পগবার ভাই যেন ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’
পল পগবা সম্পর্কে ‘বিস্ফোরক’ তথ্য উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁর ভাই ম্যাথিয়াস পগবা। এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি মিডফিল্ডার যে ‘কাপুরুষ, বিশ্বাসঘাতক ও ভণ্ড’, তা তিনি সবার সামনে তুলে ধরবেন।
পরদিনই পল পগবা এক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন তিনি। ওই চক্রের সঙ্গে তাঁর বড় ভাই ম্যাথিয়াসও জড়িত।
৩২ বছর বয়সী ম্যাথিয়াসও পলের মতো ফুটবলার। সর্বশেষ খেলেছেন ফ্রান্সের চতুর্থ বিভাগের ক্লাব বেলফোর্টে। গত রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও বার্তায় ছোট ভাই পল ও তাঁর এজেন্ট পিমেন্তা সম্পর্কে বিস্ফোরক তথ্য উন্মোচনের ঘোষণা দেন তিনি।
তিন মিনিটের ভিডিওটিতে আগে থেকে লিখে রাখা বার্তা একাধারে চারটি ভাষায় (ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ, ইংলিশ ও ইতালিয়ান) পড়ে শোনান। ফ্রান্স ও জুভেন্টাসের অন্য সব ফুটবলার ও স্পনসরদের পল পগবা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত বলেও মন্তব্য করেন ম্যাথিয়াস।
বিবৃতিতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্পষ্ট কিছু না বললেও ফরাসি পুলিশের সূত্রে পগবার অভিযোগের বিস্তারিত জেনেছে ফ্রান্সটিভিইনফো।
ফ্রান্সের সরকারি রেডিও নেটওয়ার্কের অধীনে থাকা এই সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, পুলিশের কাছে চাঁদাবাজ চক্রের অংশ হিসেবে নিজের ছেলেবেলার দুই বন্ধু ও ভাই ম্যাথিয়াসের কথা উল্লেখ করেছেন পল পগবা।
এ বছর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে সাবেক ক্লাবে জুভেন্টাসে যাওয়া পগবা জানান, চাঁদাবাজেরা তাঁকে ম্যানচেস্টার, তুরিন ও প্যারিসে বেশ কয়েকবার অনুসরণ করেছেন।
প্রথম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পল পুলিশকে বলেছেন, মার্চে ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে খেলতে দেশে যাওয়ার পর বন্ধুরা তাঁকে প্যারিসের একটি বাসায় নিয়ে যান।
সেখানে হুডি পরিহিত সশস্ত্র আরও দুজন ছিলেন। বন্ধুরা পগবাকে বলেন, পেশাদার ফুটবলার হওয়ার পর তাঁদের তিনি আর্থিকভাবে সহায়তা করেন না। ১৩ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন সুরক্ষা দেওয়ার সুবিধা হিসেবে পগবাকে তখন ১৩ মিলিয়ন ইউরো দিতে বলা হয়।
পগবা পুলিশকে জানান, এই ঘটনার পর ওই জিম্মিকারীদের তিনি একাধিকবার দেখেছেন। একবার এপ্রিলে ম্যানচেস্টারে, আরেকবার জুলাইয়ে জুভেন্টাসের অনুশীলন মাঠে। যাঁরা তাঁকে ভয় দেখিয়েছিলেন, তুরিনে তাঁদের সঙ্গে নিজের ভাই ম্যাথিয়াসকেও দেখেছেন।
মূলত এরপরই তিনি ক্লাব কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।
পল পগবা পুলিশের কাছে গিয়েছেন জানার পর আরও ক্ষুব্ধ হয়েছেন ম্যাথিয়াস।
টুইট করে দাবি করেছেন, পুলিশের কাছে মিথ্যা বলেছেন পল, ‘যা অনুমান করেছিলাম, সেটাই ঘটেছে। অবশেষে নিজের আসল চেহারা দেখাতে শুরু করেছে আমার ভাই। সে পুলিশের কাছে মিথ্যা বলেছে। পল, তুমি আমার মুখ বন্ধ করিয়ে কারাগারে পাঠাতে চাইছ। এমনটাই আমি সন্দেহ করেছিলাম, যা এখন সত্যি। তোমার কথা যে মিথ্যা আর আমার কথা সত্যি, তা প্রতিষ্ঠিত করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ আছে আমার কাছে।’
দুই ভাইয়ের এই বিরোধে আসল সত্যিটা কী, একসময় তা নিশ্চয়ই জানা যাবে।