সহিংসতায় রণক্ষেত্র ফ্রান্স, শান্তির ডাক এমবাপ্পের

পিএসজি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেছবি: টুইটার

গত মঙ্গলবার ফ্রান্সের নঁতে শহরে ট্রাফিক পুলিশের গুলিতে মারা যায় নাহেল এম নামের ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর। এ ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত গোটা ফ্রান্স। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। শুধু বৃহস্পতিবার রাতেই ৯০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে সহিংসতার ঘটনাকে আমলে নিয়ে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স সরকার।

ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে এমন মৃত্যু নতুন নয়। গত বছর ট্রাফিক চেকে পুলিশের গুলিতে রেকর্ড ১৩ জন মারা যায়। আর চলতি বছর এ ধরনের দ্বিতীয় ঘটনা ছিল নাহেলের মৃত্যু। বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তির কারণেই মূলত শুরু হয় প্রতিবাদ। তবে সেই প্রতিবাদ পরবর্তীকালে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। উত্তরে লিলে ও রুবাইক্সে এবং দক্ষিণে মার্সেই পর্যন্ত দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে, রাস্তাগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে এবং কারে আগুন দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেখে এবার সরব হয়েছেন ফরাসি ফুটবল তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। ডাক দিয়েছেন সহিংসতা বন্ধের। খেলোয়াড়দের পক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে সহিংসতা কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে না উল্লেখ করে ফ্রান্স অধিনায়ক এমবাপ্পে টুইটারে লিখেছেন, ‘ফ্রান্সের সব মানুষের মতো আমরাও কিশোর নাহেলের মৃত্যুতে স্তব্ধ। প্রথমত, তার পরিবারের জন্য আমাদের সমবেদনা। অবশ্যই এ ধরনের অগ্রহণযোগ্য মৃত্যুতে আমরা সংবেদশীল না হয়ে পারি না। এ ঘটনার পর আমরা জনসাধারণের ক্ষোভের প্রকাশ দেখতে পাচ্ছি, যার ভিত্তিও আমরা বুঝতে পারছি। তবে ক্ষোভ প্রকাশের এ ধরনকে আমরা অনুমোদন করতে পারি না। শ্রমজীবী শ্রেণির আশপাশ থেকে উঠে আসা আমাদের অনেকেই এ বেদনা ও কষ্টের সঙ্গে পরিচিত।’

আগুন দেওয়া হয়েছে গাড়িতে
ছবি: এএফপি

শান্তির ডাক দিয়ে এমবাপ্পে লিখেছেন, ‘সহিংসতা কোনো কিছুই সমাধান করতে পারে না। বিশেষ করে যখন এটা তাদের বিরুদ্ধেই যায়, যারা এটি প্রকাশ করে। তাদের পরিবার, কাছের মানুষ ও স্বজনেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনারা যা ধ্বংস করছেন, তা আপনাদেরই সম্পদ। তীব্র উদ্বেগপূর্ণ এ পরিস্থিতিতে আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমাদের নাগরিক বিবেক ডাক দিচ্ছে শান্তির, সচেতনতা ও দায়বদ্ধতার।’

আরও পড়ুন

এ সময় এমবাপ্পে শান্তি ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়ার ডাক দিয়েছেন। বলেছেন, একসঙ্গে বসবাসের যে ধারণা তা হুমকিতে, সেটাকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব সবার। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক প্রক্রিয়ায় সমস্যার সমাধানের কথাও বলেছেন বিশ্বকাপজয়ী এই ফরাসি ফরোয়ার্ড।

এর আগে নাহেলের মৃত্যুর পরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নিজের সমবেদনার কথা জানিয়েছিলেন এমবাপ্পে। এক টুইটে লিখেছিলেন, ‘ফ্রান্সের জন্য আমার কষ্ট হচ্ছে। এই পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য। নাহেলের পরিবার ও কাছের মানুষের জন্য সমবেদনা। ছোট এই দেবদূত অনেক তাড়াতাড়ি অনেক দূরে চলে গেল।’