দুবার আর্জেন্টিনার জার্সি ছাড়তে চেয়েছিলেন দি মারিয়া
আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের পাস পেয়ে বাঁ দিক দিয়ে ছুটে আসা আনহেল দি মারিয়া যখন ফ্রান্সের জালে গোল করলেন, সে মুহূর্ত নিঃসন্দেহে তাঁর জন্য অনির্বচনীয় অনুভূতির। সারা বিশ্ব দি মারিয়ার সেই অনুভূতির সাক্ষী। গত ১৮ ডিসেম্বর কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলটি করে উদ্যাপনের সময়ই কেঁদে ফেলেছিলেন আর্জেন্টিনার জুভেন্টাস তারকা।
আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন দি মারিয়া। ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালে চোটের কারণে খেলতে পারেননি। ডাগআউটে বসে দেখেছেন দলের হার। ২০১৮ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে ফ্রান্সের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক গোল করলেও আর্জেন্টিনা হেরেছিল ৪-৩ ব্যবধানে। দি মারিয়া এমন অনেক খারাপ সময় পেরিয়ে অবশেষে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেলেন। তাঁর ক্যারিয়ারে অন্তত দুবার এমন সময় এসেছিল যখন মনে হয়েছিল, আর্জেন্টিনার জার্সিতে অনেক হয়েছে, এবার থামা যাক।
দি মারিয়া বিশ্বকাপ জিতেছেন এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। উৎসব সেরে ‘কাজে’ ফিরেছেন আবার। জুভেন্টাসের হয়ে মাঠে নেমে গোলও পেয়েছেন আতালান্তার বিপক্ষে। তবে তাঁর দল সিরি ‘আ’তে নাপোলির কাছে হেরেছে ৫-১ গোল ব্যবধানে। বিশ্বকাপের পর এই প্রথম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন দি মারিয়া। সেখানে নিজের সেই বাজে সময় নিয়ে কথা বলেছেন আর্জেন্টাইন তারকা।
কোন কোন সময় দি মারিয়ার মনে হয়েছে আর্জেন্টিনার জার্সিতে আর খেলবেন না? সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সে সময়ের কথা, ‘একটি ২০১৮ বিশ্বকাপের পর, অন্যটি ২০১৯ কোপা আমেরিকার পর।’ দি মারিয়ার কাছে এ দুটি সময় ভুলে যাওয়ার মতোই, ‘২০১৮ বিশ্বকাপের পর সময়টা খুব কঠিন ছিল। আমি ওই সময় অনেক বিষয় নিয়ে ভাবছিলাম। কারণ, আমার পরিবার খুব ভুগছিল সবকিছু নিয়ে। এগুলোই আমার মাথায় ঘুরছিল।’
২০১৮ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছিল আর্জেন্টিনা। প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করার পর নাইজেরিয়ার বিপক্ষে সেই জয় এসেছিল। অন্য গ্রুপ ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল মেসি-দি মারিয়ার দল। দ্বিতীয় রাউন্ডে ফ্রান্সের বিপক্ষে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকেও আর্জেন্টিনা হেরেছিল ৪-৩ গোলে।
২০১৯ সালে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। তখন নাকি দি মারিয়া এতটাই হতাশ ছিলেন যে আর কখনোই আর্জেন্টিনার জার্সিতে খেলবেন না বলে মোটামুটি সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছিলেন, ‘আমি ওই হারের পর ভীষণ হতাশ ছিলাম। আর কখনো আর্জেন্টিনার হয়ে খেলব না বলে সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়েই ফেলেছিলাম। কিন্তু হঠাৎই মনে হলো, আমার ক্যারিয়ারে কী যেন নেই! আমি ক্লাব ফুটবলে সাফল্য পেয়েছি, কিন্তু কী যেন একটা পাওয়ার বিষয়টা অনুভব করছিলাম।’