বাংলাদেশ দলের যে পরিবর্তন দেখছেন অধিনায়ক জামাল
বাংলাদেশের জার্সিতে ১০ বছর ধরে খেলছেন জামাল ভূঁইয়া। ম্যাচের হিসাবে ৭৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসেই এত ম্যাচ কোনো ফুটবলার খেলেছেন কি না, সেটি নিয়ে গবেষণা হতে পারে। তবে গবেষণার ফলাফল নেতিবাচক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। দেশের ফুটবলে অনেক কিংবদন্তিতুল্য ফুটবলারও এত ম্যাচ খেলেননি। এত দিন ধরে বাংলাদেশের লাল–সবুজ জার্সি পরে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে জামালের মূল্যায়ন, ‘আমরা এখন প্রতিপক্ষের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করেই খেলছি। যেটা খুবই ইতিবাচক।’
জামাল আগেও আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলেছেন। ২০১৫ সালে কেরালায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম হারের তেতো স্বাদ পেয়েছিল। ৪–০ গোলে হারের সেই ম্যাচটি ছিল দুঃস্বপ্নের মতোই। ২০১৯ সালেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছিল বাংলাদেশ, সেটি জামালের নেতৃত্বেই। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আফগানদের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচটি ছিল তাজিকিস্তানের দুশানবেতে। সেটিতে বাংলাদেশ হেরেছিল ১–০ গোলে। এরপর করোনার কারণে ২০২১ সালে কাতারের দোহায় বাংলাদেকে যে ‘হোম’ ম্যাচটি খেলতে হয়েছিল, তাতে তপু বর্মণের গোলে ১–১-এ ড্র করেছিল জামালের দল। জামাল আফগানিস্তানের দাপটই দেখে এসেছেন এত দিন।
কিন্তু এবার বাংলাদেশে এসে অন্য এক দলই দেখেছে আফগানিস্তান। জামাল বললেন, ‘আগের ম্যাচগুলোতে আমরা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে পারিনি। ওরা আমাদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছে। কিন্তু এবার যে দুটি ম্যাচ খেললাম, পুরোপুরি ভিন্ন। আমরা দুটি ম্যাচেই প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেছি। সুযোগ তৈরি করেছি। হয়তো গোল করতে পারিনি। কিন্তু এ দুটি ম্যাচে ইতিবাচক অনেক কিছুই আছে।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখতে চান জামাল, ‘আমরা দুটি ম্যাচেই ভালো খেলেছি। আমার দৃষ্টিতে দুটি ম্যচেই আমরাই সেরা দল।’
আজ ম্যাচের ৬৭ মিনিটে একটি কর্নার থেকে বল পেয়ে গোলের জন্য শট নিয়েছিলেন জামাল। সেটি আফগান ডিফেন্ডার প্রতিহত করার পর ফিরতি বলে যে শটটি বাংলাদেশ অধিনায়ক নেন, সেটি হাতে লাগে ফারজাদ আতাইয়ের। কিন্তু রেফারি নেপালি প্রাজল ছেত্রী পেনাল্টি দেননি, বাংলাদেশ আবেদন করলেও লাভ হয়নি তাতে। জামাল সেটি নিয়ে আক্ষেপও করেছেন ম্যাচ শেষে, ‘পেনাল্টিটা হতে পারত। রেফারি আমাকে বলেছেন বল হাতে লেগেছে। কিন্তু তিনি পেনাল্টি দিতে পারেননি তাৎক্ষণিকভাবে। ফুটবলে এটা হয়। তবে পেনাল্টিটা পেলেই তো আমরা জিততাম।’
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকেই জামালকে নিয়ে বেশ সমালোচনা শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি ম্যাচেই ৬০ মিনিটের বেশি খেলতে পারেননি তিনি। জামাল ফুরিয়ে যাচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নও উঠছে। আগের ম্যাচে খুব ভালো খেলতে না পারলেও আজ কিন্তু মোটামুটি ভালোই খেলেছেন। প্রথমার্ধে গোলও পেতে পারতেন। কিন্তু তখন তাঁর শট কোনোমতে বাঁচিয়ে দেন আফগান গোলরক্ষক। আক্রমণে আগের ম্যাচগুলোর তুলনায় অনেক বেশি প্রাঞ্জল মনে হয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়ককে।
ভালো খেলার তৃপ্তি নিয়ে আজ রাতেই আর্জেন্টিনার ফ্লাইট ধরছেন তিনি। সেখানে সোল দে মায়োর সতীর্থেরা যে অপেক্ষায় আছেন তাঁর। সোল দে মায়োর হয়ে কয়েকটি ম্যাচ খেলেই জামাল আবার দেশে ফিরবেন, অক্টোবরে মালদ্বীপের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নেতৃত্ব দেবেন দেশকে।