জিদানকে অসম্মান, যৌন হয়রানি—গদি টিকল না ফরাসি ফুটবল সভাপতির
ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ) সভাপতির দায়িত্ব ছেড়েছেন নোয়েল লে গ্রায়েত। বোর্ডের নির্বাহী কমিটি তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে। জিনেদিন জিদানের ফ্রান্সের কোচ হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে নির্বাহী কমিটির অনুরোধে গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মত হয়েছিলেন গ্রায়েত।
ফেডারেশনে তখন ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সরকারি অডিট চলছিল। দুই সপ্তাহ আগে প্রকাশিত সেই অডিটে লে গ্রায়েতকে কয়েক দফা যৌন হয়রানি এবং অন্যান্য অসদাচরণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। নোয়েল লে গ্রায়েত অবশ্য অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন।
গত জানুয়ারিতেই জানা গিয়েছিল, সভাপতির পদ থেকে সরে যেতে সম্মত হয়েছেন গ্রায়েত। এফএফএফ আজ আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করেছে। সংবাদমাধ্যম ‘গেট ফুটবল নিউজ ফ্রান্স’ জানিয়েছে, আজ সকালে এফএফএফ সভাপতি হিসেবে কিছুক্ষণের জন্য কার্যক্রম শুরু করেছিলেন গ্রায়েত। প্রায় ৪০ মিনিট পর তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
২০১১ সালে এফএফএফ সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার এক যুগ পেরিয়ে যাওয়ার পর সরে দাঁড়ালেন গ্রায়েত। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ৮১ বছর বয়সীকে নিয়ে সরকারি অডিটে বলা হয় প্রশাসন চালানো ও খেলাটিকে ফ্রান্সে তুলে ধরার ‘প্রয়োজনীয় বৈধতা’ নেই গ্রায়েতের এবং ‘নারীদের প্রতি তাঁর আচরণ যথাযথ নয়।’
ফ্রান্সের ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ) থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির কাছে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন নোয়েল লে গ্রায়েত। আগামী ১০ জুন পরবর্তী ফেডারেল অধিবেশনের আগপর্যন্ত অন্তর্বর্তী সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন সহসভাপতি ফিলিপ দিয়ালো।’ ২০২৪ সালে নোয়েল লে গ্রায়েতের বর্তমান মেয়াদ পূরণ হতো। কিন্তু তার আগেই বিতর্কিত মন্তব্য ও কর্মকাণ্ডে তাঁকে সরে দাঁড়াতে হলো।
কাতার বিশ্বকাপের পর ফ্রান্সের কোচ পদে দিদিয়ের দেশমের মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়িয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন নোয়েল লে গ্রায়েত। তখন জিদানকে নিয়েও অসম্মানজনক মন্তব্য করেছিলেন তিনি। গুঞ্জন ছিল, জাতীয় দলের কোচ হতে চান ফ্রান্সকে ’৯৮ বিশ্বকাপ জেতানো কিংবদন্তি। এ জন্য দেশমের মেয়াদ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।
কিন্তু গ্রায়েত দেশমের মেয়াদ বাড়ানোয় সে সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়। তখন আরএমসি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সের কোচ হওয়ার অন্যতম দাবিদার জিদানকে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বেশ কয়েকটি বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন গ্রায়েত, যার একটি ছিল এ রকম, ‘জিদান যদি আমাকে ফোন করত, তাহলে কী হতো? কিছুই হতো না। আমি ওর ফোনই তুলতাম না।’
এমন কিছু মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছিলেন গ্রায়েত। ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী এমিলি ওদিয়া-কাস্তেরা গ্রায়েতকে জিদানের কাছে ক্ষমা চাইতে বলার পর গ্রায়েত ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেন।