গালাতাসারাই ৩ : ৩ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
১১তম মিনিটে আলেহান্দ্রো গারনাচো যখন দারুণ এক কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ালেন, তখনই চুপ হয়ে গেল এতক্ষণ উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটতে থাকা আলী সামি ইয়েন স্টেডিয়ামের গ্যালারি। স্তব্ধ হয়ে যাওয়া সেই গ্যালারির সামনে গোল উদ্যাপন করতে গিয়ে দর্শকদের চুপ হয়ে থাকতে ইশারা করলেন গারনাচোও।
কিন্তু তুরস্কের গালাতাসারাই গ্যালারিকে শেষ পর্যন্ত চুপ করে রাখতে পারেনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। একবার ২-০, আরেকবার ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার পরও গোলকিপার আন্দ্রে ওনানার ভুলে শেষ পর্যন্ত ৩-৩ গোলের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইংলিশ ক্লাবটিকে।
গালাতাসারাইয়ের মাঠের এই ড্র ম্যানইউকে ঠেলে দিয়েছে খাদের কিনারে। গ্রুপ পর্বে আরও একটি ম্যাচ বাকি থাকলেও দলটির নকআউটে ওঠার নিয়ন্ত্রণ আর পুরোপুরি নিজেদের হাতে নেই।
৫ ম্যাচ খেলে ইউনাইটেডের পয়েন্ট ৪, গালাতাসারাইয়ের ৫। আগেই গ্রুপসেরা নিশ্চিত করে পরের পর্বে উঠে গেছে বায়ার্ন মিউনিখ।
দুইবার এগিয়ে থাকার পরও ইউনাইটেড জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে না পারার পেছনে ওনানার ভুলের দায় যেমন আছে, আছে হাকিম জিয়েশের দারুণ নৈপূণ্যও। চেলসি থেকে ধারে গালাতাসারাইয়ে আসা এই মরক্কোন উইঙ্গার জ্বলে ওঠার আগে ইউনাইটেড এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। ১১তম মিনিটে প্রথম গোলটি আসে গারনাচোর মাধ্যমে। এই গোলে যিনি সহায়তা করেন, সেই ব্রুনো ফার্নান্দেজ নিজে গোল দেন ১৮তম মিনিটে।
২০ মিনিটের মধ্যে দুই গোলে এগিয়ে যাওয়া ইউনাইটেডকে খুব বেশি সময় স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি গালাতাসারাই। ২৮ মিনিটে প্রায় পঁচিশ গজ দূর থেকে দারুণ বুদ্ধিমত্তার এক ফ্রি কিকে ইউনাইটেডের জালে বল জড়ান হাকিম জিয়েশ। ওনানা আরেকটু তৎপর থাকলে যা হয়তো রুখেও দিতে পারতেন। তবে গত কয়েক সপ্তাহে ছন্দে ফেরা এই ক্যামেরুনিয়ান গোলকিপার আসল ভুলটা করেন দ্বিতীয়ার্ধে, ৬২তম মিনিটে। তার আগে ৫৫তম মিনিটে ম্যাকটোমিনাইয়ের গোলে স্কোরলাইন ৩-১ বানিয়ে রেখেছে ইউনাইটেড।
ঘণ্টার কাঁটা পার হওয়ার কিছুক্ষণ পর অনেকটা প্রথমার্ধের মতো জায়গাতেই ফ্রি কিক পায় গালাতাসারাই। এবারও জিয়েশ নেন প্রায় একই শট। বল নাগালেই ছিল ওনানার। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে উল্টো নিজের জালেই পাঠিয়ে দেন তিনি।
ব্যবধান কমিয়ে আনার পর উজ্জ্বীবিত গালাতাসারাই আক্রমণে ধার বাড়ায়। আর সেই ধারাতে ৭১ মিনিটে নিয়ে আসে ৩-৩ সমতাও। ডান দিক থেকে জিয়েশের বাড়ানো বল দারুণ দক্ষতায় দ্রুত নাগালে নিয়েই ডান পায়ের জোরালো শটে বল জালে পাঠান আকতারকোগলু। এই গোলে ওনানার স্তম্ভিত হয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।
শেষ দিকে ইউনাইটেডও অবশ্য কয়েকটি ভালো আক্রমণ করে। এর মধ্যে ৮৪তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। কিন্তু বল পোস্টে লেগে প্রতিহত হওয়ায় হতাশ হতে হয় তাঁর দলকে।