দেখতে দেখতে পিএসজিতে একটা বছর কাটিয়ে দিলেন লিওনেল মেসি। বার্সেলোনা ধরে রাখতে না পারায় গত বছরের আগস্টে অনেকটা বাধ্য হয়েই পিএসজিতে যোগ দিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন তারকা। চোখের জলে বিদায় জানিয়েছিলেন প্রাণের ক্লাব বার্সেলোনাকে। প্রথম মৌসুমে পিএসজির হয়ে সময়টা যে খুব ভালো কেটেছে, এ কথা বলা যাবে না। অন্তত মেসির মানদণ্ডে তো নয়ই। সেভাবে গোল পাননি। মেসির ছোটখাটো ব্যর্থতা–ও চোখ এড়িয়ে যেত, যদি দল হিসেবে পিএসজির ফল ভালো হতো। কিন্তু পেট্রো ডলারসমৃদ্ধ এই ক্লাব এক ফরাসি লিগ ছাড়া আর কিছুই জেতেনি। চ্যাম্পিয়নস লিগে আরও একবার স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হয়েছে তাদের।
পিএসজিতে মেসির প্রথম মৌসুমে কোচ ছিলেন মরিসিও পচেত্তিনো। দলের ব্যর্থতায় তাঁর চাকরি গেছে। নতুন কোচ হিসেবে প্যারিসে এসেছেন ক্রিস্তোফ গালতিয়ের। দারুণ একটা দলই পাচ্ছেন, যেকোনো কোচের জন্যই স্বপ্নের—মেসি, নেইমার, এমবাপ্পে একসঙ্গে খেলবেন। কোনো কোচই এর চেয়ে দারুণ কোনো কিছু প্রত্যাশা করতে পারেন না।
পিএসজিতে এসেই গালতিয়েরের একটা জিনিস খুব ভালো লাগছে। সেটি হচ্ছে ফুটবলের প্রতি মেসির ভালোবাসা। ব্যক্তি মেসিকেও আলাদাভাবেই মনে ধরেছে গালতিয়েরের, ‘সে যে কত ভালো, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। বিস্ময়কর তাঁর ব্যক্তিগত আচরণ। সে ভালো খেলোয়াড়, এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। আপনার যখন অনেক ভালো ভালো রেকর্ড থাকবে, এতগুলো ম্যাচ খেলবেন, ভালো সব ট্রফি জিতবেন, তখন আপনি যে একজন দারুণ খেলোয়াড়, সেটি বলতেই হবে।’
গেল মৌসুমে নিজের মতো করে খেলতে না পারার বেদনাটা যে মেসিকে ভেতরে ভেতরে কতটা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে, সেটি বোঝা গেছে, ছুটি অসমাপ্ত রেখে দ্রুত প্যারিসে ফিরে দলের অনুশীলনে যোগ দেওয়ায়। এটাকে বড় উদাহরণ হিসেবেই দেখছেন গালতিয়ের, ‘অনুশীলন নিয়ে কোনো কথা হবে না। মেসি অনেক অনুশীলন করে। সে অনুশীলন করতে করতে গভীরে চলে যায়। আবার অনুশীলনে হালকা মেজাজে সে সতীর্থদের সঙ্গে হাসাহাসি করে, গল্প করে। দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের জন্যই মেসি দারুণ এক অনুপ্রেরণা। সে উদাহরণ তৈরি করে। আমি তাঁকে “হ্যালো” বলাটাও উপভোগ করি।’
মেসিকে পিএসজির সবাই ভালোবাসে বলে মনে করেন কোচ, ‘আমি তো মনে করি পিএসজির সবাই মেসিকে খুব ভালোবাসে। তাঁর বন্ধুরা সবাই তাঁর প্রশংসা করে—এটা বিরাট এক গুণ।’ মেসি সব জিতলেও এখন বিশ্বকাপটা জিততে হবে বলে মনে করেন পিএসজির কোচ, ‘মেসি সম্ভব-অসম্ভব সব জিতেছে। ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ সাফল্য পেয়েছে, ব্যক্তিগত শিরোপাও জিতেছে। এখন বিশ্বকাপটা জিতলেই কেল্লাফতে।’