়ই ক্লাব ছেড়ে গিয়েছিল। তারা ক্লাব ছেড়েছিল, কারণ তারা অপেক্ষা করতে চায়নি। ইতিহাস প্রমাণ দিচ্ছে, তারা যে বিকল্প বেছে নিয়েছে, সেটা ঠিক ছিল। তাদের ক্যারিয়ারই সে কথা বলছে এবং তারা সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।’

জোসে মরিনিও
এএফপি

তবে অধৈর্য হয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত ভুলও হতে পারত বলে মন্তব্য করেন মরিনিও, ‘অনেক সময় খেলোয়াড়েরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়, কারণ তারা অপেক্ষা করতে চায় না কিংবা তাদের মধ্যে শান্ত থাকার এবং সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করার মতো ধৈর্য থাকে না। অনেক সময় তাদের ক্যারিয়ার ভুল পথেও চলে যায়।’

ডি ব্রুইনার ক্লাব ছাড়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মরিনিও বলেন, ‘আমরা এশিয়ায় প্রাক্‌–মৌসুম খেলতে গিয়েছিলাম। আমরা ইন্দোনেশিয়া আর থাইল্যান্ডে গিয়েছিলাম। আর কেভিন একটি জার্মান ক্লাবে ধারে খেলতে গিয়েছিল। আমি ক্লাবকে বলেছিলাম, আমি তাকে ধারে যেতে দিতে চাই না। আমি তাকে নিজের কাছে রাখতে চাই। সে আমার সঙ্গে থেকে গেল এবং প্রিমিয়ার লিগে একাদশে থেকে মৌসুম শুরু করল। এরপর আমরা ইউরোপিয়ান সুপার কাপে বায়ার্নের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে প্রাগে গেলাম এবং সেই ম্যাচে সে খেলেনি।’

আরও পড়ুন

ডি ব্রুইনার ক্লাব ছাড়া নিয়ে মরিনিও আরও বলেছেন, ‘আর পরদিনই সে ক্লাব ছেড়ে যেতে চাইল। প্রিমিয়ার লিগে আমাদের দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল ওল্ড ট্রাফোর্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেদিন সে বেঞ্চে ছিল এবং কিছু সময় সে খেলেছেও। কিন্তু এটা তার জন্য যথেষ্ট ছিল না। পরে সে আর থাকতে চাইল না। যখন আপনি চেলসির মতো ক্লাবে থেকেও চলে যেতে চাইবেন, তখন আপনার বিকল্প অন্য কেউ আসবে। তারা অপেক্ষা করতে চায়নি। তাদের ক্যারিয়ার বলছে, তারা ঠিক ছিল।’

সালাহ ও ডি ব্রুইনার চেলসি ছাড়ায় যে তাঁর কোনো ভূমিকা ছিল না, শেষে সেটিও জোর দিয়ে বললেন মরিনিও, ‘বিষয়টায় (ওদের চলে যাওয়াটা) আমার কোনো দায় ছিল না। অনেকেই হয়তো বলবে, আমি তাদের বের করে দিয়েছি, কিন্তু ওই দুজনের (ডি ব্রুইনা–সালাহ) বেলায় কথাটা সত্যি নয়।’