মেসির এমএলএস নাকি রোনালদোর প্রো লিগ, কোনটি বেশি শক্তিশালী

ইন্টার মায়ামির মেসি ও আল নাসরের রোনালদোএক্স

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গত বছর বেশ জোরের সঙ্গেই দাবি করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) চেয়ে সৌদি আরবের প্রো লিগ ভালো

রোনালদোর এই দাবির পক্ষে যুক্তিও কম নয়। বিশেষ করে নেইমার, করিম বেনজেমা, সাদিও মানে, রবার্তো ফিরমিনো, এনগালো কান্তেসহ ইউরোপীয় ফুটবলের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত তারকা মধ্যপ্রাচ্যের লিগটিতে যোগ দেওয়ায় এর মান অনেক ওপরে উঠেছিল বলে বিশ্বাস অনেকের।

তবে এর বিপরীত মত হচ্ছে সৌদি প্রো লিগে অনেক তারকা খেলোয়াড় যোগ দিলেও এটি এমএলএসের চেয়ে পিছিয়ে। এ ক্ষেত্রে যুক্তি এসেছে আগে থেকেই লিগটিতে ভালো মানের খেলোয়াড়েরা নিয়মিতভাবে খেলেছেন। লিওনেল মেসি ইন্টার মায়ামিতে নাম লেখানোর পর এমএলএসের ব্র্যান্ডিং ও বাণিজ্যিক দিক আরও শক্তিশালী হয়েছে। তা ছাড়া লিগটিতে তরুণ খেলোয়াড়দের আধিক্যের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও বেশি।

দুই পক্ষের যুক্তিই আমলে নেওয়ার মতো। তবে এমএলএস বনাম প্রো লিগ কোনটি বেশি শক্তিশালী, সেটি সঠিকভাবে নির্ণয়ের জন্য বিশদ ব্যাখ্যা ও গবেষণা দরকার।

মাঠের খেলায় দুই লিগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গভীর পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে ফুটবলের পরিসংখ্যানভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘অপ্টা’ গত বছর যে তথ্য দিয়েছিল, সেখানে এগিয়ে ছিল মেসির এমএলএসই। অপ্টার পাওয়ার রেটিং অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী লিগের তালিকায় এমএলএস ছিল ২৯ নম্বরে আর সৌদি প্রো লিগ ৩৬ নম্বরে।

এ বছরের গবেষণায় দুই লিগের ব্যবধান আরও বেড়েছে। ৭৮.২ পাওয়ার রেটিং নিয়ে মেসির এমএলএস এখন ৯ নম্বরে আর ৭৩.৬ পাওয়ার রেটিং নিয়ে রোনালদোর প্রো লিগ ৩৩ নম্বরে। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে এমএলএস শক্তিতে এগিয়েছে ২০ ধাপ, প্রো লিগ মাত্র ৩ ধাপ। বর্তমানে দুই লিগের মধ্যে শক্তির ব্যবধান ২৪ ধাপ।

কী কারণে এমএলএস সৌদি প্রো লিগের চেয়ে এগিয়ে, সেটির ব্যাখ্যা এসেছে ক্লাবগুলোর শক্তিমত্তা বিবেচনায়। উত্তর আমেরিকান অঞ্চলে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দুটি লিগ যুক্তরাষ্ট্রের এমএলএস আর মেক্সিকোর লিগা এমএক্স। অপ্টার গবেষণা বলছে, গত বছর দুই লিগ মিলিয়ে আয়োজিত লিগস কাপে লিগা এমএক্সের চেয়ে এমএলএসের ক্লাবগুলো ভালো করেছে।

লিগস কাপের গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেসির ইন্টার মায়ামি
এএফপি

মেসির ইন্টার মায়ামিই গতবার লিগস কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। রানার্স আপ ও তৃতীয়ও হয়েছে এমএলএসের ক্লাব ন্যাশভিল ও ফিলাফেলফিয়া ইউনিয়ন।

তবে ক্লাব র‍্যাঙ্কিংয়ে মেসির চেয়ে রোনালদোই এগিয়ে। রোনালদোর আল নাসর ৯২তম আর মেসির মায়ামি ৯৮ নম্বরে।

অপ্টা বিশ্বের ১৮৩টি দেশের ৪১৩টি ঘরোয়া লিগের ১৩ হাজারের বেশি ক্লাব নিয়ে গবেষণা করে পাওয়ার রেটিং করে থাকে। এর মাধ্যমে পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন মহাদেশের, দেশের এবং লিগের ক্লাবগুলোর মধ্যে তুলনা করা যায়। যেমন—ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশ ফিজির লিগের একটি ক্লাবের সঙ্গে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির শক্তির পার্থক্য কতটুকু, সেটা বলে দেয় এই পাওয়ার রেটিং।

তারকা খেলোয়াড়দের নিয়ে এসেও সৌদি প্রো লিগের মান খুব একটা বাড়েনি
এক্স

অনুমিতভাবে এবারও পাওয়ার রেটিংয়ে সবার ওপরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের বাকি চারটি আছে পরের চার অবস্থানে—দুইয়ে ইতালিয়ান সিরি ‘আ’, তিনে জার্মান বুন্দেসলিগা, চারে স্প্যানিশ লা লিগা এবং পাঁচে ফ্রেঞ্চ লিগ আঁ। তবে সিরি ‘আ’ ও বুন্দেসলিগার রেটিং পয়েন্ট সমান; ৮৬.২।  

আরও পড়ুন

ব্রাজিলের সিরি ‘আ’–এর অবস্থান ৬ নম্বরে। সবচেয়ে বড় চমক ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপ। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা হয়েও শীর্ষ দশে আছে এই লিগ। অপ্টা বলছে, চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও অননুমেয়তা আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। এই লিগের বেশির ভাগ ক্লাব পাওয়ার রেটিংয়ে নেদারল্যান্ডসের শীর্ষ লিগ এরেডিভিসিয়ের চেয়েও এগিয়ে।