রিয়াল মাদ্রিদ ১: ৩ এসি মিলান
লা লিগায় ‘এল ক্লাসিকো’য় বার্সেলোনার কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ব্যালন ডি’অর–বিপর্যয়। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য রিয়াল মাদ্রিদের প্রয়োজন ছিল দুর্দান্ত একটি জয়। আজ ঘরের মাঠ সান্তিায়াগো বার্নাব্যুতে এসি মিলানের বিপক্ষে তেমন একটি জয়ের খোঁজেই মাঠে নেমেছিল রিয়াল। কিন্তু খারাপ সময়কে মোটেই জবাব দিতে পারেনি মাদ্রিদের ক্লাবটি। উল্টো মিলানের কাছে ৩–১ গোলে হেরেছে তারা। ঘরের মাঠে রিয়ালের টানা দুই হার, অবিশ্বাস্যই বটে!
চলতি মৌসুমে এটি রিয়ালের তৃতীয় হার। অথচ গত মৌসুমে সব মিলিয়ে মাত্র দুই ম্যাচ হেরেছিল ক্লাবটি। এদিন ম্যাচের শুরুতেই ভ্যালেন্সিয়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশে শোক প্রকাশ করা হয়। আর খেলা শুরু হতেই আক্রমণকে পাখির চোখ করে রিয়াল।
ম্যাচের শুরুতেই পরপর দুটি সুযোগও তৈরি করে রিয়াল। যদিও অল্পের জন্য গোল দুটি মিস করেন এমবাপ্পে। রিয়ালের আক্রমণের বিপরীতে মিলানকে এ সময় প্রতি–আক্রমণের ওপরই বেশি নির্ভর করতে হচ্ছিল। যদিও শুরুতে সে সুযোগও খুব বেশি মিলছিল না।
এরপরও অবশ্য স্রোতের বিপরীতে ম্যাচের প্রথম গোলটা মিলানই করেছে। ১২ মিনিটের মাথায় মাদ্রিদকে স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় মিলান। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলকে হেডে জালে জড়িয়ে অতিথিদের এগিয়ে দেন মালিক থিয়াও। পরের মিনিটে অবশ্য দারুণ এক আক্রমণ থেকে সমতা ফেরানোর সুযোগ এসেছিল রিয়ালের সামনে। তবে পরপর দুটি সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুস।
আক্রমণের ধারায় ম্যাচের একটু পর পেনাল্টি আদায় করে নেন ভিনিসিয়ুস। স্পট কিকে ম্যাচের ২৩ মিনিটে পানেনকা শটে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান ভিনিসিয়ুস। সমতায় ফিরে রিয়াল চেষ্টা করছিল এগিয়ে যাওয়ার। তবে মিলানের দৃঢ়তায় খুব বেশি সুবিধা করতে পারছিল না তারা। এর মধ্যে প্রথম গোল পাওয়ার পর আত্মবিশ্বাসও দারুণভাবে বেড়ে যায় মিলানের। যার ফলে রিয়াল না পারলেও ৩৮ মিনিটে মাদ্রিদকে ফের হতাশায় ভাসিয়ে এগিয়ে যায় মিলান।
রিয়ালের ভুলেই আক্রমণটি গড়েছিল ইতালিয়ান ক্লাবটি। শুরুতে অবশ্য রাফায়েল লিয়াওয়ের শট ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিন। তবে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ঠিকই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন আলভারো মোরাতা। ৪৩ মিনিটে বল পেয়ে দারুণ গতিতে মিলানের বক্সের ঢুকে শট নেন এমবাপ্পে। তবে মিলান গোলরক্ষক মাইক মানিয়াঁর দৃঢ়তায় সমতায় ফেরা হয়নি রিয়ালের। পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যেতে হয় রিয়ালকে।
বিরতির পর দুটি পরিবর্তন আনে রিয়াল। অরেলিয়েঁ চুয়ামেনির জায়গায় আসেন ব্রাহিম দিয়াজ এবং ফেদে ভালভের্দের জায়গায় আসেন এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। দুই পরিবর্তন নিয়ে শুরু থেকেই গোলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে রিয়াল। দ্রুত সুযোগও তৈরি করে। তবে তা গোলের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
অন্যদিকে একের পর এক প্রতি–আক্রমণে রিয়ালকে কাঁপিয়ে দিতে থাকে মিলান। একাধিকবার গোলের খুব কাছে গিয়েও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি তারা। তবে ম্যাচ যতই এগোচ্ছিল হতাশা বাড়ছিল রিয়ালের। এমবাপ্পে–ভিনিসিয়ুসদের একের পর এক প্রচেষ্টাও দেখছিল না আলোর মুখ।
রিয়ালের প্রচেষ্টা আলোর মুখ না দেখলেও ভুল হয়নি মিলানের। দারুণ এক আক্রমণে রিয়াল রক্ষণের দুর্বলতাকে উন্মোচিত করে তিজানি রেইনডার্স আরেকবার এগিয়ে দেন মিলানকে। ৩–১ গোলে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল তখন রীতিমতো হতভম্ব। যে বিস্ময় শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও আর কাটাতে পারেনি তারা। এর মধ্যে আন্তোনিও রুদিগারের গোল করলেও সেটি বাতিল হয় অফ সাইডের কারণে। এরপর ম্যাচে আর কোনো গোল না হলে টানা দ্বিতীয় হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে কার্লো আনচেলত্তির দল।