বায়ার্ন মিউনিখ ৩ : ০ পিএসজি (দুই লেগ মিলিয়ে)
গোলশূন্য ড্র হলেই চলতো বায়ার্ন মিউনিখের, কিন্তু পিএসজির দরকার ছিল একাধিক গোল। লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পেরা গোল করবেন কি, উল্টো হজম করেছেন।
প্যারিসের প্রথম লেগের পর আজ মিউনিখের দ্বিতীয় লেগে ২-০ ব্যবধানে হেরেছে পিএসজি। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ ব্যবধানে জিতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে বায়ার্ন মিউনিখ।
এ নিয়ে টানা দুই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিল পিএসজি।
চার সপ্তাহ আগে পার্ক দ্য প্রিন্সেসে অনুষ্ঠিত প্রথম লেগে বায়ার্নকে গোল এনে দিয়েছিলেন পিএসজির সাবেক খেলোয়াড় কিংসলি কোম্যান। এবার অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় দ্বিতীয় লেগেও বায়ার্নের নায়ক পিএসজির আরেক সাবেক-এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোতিং। শেষ দিকে আরেকটি গোল করেন সার্জ জিনাব্রি।
বায়ার্ন জানত, ম্যাচটা গোলশূন্য ড্র করলেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত। তবে এক গোলের ব্যবধান বড় কিছু নয় বলে ম্যাচের শুরু থেকে চাপিয়ে খেলার দিকে মনোযোগ দেয় জার্মান ক্লাবটি।
তবে গোলের সবচেয়ে ভালো সম্ভাবনা প্রথম তৈরি করে পিএসজি। ২৪তম মিনিটে নুনো মেন্ডেসের বাড়ানো বল বায়ার্নের ছোট ডি বক্সে পেয়ে গিয়েছিলেন মেসি। তবে আর্জেন্টাইন তারকার খুব কাছ থেকে নেওয়া প্রথম শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। দ্বিতীয়বার শট নিলে বাধা হয়ে দাঁড়ান বায়ার্ন গোলরক্ষক ইয়ান সোমার। ততক্ষণে চারপাশে জটলা হয়ে গেলে মেসির তৃতীয় চেষ্টাও কাজে লাগেনি। হাত দিয়ে চেপে বল নিয়ন্ত্রণে নেন বায়ার্ন গোলরক্ষক।
৩১তম মিনিটে জামাল মুসিয়ালার বাঁ দিক থেকে নেওয়া শট দারুণ প্রচেষ্টায় রুখে দেন জিয়ানলুইজি ধনারুম্মা।
৩৭তম মিনিটে বায়ার্নকে বাঁচিয়ে দেন ম্যাথিয়াস ডি লিট। বায়ার্ন গোলরক্ষকের ভুলে বল পেয়ে যান ভিতিনিয়া। গোলপোস্ট ছিল ফাঁকা। বিপদ বুঝতে পেরে দ্রুতই গোলমুখে ছুটে যান ডি লিট। ভিতিনিয়ার শট গোললাইন স্পর্শ করার আগমুহূর্তে পা দিয়ে প্রতিহত করে দেন এই ডাচ সেন্টার ব্যাক। দুই দল বিরতিতে যায় গোলশূন্য স্কোরলাইন নিয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম ভালো সুযোগটি তৈরি করে বায়ার্ন মিউনিখ। মুসিয়ালার শট অবশ্য গোলমুখে যাওয়ার আগে প্রতিহত হয়। ফিরতি বলে জশুয়া কিমিচের প্রচেষ্টা চুপো-মোতিং অফসাইডে থাকায় নষ্ট হয়। এর পরের মিনিটে বল জালেও জড়িয়ে দেন ক্যামেরুনিয়ান স্ট্রাইকার। তবে অফসাইডে সেটি বাতিল হয়ে যায়।
আক্রমণের এই ধারা ধরে রেখে ৬১তম মিনিটে ঠিকই গোল পেয়ে যান চুপো-মোতিং। পিএসজি রক্ষণে ভেরাত্তি থেকেে বল কেড়ে নিয়ে গোয়েৎকাকে বাড়ান টমাস মুলার। গোয়েৎকা দেন ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা চুপো-মোতিংকে। দেখেশুনে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠাতে সমস্যা হয়নি ২০২০ সালে পিএসজি থেকে বায়ার্নে যোগ দেওয়া এই স্ট্রাইকারের।
প্রথম লেগের মতো দ্বিতীয় লেগেও এক গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর অতি আক্রমণমুখী হওয়া ছাড়া বিকল্প ছিল না পিএসজির। আর সেটি করতে গিয়ে রক্ষণ-দেয়াল শিথিল হয়ে পড়ে। গোছালো আক্রমণ তো গড়ে ওঠেইনি, ৮৯তম মিনিটে সার্জ জিনাব্রি আরেকটি গোল করে পিএসজির হার নিশ্চিত করে দেন।
প্রথমার্ধে বায়ার্ন রক্ষণে একাধিকবার হুমকি তৈরি করা এমবাপ্পে ও মেসি এই অর্ধে গোলের সম্ভাবনাই তৈরি করতে পারেনি। যে দুটি সম্ভাবনা জেগেছিল, সেটি সের্হিও রামোসের হেড থেকে। একটি বায়ার্ন গোলরক্ষক রুখে দেন, আরেকটি অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
দিন শেষে লক্ষ্যভ্রষ্ট আসলে পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ-স্বপ্নই। গতবারের মতো এবারও বিদায় শেষ ষোলো থেকেই।
বায়ার্নের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার রাতে শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে এসি মিলানও।
শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে টটেনহামের মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছে ইতালিয়ান ক্লাবটি। দুই দলের প্রথম লেগে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় ওই ব্যবধানেই কোয়ার্টারে জায়গা করে নিয়েছে এসি মিলান।