ইউরো জিতলে মায়ের কাছে জন্মদিনের উপহার চাইবেন না ইয়ামাল

ইউরো ফাইনালের দুই দিন আগে ১৭ বছরে পা দিয়েছেন লামিনে ইয়ামালএএফপি

ছেলেটি গতকালই ১৭তম জন্মদিনের কেক কেটেছে। নিশ্চয়ই হরেক রকম উপহারও পেয়েছে। কিন্তু ছেলেটির মনে এখন ভর করেছে অন্য উপহার। সেটি পেতে হবে বার্লিনে অলিম্পিয়াস্তাদিওনে ইউরোর ফাইনালে। স্পেনকে জেতাতে হবে শিরোপা।

আজ সেটি পারলে এবারের জন্মদিন যে স্মরণীয় হবে, তা বলা বাহুল্য। আর শিরোপাটাই হবে তাঁর জন্মদিনের সবচেয়ে বড় উপহার। গা থেকে এখনো কৈশোরের গন্ধ না যাওয়া লামিনে ইয়ামাল তাই বলেছেন, ‘ফাইনাল জিতলে মায়ের কাছে কোনো উপহার চাইব না।’

উপহার এরই মধ্যে কম পাননি ইয়ামাল। সেগুলো অবশ্য বস্তুগত কিছু নয়। কিন্তু এমন সব প্রশংসাবাক্য, যা তাঁকে এরই মধ্যে ফুটবলের আগামীর মহাতারকা হয়ে ওঠার পথে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ডিয়েগো ম্যারাডোনা এবং লিওনেল মেসির পাঁড় ভক্ত ইংল্যান্ড কিংবদন্তি গ্যারি লিনেকারের কথা শুনুন, ‘লামিনে ইয়ামাল আমার মাথা ঘুরিয়ে দেয়। এই বয়সে এমন কিছু করা অবিশ্বাস্য। ১৬ বছর বয়সী এমন কাউকে আগে কখনো দেখিনি। ওয়েইন রুনিকে দেখেছি, সে বিশেষ হলেও এতটা ছিল না। পেলে বিশ্বকাপ ফাইনালে দুটি গোল করলেও বয়স ছিল ১৭। এমনকি মেসিও আন্তর্জাতিকে নিজেকে চিনিয়েছে কৈশোরের শেষভাগে গিয়ে। আমরা যা দেখছি, খুবই বিশেষ কিছু। কতটা বিশেষ, জানতে অপেক্ষা করতে হবে।’

ইউরো ফাইনালের আগে স্পেনের অনুশীলনে লামিনে ইয়ামাল
এএফপি

মেসির সঙ্গে তাঁর তুলনা উঠেছিল আগেই। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির মতোই বার্সেলোনার ফুটবল–খামার লা মাসিয়া থেকে তাঁর উঠে আসা, আর্জেন্টাইন মহাতারকার মতোই রেকর্ড ভাঙতে ভাঙতে এগিয়ে যাচ্ছেন আগামীর পথে। ইউরো সেমিফাইনালে ডাচদের বিপক্ষে ২৭ গজ দূর থেকে বাঁকানো শটে তাঁর সেই গোলের পর ভেঙে পড়ে ইন্টারনেটও। ৬ বছর বয়সী ইয়ামালকে মেসির গোসল করিয়ে দেওয়ার ছবি নিয়ে শুরু হলো আলোচনা। কেউ কেউ সেই ছবিকে ‘পরম্পরার হাতবদল’ বললেও ইয়ামালের পা মাটিতেই।

আরও পড়ুন

স্পেন উইঙ্গার জানিয়েছেন, মেসির সঙ্গে যেন তুলনা না ওঠে, সেই ভাবনা থেকেই ছবিটি এত দিন লুকিয়ে রেখেছিলেন তাঁর বাবা। কিন্তু প্রতিভা তো লুকানো যায় না। ইউরোর ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতাও পারেননি। ইয়ামাল এখন সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে ইউরো জয়ের দ্বারপ্রান্তে। সেটি জিতলেই ইয়ামাল কি মেসির মতো হয়ে যাবেন? ইয়ামালের কথা, ‘আমি লামিনেই হতে চাই। লোকে যেন আমার কারণে আমাকে চেনে।’

সবাই সেভাবেই তাঁকে চিনছে আসলে। কিলিয়ান এমবাপ্পে সেমিফাইনালের পর ফরাসি তারকা জার্সি চেয়ে নিয়েছেন ইয়ামালের কাছ থেকে। গ্রুপ পর্বে একই কাজ করেছেন ইতালি ফরোয়ার্ড ফেদেরিকো কিয়েসাও। এবার ইউরোয় সবারই যেন ইয়ামালের কাছে কিছু না কিছু চাই! কেউ জার্সি চাইছেন, কেউ আবার অনুশীলনের সময় তুলে নিচ্ছেন সেলফি। সবাই যেন বুঝে ফেলেছেন, বড় ফুটবলার হতেই ছেলেটির জন্ম। কত বড়?

লিনেকার তো বলেই দিয়েছেন, সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে।

আরও পড়ুন