নেইমার মেসি-সুয়ারেজের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আশায়, ২০২৬ বিশ্বকাপই তাঁর শেষ
লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও নেইমার—এই ‘ত্রিফলা’ আক্রমণভাগকে কি আবারও দেখা যেতে পারে মাঠে?
মেসি ও সুয়ারেজ একসঙ্গেই খেলছেন। ইন্টার মায়ামির আক্রমণভাগে জুটি বেঁধেছেন দুজন। বাদ রয়েছেন শুধু নেইমার। সৌদি আরব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দিয়ে তাঁর কি সাবেক দুই ক্লাব সতীর্থের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা আছে? উত্তরটা শুনুন নেইমারের মুখেই, ‘কে জানে! ফুটবল তো বিস্ময়ে ভরপুর।’
সম্প্রতি গ্লোব সকার অ্যাওয়ার্ডে প্লেয়ার ক্যারিয়ার অ্যাওয়ার্ড জেতেন নেইমার। তারপর সিএনএন স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন এ কথা। তবে ‘এমএসএন’ নামের সেই ত্রিফলা আক্রমণ ফিরিয়ে আনা নিয়ে নেইমার শুরুতে যা বলেছেন, সেসব শুনলে মেসি, সুয়ারেজ ও ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের সমর্থকেরা আশাবাদী হয়ে উঠতেই পারেন।
এমএসএন—নামটি শুনলেই ফুটবলপ্রেমীদের ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বার্সেলোনার তিনটি মৌসুম মনে পড়বেই। সে সময় বার্সায় বিশ্বের অন্যতম সেরা আক্রমণভাগ গড়েছিলেন মেসি, নেইমার ও সুয়ারেজ। বার্সাকে ২০১৪-১৫ মৌসুমে ‘ট্রেবল’ জেতানোর পাশাপাশি এই ত্রিফলা আক্রমণভাগের কাছ থেকে ৩৬৪ গোল এবং ১৭৩টি গোলে সহায়তা দেখেছে ফুটবলবিশ্ব। ২০১৭ সালে নেইমার দলবদলের বিশ্ব রেকর্ড গড়ে পিএসজিতে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে এমএসএন আক্রমণভাগের অবসান ঘটে বার্সায়।
সুয়ারেজ বার্সা ছাড়েন ২০২০ সালে। মেসি ছাড়েন পরের বছর। সময়ের পরিক্রমায় গত বছর আবারও ইন্টার মায়ামিতে এক হয়েছেন মেসি-সুয়ারেজ। যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটিতে মেসি যোগ দেন ২০২৩ সালে। সে বছরই ২২ ডিসেম্বর মায়ামি জানায়, ২০২৪ সালের মৌসুম থেকে মায়ামির খেলবেন উরুগুয়ে তারকা সুয়ারেজ।
নেইমার পিএসজি ঘুরে ২০২৩ সালে যোগ দেন সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে। মায়ামিতে মেসি-সুয়ারেজের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে নেইমার বলেন, ‘অবশ্যই, মেসি ও সুয়ারেজের সঙ্গে আবারও খেলতে পারাটা হবে অবিশ্বাস্য। ওরা আমার বন্ধু। এখনো আমাদের মাঝে কথা হয়। ত্রয়ী (আক্রমণভাগ) পুনর্জীবিত করাটা হবে আকর্ষণীয় ব্যাপার। আল হিলালে আমি সুখেই আছি। সৌদি আরবে ভালোই কাটছে। কিন্তু কে জানে, ফুটবল তো বিস্ময়ে ভরপুর।’
৩২ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড এরপর বলেন, ‘আমার পিএসজি ছাড়ার খবর বের হওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রে দলবদলের সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই আমার (ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার) সেই সুযোগটা ছিল না। যে পরিকল্পনার (সৌদি আরবে) কথা তারা আমাকে জানিয়েছিল, সেটা খুব ভালো। শুধু আমার নয়, আমার পরিবারের জন্যও। তাই সৌদি আরবে যাওয়াই ছিল আমার কাছে সেরা সুযোগ।’
মায়ামিতে সম্প্রতি এক বছরের চুক্তি নবায়ন করেছেন সুয়ারেজ। আল হিলালে নেইমারের চুক্তির বর্তমান মেয়াদ এ বছর পর্যন্ত। অর্থাৎ ২০২৬ সালে এই তিন তারকার একসঙ্গে খেলার সুযোগ থাকছে। আর সে বছরই যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় শুরু হবে বিশ্বকাপ ফুটবল। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে খেলেও ব্রাজিলকে শিরোপা জেতাতে পারেননি নেইমার। তাঁর বয়স বলছে, ২০২৬ বিশ্বকাপই হতে পারে ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। নেইমার নিজেও মানছেন সে কথা, ‘আমি চেষ্টা করব সেখানে (২০২৬ বিশ্বকাপ) থাকার। আমি জানি, এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ। আমার শেষ সুযোগ। সেখানে খেলার জন্য আমি সব রকম চেষ্টাই করব।’
ব্রাজিলের হয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ খেলেছেন নেইমার। এরপর দীর্ঘদিনের জন্য চোটে পড়েন। গত বছর অক্টোবরে আল হিলালের হয়ে মাঠে ফিরে আবারও চোটে পড়েন। সৌদি প্রো লিগের চলতি মৌসুমের প্রথম অংশে খেলতে পারেননি। এখন আবারও ক্লাব ও জাতীয় দলে ফেরার লড়াইয়ে নেমেছেন নেইমার।