সৌদি আরবের গরমে নাকাল হয়েছেন রোনালদোও
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সৌদি আরবে যাওয়া নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই সামনে এসেছিল প্রশ্নটি—সৌদি আরবের আবহাওয়ার সঙ্গে রোনালদো কীভাবে মানিয়ে নেবেন? ইউরোপিয়ান আবহাওয়ায় অভ্যস্ত রোনালদোর জন্য সৌদি আরবের উষ্ণ আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা মোটেই সহজ ছিল না।
এ গ্রীষ্মেই সৌদি আরবের তাপমাত্রা প্রায় সময় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। যে কারণে শুরুতে এমন বিরূপ পরিবেশের সঙ্গে মানিয়েও নেওয়াটা রোনালদোর জন্য মোটেই সহজ ছিল না। এবার প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কাজটা কতটা কঠিন ছিল, তা জানালেন রোনালদো নিজেই। বলেন, সৌদি আরবে গিয়ে যে পার্থক্যগুলো শুরুতে তাঁর কাছে ধরা পড়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল সেখানকার তাপমাত্রা।
বিশ্বকাপের পরের দলবদলে সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে যোগ দেন রোনালদো। পর্তুগিজ মহাতারকার দলবদলের ঘটনায় সৌদি ফুটবল যেন জেগে ওঠে। এর মধ্যে করিম বেনজেমার মতো ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকাও সৌদি আরবে যোগ দিয়েছেন। তবে ইউরোপিয়ান তারকাদের সৌদি আরবে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে যে দুটি বিষয় সামনে আসছে, তা হলো সাংস্কৃতিক বৈপরীত্য ও আবহাওয়ার সমস্যা।
এবার রোনালদোও আরব রাষ্ট্রটিতে মানিয়ে নেওয়া নিয়ে কথা বলেছেন।
নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে ‘সিআর সেভেন’ বলেন, ‘সৌদিতে সবচেয়ে বড় যে পার্থক্যটি অনুভব করেছি, তা হলো সেখানকার গরম এবং বিকেল বেলা আবহাওয়া শীতল হলে সে সময়ে অনুশীলনের জন্য মানিয়ে নেওয়া।’
শুরুতে কঠিন হলেও ধীরে ধীরে অবশ্য এই আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করেছেন রোনালদো। নিজের অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমি এই গরমের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করেছি। এখানকার সমর্থকেরা অবিশ্বাস্য। তারা আমাকে মন খুলে স্বাগত জানিয়েছে, যা আমাকে নিজের যাত্রাটা অব্যাহত রাখতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’ ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের তিনটিতেই খেলেছেন রোনালদো।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ইউরোপিয়ান ফুটবলে নিজের রাজত্ব শুরু করেন। এরপর স্প্যানিশ লিগের পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ছুঁয়েছেন সাফল্যের শিখর। শিরোপা জিতেছেন ইতালির ক্লাব জুভেন্টাসের হয়েও। ইউরোপে প্রতিটি লিগ ভিন্ন অভিজ্ঞতা উপহার দিয়েছে উল্লেখ করে রোনালদো আরও যোগ করেন, ‘প্রতিটি লিগ ভিন্ন। আমি খুব গর্বিত যে ইউরোপের তিনটি ভিন্ন লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে।’
রোনালদোর পদছাপ অনুসরণ করে এখন অন্য তারকারাও সৌদি আরবে আসতে শুরু করেছেন। বেনজেমার কথা তো আগেই বলা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, খুব শিগগির বেনজেমার ক্লাব আল ইত্তিহাদে দেখা যেতে পারে চেলসির ফরাসি মিডফিল্ডার এনগলো কান্তেকেও। সৌদি ক্লাব আল হিলালে আসার কথা ছিল লিওনেল মেসিরও। যদিও শেষ পর্যন্ত সৌদি আরব না এসে মেসি বেছে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিকে। এর আগে ইউরোপিয়ান তারকাদের সৌদিতে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন রোনালদো।
সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘তাদের মতো এমন সব বড় বড় তারকা থেকে তরুণ ও বয়স্করাও যদি এখানে আসে, তাহলে তাদের স্বাগত জানাই। কারণ, সেটা ঘটলে লিগের একটু হলেও উন্নতি হবে।’ রোনালদো সেই একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন এভাবে, ‘এটা আমাকে অবাক করেনি। তবে আমি খুব খুশি হব, যদি বিশ্বব্যাপী তারকারা সৌদি প্রো লিগে খেলতে আসে। আমি বিশ্বাস করি, এই লিগ উন্নতি করবে। ইউরোপের আরও অনেক খেলোয়াড় এখানে খেলতে আসবে।’