মেয়েদের বেতন বেড়েছে, মাসে কে কত পাবেন এখন
গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই বেতনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সদস্যরা। আর্থিক সংকটের কারণ দেখিয়ে গত ১০ মাস সেই দাবি পূরণ করতে পারেনি বাফুফে। মাঝখানে ঘটেছে নানা ঘটনা। বেতনের দাবি তুলে মেয়েরা অনুশীলন বর্জন করেছিলেন।
অবশেষে নারী ফুটবলারদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করেছে বাফুফে। শীর্ষ পর্যায়ের ৩১ ফুটবলারের সঙ্গে আজ বাফুফে ভবনের সভাকক্ষে চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা বাফুফে। ৬ মাসের এই চুক্তি কার্যকর হবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে।
সাবিনাদের দাবি ছিল মাসে ৫০ হাজার টাকা করে বেতন। সাবিনাসহ ১৫ ফুটবলারকে মাসে ৫০ হাজার টাকা করেই বেতন দেবে বাফুফে। ১০ জন বেতন পাবেন ৩০ হাজার টাকা করে। বাকি ৬ ফুটবলারের ৪ জনের ২০, ২ জনের ১৮ হাজার। অধিনায়ক সাবিনা খাতুন আগে বেতন পেতেন ২০ হাজার। বাকিরা পেতেন ১০ হাজার টাকা করে। এখন ৫০ হাজার টাকা করে যাঁরা বেতন পাবেন, তাঁদের মধ্যে ১৪ জনের বেতন বাড়ল ৫ গুণ। সাবিনার বাড়ল আড়াই গুণ।
আজকের অনুষ্ঠানে বাফুফের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন প্রথমে জানান, ৩১ জনের সঙ্গে পুল বা চুক্তি হয়েছে। ১৫ জন পাবেন ৫০ হাজার টাকা করে। পরের ১০ জন ৩০ হাজার করে। বাকি ৬ জনের মধ্যে...ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ পর্যন্ত বলার পর বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সাধারণ সম্পাদককে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘সেক্রেটারি, এগুলো গোপনীয়। এভাবে এগুলো বলার দরকার নেই।’
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকেরা নামগুলো জানতে চান। কাজী সালাউদ্দিন তখন বলেন, পরে জানানো হবে। বাফুফে অফিসে পরে জানতে চাইলে নামগুলো প্রকাশ করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রাজি হননি। এ নিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে অবশ্য নামগুলো প্রকাশ করে বাফুফে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় খেলোয়াড়দের তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশ করে আসছে। কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবলে ঐতিহাসিক এক চুক্তি করেও বাফুফের এত রাখঢাক গুড় গুড় বিস্ময়করই।
অর্থের অভাবে এই মেয়েদের অলিম্পিক বাছাই খেলতে পাঠাতে পারেনি বাফুফে। তাহলে এখন বেতনের অর্থের জোগান আসবে কোথা থেকে? এমন এক প্রশ্নে আজকের অনুষ্ঠানে বাফুফে সভাপতি বলেছেন, ফিফার তহবিল ও স্পনসর থেকে মেয়েদের বেতনের টাকা দেওয়া হবে।
বাফুফে সভাপতি অবশ্য আশা করছেন, ‘মেয়েরা আরও ভালো পারফরম্যান্স করুক। আমি তাদের আরও দিতে প্রস্তুত। আমি চাই ওরা আরও ভালো খেলুক, আরও বেতন দাবি করুক। সামর্থ্য থাকলে আমি ওদের বেতন আরও দিতাম।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘ঈদ বোনাসটা আমরা দিতে পারি না; কারণ, ফুটবল-বিশ্বে এটা কোনো সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না।’
ওদিকে বেতন বাড়ার পাশাপাশি মেয়েদের কঠোর আচরণবিধির আওতায়ও এনেছে বাফুফে। অনুশীলন বর্জন, বাফুফেকে না জানিয়ে কোথাও খেলতে যাওয়া—এসব চলবে না এখন থেকে। কোনো ফুটবলার শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তাঁকে ক্যাম্প থেকে বের করে দেওয়া হবে বলেও চুক্তিপত্রে শর্ত জুড়ে দিয়েছে বাফুফে।
৫০ হাজার টাকা
সাবিনা খাতুন, রুপনা চাকমা, মাসুরা পারভীন, শামসুন্নাহার, শিউলি আজিম, নিলুফার ইয়াসমিন, আনাই মোগিনি, মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, শামসুন্নাহার জুনিয়র, রিতু পর্ণা, সানজিদা আক্তার, মার্জিয়া, কৃঞ্চারানী সরকার, তহুরা খাতুন
৩০ হাজার টাকা
সোহাগি কিসকু, স্বপ্না রানী, আফিদা খন্দকার, শাহেদা আক্তার, স্বর্না রানী মন্ডল, আকলিমা খাতুন, সুরমা জান্নাত, সাথী বিশ্বাস, সাতসুশিমা সুমাইয়া, উন্নতি খাতুন, হালিমা আক্তার, কোহাতি কিসকু, নাসরিন আক্তার, ইতি খাতুন
১৫ হাজার টাকা
মিস রুপা ও আইরিন খাতুন