ব্রাজিলের জার্সিতে ব্যর্থ ভিনিসিয়ুস কি শুধুই ক্লাবের ফুটবলার

কোস্টারিকার বিপক্ষে ব্যর্থ ভিনিসিয়ুসএএফপি

এবারের কোপা আমেরিকায় ব্রাজিল যাঁদের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করছে, ভিনিসিয়ুস তাঁদের অন্যতম। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লা লিগা জয়ের অন্যতম নায়কের ওপর তো ভরসা করাই যায়, নাকি!

অথচ দুর্দান্ত ছন্দে থাকা এই ফরোয়ার্ডকে ব্রাজিল-কোস্টারিকা ম্যাচের ৭১ মিনিটেই তুলে নেন কোচ দরিভাল জুনিয়র। ভিনিকে তুলে নেওয়ার দায় অবশ্য দরিভালকে দেওয়ার সুযোগ নেই। ম্যাচজুড়ে ব্রাজিল দাপুটে ফুটবল খেললেও ভিনিসিয়ুসের প্রান্তে ছিল রাজ্যের নীরবতা। এমনকি পরিসংখ্যানও ভিনিসিয়ুকে সঙ্গ দিতে পারছে না।

আরও পড়ুন

কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচে ৭১ মিনিট মাঠে থেকে গোল কিংবা গোলে সহায়তা দূরে থাক, কোনো শটও নিতে পারেননি ভিনিসিয়ুস। যে ড্রিবলের জন্য পরিচিত, সেটি চারবার চেষ্টা করে প্রতিবার ব্যর্থ হয়েছেন। চারটি ক্রস দিয়ে কেবল একটিতে পেয়েছেন সফলতা। সাফল্যের হার মাত্র ২৫ শতাংশ। শুধু পাসটাই একটু ঠিকঠাক দিতে পেরেছেন। ২৩টি পাসের মধ্যে সফল হয়েছেন ১৯ বার। এমন পারফরম্যান্সের পর দরিভালকে দোষ দেওয়ার সুযোগ কোথায়?

এটা সত্য যে ভিনিসিয়ুসকে আটকানোর জন্য আলাদা পরিকল্পনা করেই মাঠে নেমেছিলেন কোস্টারিকার খেলোয়াড়েরা। তাঁকে রাখাও হয়েছিল কড়া মার্কিংয়ে। কিন্তু বিপরীত প্রস্তুতি ভিনিসিয়ুসের ছিল কি না, সে প্রশ্ন চাইলে কেউ তুলতেই পারেন। সেরা খেলোয়াড়দের কাজই তো সব ফাঁদ কেটে বেরিয়ে গিয়ে দলকে গোল এনে দেওয়া। যে কাজে ভিনিসিয়ুসকে পুরোপুরিই ব্যর্থ বলা যায়।

৭১ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের পরিবর্তে নামানো হয় এনদ্রিককে
এএফপি

অথচ দল যখন গোলের জন্য হাহাকার করছিল, তখন সবাই তাকিয়ে ছিল তাঁর দিকে। কোস্টারিকার বিপক্ষে এমন নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পর ভিনিসিয়ুস শুধুই ক্লাবের খেলোয়াড় কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন অনেক সমর্থক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে ট্রল করে অনেক মিমও বানানো হয়েছে।

ব্রাজিলের হয়ে ভিনিসিয়ুসের ম্লান পারফরম্যান্স অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০১৯ সালে অভিষেকের পর ভিনিসিয়ুস ৩১ ম্যাচে গোল করেছেন মাত্র ৩টি আর গোলে সহায়তা করেছেন ৫টি। ব্রাজিলের হয়ে ভিনিসিয়ুস প্রথম গোলটি করেন ২০২২ সালের মার্চে, চিলির বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে।

আরও পড়ুন

একই বছরের নভেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে করেন দ্বিতীয় গোলটি। এরপর গত বছরের জুনে তৃতীয় গোলটি করেন আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে গিনির বিপক্ষে। গোলের প্রসঙ্গ সরিয়ে রাখলেও এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের জার্সিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রভাবও ফেলতে পারেননি ভিনি।

অতীতের ব্যর্থতা ভুলতে এবারের কোপা আমেরিকাকে ভাবা হচ্ছে ভিনির নিজেকে প্রমাণের মঞ্চ। বিশেষ করে নেইমার না থাকায় প্রত্যাশার জোয়ালটা তাঁর কাঁধেই চাপানো। এই চ্যালেঞ্জের প্রথম পরীক্ষায় পুরোপুরি ব্যর্থ ভিনি। তবে সুযোগ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। উন্নতির কথা ভিনি নিজেও বলেছেন। কোস্টারিকা ম্যাচের পর তিনি বলেন, ‘আমি জানি কোথায় আমাকে উন্নতি ও বিকাশ লাভ করতে হবে। দলের জন্য আমি সেটি করব।’ ভিনি সেটি করতে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।
‘ডি’ গ্রুপে ব্রাজিলের পরের ম্যাচ ২৯ জুন, প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে।