নেপালের কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ
বাংলাদেশের আক্রমণটা থেমেছিল নেপালের বক্সে। সেখান থেকে এক ডিফেন্ডারের বিপদমুক্ত করা বলটা সোজা এসে পড়েছিল বক্সের বাইরে উঠে আসা গোলকিপার মেহেদী হাসানের পায়ে। অন্য ডিফেন্ডাররা তখন সবাই ওপরে উঠে গিয়েছিলেন। বলটা ধরে মেহেদী শুধু সেটি সামনে বাড়াবেন। কিন্তু সেটিই করতে পারলেন না বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–২০ দলের অধিনায়ক। নেপালি ফরোয়ার্ড সামির তামাং তাঁর পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে গোল করেন। তখন ম্যাচের মাত্র ১৬ মিনিট পেরিয়েছে।
শুরুতেই গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে এলোমেলো বাংলাদেশ দ্বিতীয় গোলটাও হজম করল দুই মিনিট পরই। এবার ডান প্রান্ত দিয়ে দারুণ একটা আক্রমণে উঠে বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের বোকা বানান নেপালি ফরোয়ার্ডরা। গোল করেন নিরঞ্জন ধামা। নেপালে আজ সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপে ১৮ মিনিটের মধ্যে দুই গোল খেয়ে বসা বাংলাদেশ স্বাগতিকদের কাছে হেরেছে ২–১ গোলে। প্রথম ম্যাচ জিতেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা বাংলাদেশ আজকের হারে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ হারিয়েছে। নিজেদের গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় হয়েই সেমিফাইনালে খেলতে হবে মারুফুল হকের দলকে।
২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর প্রথমার্ধের বাকি সময়টা ছিল বাংলাদেশেরই। পরের ১০ মিনিটে একের পর এক আক্রমণে উঠে ৫টি কর্নার আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচেও অসাধারণ সব আক্রমণ গড়েও গোলের সুযোগ তৈরি করতে না পারার ব্যাপারটি ছিল। আজ নেপালের বিপক্ষে সেটি প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।
৪২ মিনিটে একটি আক্রমণে উঠলে মিরাজুল ইসলামকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন নেপালের দুই ডিফেন্ডার রাম থাপা ও অশ্বিন ঘোরাসাইনি। পেনাল্টিটি কাজে লাগান মিরাজুল। আগের ম্যাচেও গোলের খাতা খুলেছিলেন মিরাজুল। তবে আজ গ্রুপের শেষ ম্যাচে শুরুতে কোচ মারুফুল হক তাঁকে নামাননি।
আগের ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমে গোল করা পিয়াস আহমেদ নোভাকে আজ শুরুর একাদশে নামিয়েছিলেন কোচ। শুরুর একাদশে ছিলেন হোসেন মোহাম্মদ ও মহসিন আহমেদ। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর মহসিনের জায়গায় মিরাজ আর হোসেন মোহাম্মদের জায়গায় আসাদুল মোল্লা মাঠে নামেন। কোচের কৌশল কাজে এসেছিল। আক্রমণের ধার বেড়েছিল দলের। কিন্তু গোলের সুযোগ তৈরি বা নেপালের রক্ষণে আতঙ্ক ছড়ানোর মতো কিছু করা যায়নি।
দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচের একই চিত্র দেখা গেছে বাংলাদেশের খেলায়। তবে এই অর্ধে নেপালও খেলেছে সমানতালে। আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ম্যাচটি দারুণ জমেও উঠেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মতো নেপালও তেমন আতঙ্ক ছড়ানো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি। বাংলাদেশের রাব্বি হোসেন রাহুল, মিরাজুল ইসলাম, আসাদুল মোল্লা, রুস্তম ইসলাম, চন্দন রায়, আশরাফুল হক আসিফ কিংবা আসাদুল ইসলামরা নিজেদের মধ্যে পাস খেলেছেন ভালোই, কিন্তু ওই পর্যন্তই। অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে খেই হারানোর ব্যাপারটি যে এই দলের বড় দুর্বলতা, সেটি বোঝা গেছে।