বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের মাঠে প্রথম লেগটা পিএসজি হেরেছিল ১-০ গোলে। প্যারিসে আজ চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে সেই গোল শোধ করা তো হলোই না, উল্টো আরও একটা গোল খেয়ে বসল পিএসজি। নিজেদের মাঠেও তাই হারতে হলো ১-০ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে ২-০ ব্যবধানে জিতে ১১ বছর পর আবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে জায়গা করে নিল ডর্টমুন্ড।
২০১২-১৩ মৌসুমের সেই ফাইনালে ডর্টমুন্ড ২-১ গোলে হেরেছিল স্বদেশি ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের কাছে। সেই ফাইনাল ছিল লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে।
এবারও ফাইনাল ওয়েম্বলিতেই, আগামী ১ জুন। এবারও ফাইনাল হতে পারে দুই জার্মান ক্লাবের। অন্য সেমিফাইনালে যে প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ-রিয়াল মাদ্রিদ! মিউনিখে ২-২ সমতার পর বুধবার বার্নাব্যুতে বায়ার্ন রিয়ালকে হারিয়ে দিলেই হবে ২০১২-১৩ মৌসুমের ফাইনালের পূনরাবৃত্তি।
গত সপ্তাহে সিগনাল ইদুনা পার্কে ডর্টমুন্ডের জয়ের নায়ক ছিলেন জার্মান স্ট্রাইকার নিকলাস ফুলক্রুগ। আজ পার্ক দে প্রিন্সেসে ডর্টমুন্ডকে আরেকটি জয় এনে দিয়েছেন সেন্টার ব্যাক ম্যাটস হুমেলস। ৫০ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটি তাঁর। দুর্দান্ত খেলেছেন অন্য সেন্টার ব্যাক নিকো স্ক্লোটারব্যাকও।
অথচ ম্যাচে গোলের সুযোগ কম পায়নি পিএসজি। কিন্তু ভাগ্য বোধহয় আজ লুইস এনরিকের দলের সঙ্গে ছিল না। দুই অর্ধ মিলিয়ে মোট চারবার পোস্ট ও ক্রসবারে লেগেছে পিএসজির শট।
পিএসজির সবচেয়ে বড় আশা ছিল যাকে নিয়ে, সেই কিলিয়ান এমবাপ্পেও জাদুকরী কিছু করতে পারেননি। ৮১ মিনিটে কাছ থেকে নেওয়া তাঁর একটি শট ঠেকাতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেলের। ৮৭ মিনিটে তাঁর আরেকটি শট কোবেলের হাত ছুঁয়ে লাগে ক্রসবারে। এ ছাড়া বাকিটা সময় এমবাপ্পেকে খুব একটা বিপজ্জনক মনে হতেই দেননি ডর্টমুন্ড ডিফেন্ডাররা।
এই মৌসুম শেষেই পিএসজি ছেড়ে যাচ্ছেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড। নিজের শহরের প্রিয় ক্লাবের হয়ে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় এটাই তাই আপাতত তাঁর শেষ ম্যাচ। হতাশাতেই শেষ হলো পিএসজির হয়ে এমবাপ্পের ইউরোপিয়ান-অধ্যায়।
পিএসজির জন্যও চ্যাম্পিয়নস লিগ এক আক্ষেপের নাম হয়ে রইল। লিগ আঁ-র রেকর্ড ১২বারের চ্যাম্পিয়নরা এ নিয়ে তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিল, একবার হেরেছে ফাইনালেও (২০১৯-২০ মৌসুমে)।
প্যারিসে পিএসজির এই হতাশার রাতটা ডর্টমুন্ডের জন্য এসেছে বিশাল এক আনন্দের উপলক্ষ হয়ে। ম্যাচ শেষেই পার্ক দে প্রিন্সেসে অতিথি হয়ে যাওয়া অল্প কিছু ডর্টমুন্ড সমর্থকদের সঙ্গে সেই আনন্দ উদযাপন করেছেন হামেলসরা। বিশেষ করে ডর্টমুন্ড কোচ এদিন তেরজিচের জন্য তো এ এক ভীষণ আবেগের মুহূর্ত। ছোটবেলা থেকেই যে ক্লাবের সমর্থক হিসেবে বেড়ে উঠেছেন, সেই ক্লাবের কোচ হয়ে তাদের ১১ বছর নিয়ে গেলেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে। ক’জনের জীবনে স্বপ্ন এভাবে সত্যি হয়!