২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

খেলোয়াড়দের হত্যার হুমকি, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে ইন্দোনেশিয়ায় যাবে না বাহরাইন

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাহরাইন–ইন্দোনেশিয়া বিতর্কিত সেই ম্যাচ শেষের দৃশ্য এটারয়টার্স

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে ইন্দোনেশিয়ায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাহরাইন। ইন্দোনেশিয়ার সমর্থকেরা বাহরাইনের খেলোয়াড়দের হত্যার হুমকি দেওয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাহরাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএ)। বিএফএ ফিফাকে অনুরোধ করেছে, ম্যাচটি অন্য কোথাও সরিয়ে নিতে। আগামী মার্চে হওয়ার কথা ম্যাচটি। ফিফা ও ইন্দোনেশিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি।

১০ অক্টোবর বাহরাইনে এশিয়া অঞ্চলের বাছাইপর্বে মুখোমুখি হয়েছিল বাহরাইন ও ইন্দোনেশিয়া। ২-২ গোলে ড্র হওয়া সেই ম্যাচে নির্ধারিত যোগ করা সময়েরও পরে দেওয়া গোলে ১ পয়েন্ট পেয়েছিল বাহরাইন। বিতর্ক শুরু হয় ওই গোল নিয়েই।

৯০ মিনিট খেলা শেষে আরও ৬ মিনিট সময় যোগ করা হয়েছিল সেই ম্যাচে। কিন্তু বাহরাইন সমতাসূচক গোলটি করে ৯০+৯ মিনিটে। গোল খাওয়ার পর মাঠেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইন্দোনেশিয়ান খেলোয়াড় ও স্টাফরা। ইন্দোনেশিয়া ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অভিযোগ করে, ওমানি রেফারি আহমেদ আল কাফ বাহরাইন গোল না পাওয়া পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। রেফারি পক্ষপাতিত্ব করেছেন বলে সরাসরি অভিযোগ করেছিলেন ইন্দোনেশিয়ার কোচ।

ফুটবলের আইনে অবশ্য বলা আছে, ইলেকট্রনিক বোর্ডে দেখানো যোগ করা সময়টা হলো ন্যূনতম সময়। দরকার হলে ওই সময়ের সঙ্গে আরও সময় যোগ করার ক্ষমতা আছে রেফারির।

ইন্দোনেশিয়া ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য আরিয়া সিনুলিঙ্গা ম্যাচের পরে রেফারিং নিয়ে বলেন, ‘রেফারিং নিয়ে আমরা খুবই হতাশ। মনে হয়েছে বাহরাইনের গোলের জন্যই টেনে লম্বা করা হয়েছে সময়।’

ওই ম্যাচের পর ইন্দোনেশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন ফিফা ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করে।

ঘটনা সেখানে থামেনি। ম্যাচের পর ইন্দোনেশিয়ার সমর্থকেরা এএফসি ও বাহরাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে সমালোচনা, গালাগাল করার সঙ্গে বাহরাইনের খেলোয়াড়দের হত্যার হুমকি দেয়। রেফারি আহমেদ আল কাফের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্টও খোলা হয়। বিএফএ বাধ্য হয়ে পেজগুলোর কমেন্ট সেকশন বন্ধ করে দেয়। বিএফএর ওয়েবসাইটও ইন্দোনেশিয়ার হ্যাকারদের লক্ষ্যবস্তু হয়।

বাহরাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এরপর ইনস্টাগ্রামে বিবৃতি দিয়ে খেলোয়াড়ের হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা জানায়, ‘দলের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হত্যার হুমকি পেয়েছেন। আমরা এতে হতবাক হয়ে পড়েছি। এসব ঘটনায় প্রমাণিত হয় যে ইন্দোনেশিয়ার মানুষের কাছে জীবনের কোনো মূল্যে নেই। এতে যেমন মূল্যবোধ ও ইসলামি শিক্ষার অভাব ফুটে ওঠে, তেমনি দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির সঠিক চিত্রও তুলে ধরে না।’

এ কারণে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বিএফএ জাকার্তা থেকে ম্যাচটিকে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেছে। ফিফা যদি শেষ পর্যন্ত ভেন্যু পরিবর্তন না করে এবং বাহরাইন ম্যাচটি না খেলে, তাহলে নিয়ম অনুসারে ৩-০ গোলে জয়ী ঘোষণা করা হবে ইন্দোনেশিয়াকে।

ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলে দর্শক হাঙ্গামার ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন ক্লাবের সমর্থকগোষ্ঠীর মধ্যে সহিংসতা সেখানে নিয়মিত ঘটনা। দুই বছর আগে তেমনই এক ঘটনার সময় হুড়াহুড়িতে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান ১২৫ জন।