সিটির সৌভাগ্যের পেছনে জাপানি এক বনসাই গাছ, পরিচর্যায় হলান্ড
২০২২-২৩ মৌসুমে ‘ট্রেবল’ জিতে ইতিহাস গড়ে ম্যানচেস্টার সিটি। ইংলিশ ক্লাবটির ইতিহাস গড়ার পথে দারুণ নৈপুণ্য দেখান আর্লিং হলান্ড। নরওয়েজীয় এই স্ট্রাইকার ৫৩ ম্যাচে করেছেন ৫২ গোল, যেখানে লিগে রেকর্ড গড়া ৩৬ গোলও আছে। এ মৌসুমেও এখন পর্যন্ত লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হলান্ডই। দলে তাঁর মূল দায়িত্ব গোল করা হলেও আরও একটি বিশেষ কাজ করেন হলান্ড।
সিটির ইতিহাস গড়া মৌসুম নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স। ‘টুগেদার: ট্রেবল উইনার্স, দ্য সিক্রেট টু দ্য সাকসেস’ শিরোনামে সেই প্রমাণ্যচিত্রে উঠে এসেছে হলান্ডের সেই বিশেষ কাজের বিবরণ। হলান্ডের বিশেষ দায়িত্ব মূলত একটি বনসাই গাছকে ঘিরে।
সিটির অনুশীলন মাঠের ফিজিও রুমে গত বছর থেকে রয়েছে গাছটি। খুব যত্নের সঙ্গে গাছটির পরিচর্যা করেন আর্লিং হলান্ড। গাছটি সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও ছিল এই স্ট্রাইকারের, যিনি আধ্যাত্মবাদে বিশ্বাস রাখার জন্য এবং জেন–জীবনধারার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।
আধ্যাত্ববাদী মানসিকতা থেকেই গাছটি ড্রেসিংরুমে রাখার প্রস্তাব দেন হলান্ড। আর জাপানি সেই গাছ এখন হয়ে উঠেছে সিটির একতার প্রতীক। মাঠের বাইরে গাছটি এখন সিটির আত্মপরিচয়ের অংশ হয়ে উঠেছে।
সিটির খেলোয়াড়দের ওপর গাছটির প্রভাব কেমন, তা ফুটে উঠেছে ডিফেন্ডার জন স্টোনসের কথায়, ‘সবাই গাছটির যত্ন নেয়। ব্যাপারটা এমন যে আপনি এখানে আসার পর গাছে পানি না দিয়ে চলে গেলে, নিজের ওপরই পরে আপনার রাগ লাগবে।’
সবাই যার যার মতো গাছটির দেখাশোনা করলেও মূল দায়িত্ব কিন্তু হলান্ডেরই। গাছটির প্রতি নিজের নিবেদন নিয়ে হলান্ড বলেন, ‘গাছটার প্রতি আমি যেন একধরনের দায়িত্ব পেয়েছি। গাছটার যা কিছু প্রয়োজন, সব তাকে দিই। গাছের ঠিকঠাক আলো প্রয়োজন (সেটার ব্যবস্থা করি)। আমরা এই বনসাই গাছ থেকে প্রাণশক্তি লাভ করি। এটি আমাদের জন্য সৌভাগ্য নিয়ে আসে।’
বনসাই থেকে পাওয়া ‘সৌভাগ্য’ সম্ভবত এখনই হলান্ডের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেও গত মৌসুমের পারফরম্যান্সের তুলনায় অনেকটাই ম্লান এই স্ট্রাইকার। বিশেষ করে বড় ম্যাচগুলোয় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না হলান্ডকে। এমনকি রয় কিনের মতো কিংবদন্তিও তাঁকে নিচের সারির খেলোয়াড়ের মানের বলে মন্তব্য করেছেন। এখন সেই সৌভাগ্যের প্রতীক সেই গাছ থেকে প্রাণশক্তি নিয়ে হলান্ড ফিরে আসতে পারেন কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।