ফ্রান্সের কোচ হওয়ার আশা ছাড়ছেন না জিদান
জিনেদিন জিদানের কথা শুনলে বহুলচর্চিত কথাটা মনে পড়তে পারে—মানুষ আশায় বাঁচে!
২০২১ সালে জিদান রিয়াল মাদ্রিদ কোচের দায়িত্ব ছাড়ার পর প্রশ্নটা উঠেছিল। এরপর কী? সবাই ভেবেছিলেন, জিদান হয়তো ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হবেন। ফ্রান্সের দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা তার আগেই জানিয়েছিলেন জিদান। কিন্তু দিদিয়ের দেশম তখন ফ্রান্সের কোচ। অপেক্ষা ছিল ২০২২ বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার। কিন্তু তখনো জিদানের ভাগ্যে শিঁকে ছেড়েনি।
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের হারের পর দেশমের সঙ্গে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ)। ৫০ বছর বয়সী জিদান আর হয়তো ফ্রান্সের কোচ হতে পারবেন না, এমনটা ভেবে নিয়েছেন সবাই। কিন্তু ফরাসি কিংবদন্তি যে অন্য ধাতুতে গড়া মানুষ, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন সাময়িকী জিকিউর সঙ্গে আলাপচারিতায়। জিদান এখনো ফ্রান্সের কোচ হওয়ার আশা ছাড়েননি।
ফ্রান্সকে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন জিদান। ২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালেও তুলেছিলেন। আলজেরিয়ান বংশোদ্ভূত ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই মিডফিল্ডারের হৃদয়ে ফ্রান্সের জন্য সব সময়ই আলাদা জায়গা আছে। সেই ভালোবাসা থেকেই জিদান হয়তো এখনো ফ্রান্সের কোচ হওয়ার আশা ছাড়েননি। সাময়িকীটিকে জিদান বুঝিয়ে বলেছেন, কেন তাঁর ফ্রান্সের কোচ হওয়ার ইচ্ছা, ‘অনেকবারই বলেছি, যখন ফ্রান্স দলে খেলবেন এবং তারপর কোচ হবেন, তখন এই ভাবনা অযৌক্তিক কিছু নয়।’
২০০৬ সালে অবসর নেওয়ার বেশ পরে কোচিংয়ে নেমেছেন জিদান। নিজের সাবেক ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের ‘বি’ দলের কোচ হন ২০১৪ সালে। দুই বছর পর রিয়ালের মূল দলের কোচের দায়িত্ব নেন। দুই মেয়াদে রিয়ালের কোচের দায়িত্ব নিয়ে দুবার লা লিগা জয়ের পাশাপাশি টানা তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগও জিতিয়েছেন জিদান। এখন বেকার বসে থাকলেও জিদান মনে করেন, ফ্রান্সের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার সময় আসেনি।
জিদান এটা বোঝাতে নিজের খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারের উদাহরণ টানলেন, ‘এখনো সে সময় আসেনি। কানের হয়ে খেলার সময় বোর্দোয় যোগ দিতে চেয়েছিলাম। সেখান থেকে জুভেন্টাস এবং তারপর রিয়াল মাদ্রিদে গিয়েছি। কারণ, আলাদা আলাদা এসব অভিজ্ঞতা হয়েছে, যাকে আমরা উচ্চাশা বলি। আমি সব সময়ই উচ্চভিলাষী ছিলাম এবং আস্থাটা নিজের ওপরই রেখেছি।’
রিয়াল কোচ হিসেবে প্রথম মেয়াদে (২০১৬–১৮) টানা তিন চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়েছেন জিদান। দ্বিতীয় মেয়াদে (২০১৯–২১) এসে জিতেছিলেন লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ। জিদান জানিয়েছেন, কতটা ঝুঁকি আছে এটা ভেবে তিনি কোনো ক্লাবের কোচের দায়িত্ব নেন না।
এসব বিষয়ে তিনি মনের ডাক শোনেন, ‘আমার মন যা চায়, তা–ই করি। রিয়ালে আড়াই বছরের প্রথম মেয়াদে অনেক কিছু জিতেছিলাম। এরপর একটু বিরতি নেওয়ার দরকার ছিল। আট মাসের সেই বিরতি আমার কাজে লেগেছে। সভাপতি এরপর আমাকে দ্রুত ফিরতে বলেছিলেন। তখন ভেবেছিলাম, আমার যা দায়িত্ব, সেটা তো করে এসেছি। আবার সেখানে ফিরতে হবে কেন? কেন এই ঝুঁকি নেওয়া? আসলে আমি অত ভেবেচিন্তে কিছু করি না। মন যা চায়, তা–ই করি।’