নগ্নতার অভিযোগে রোনালদোর বিরুদ্ধে ইরানে ৯৯ বার দোররা মারার রায়ের খবরটি ভুয়া
সৌদি আরব ছেড়ে আপাতত দেশে ফিরতে হয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে। গতকাল রাতে পোর্তোয় ২০২৪ ইউরো বাছাইয়ে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ ছিল পর্তুগালের। রোনালদোর জোড়া গোলে এই ম্যাচে ৪-২ ব্যবধানের জয়ে ইউরোর মূলপর্বে ওঠা নিশ্চিত করেছে পর্তুগাল। প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন রোনালদো।
৭ ম্যাচের সব জিতে ‘জে গ্রুপ’ থেকে মোট ২১ পয়েন্ট নিয়ে ইউরোর মূলপর্বে উঠল পর্তুগাল। পোর্তোয় রোনালদো যখন পর্তুগালকে জেতাতে ব্যস্ত, তখন মাঠের বাইরে তাঁকে ঘিরে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সংবাদমাধ্যমে। গোল ডট কম, মার্কা ও নিউইয়র্ক পোস্টসহ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, নগ্নতার অভিযোগে রোনালদোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ইরানের কিছু আইনজীবী। রোনালদো এরপর ইরানে গেলে তাঁকে ৯৯ বার দোররা (চাবুক) মারার রায়ও নাকি দিয়েছে ইরানের বিচার বিভাগ।
তবে পর্তুগিজ তারকা অনুশোচনাবোধ থেকে ক্ষমা চাইলে এই শাস্তি এড়াতে পারবেন। ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো এই তথ্য জানিয়েছিল ইরানের কিছু সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, ইরানের সংবাদমাধ্যম ‘রউদাদ২৪’ এবং ‘শারাক ইমরোজ’ রোনালদোর বিরুদ্ধে ৯৯ বার চাবুক মারার শাস্তির সংবাদটি প্রকাশ করেছিল। রোনালদোর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ কি, সে বিষয়ে পরে জানানো যাবে। তার আগে জানিয়ে রাখা ভালো, ইরানের মাদ্রিদ দূতাবাস জানিয়েছে, এই খবর ভুয়া। খবরটির কোনো সত্যতা নেই—ইরানি দূতাবাস এই দাবি করেছে বলে জানিয়েছে মার্কা।
মাদ্রিদের ইরানি দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে একটি পোস্টও করেছে, ‘আন্তর্জাতিক কোনো অ্যাথলেটের বিরুদ্ধে ইরানে শাস্তির রায় দেওয়ার বিষয়টি আমরা শক্তভাবে অস্বীকার করছি। এমন ভিত্তিহীন খবর ফিলিস্তিনি জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধী এবং মানবতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারে।’ বিবৃতিতে এরপর বলা হয়, ‘রোনালদো গত ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর ফুটবল ম্যাচ খেলতে ইরানে এসেছিলেন। কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ মানুষ তাঁকে সাদরে বরণ করে নিয়েছিল। ফাতেম হাম্মামির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের প্রশংসাও করেছে দুই দেশের সাধারণ মানুষ ও কর্তৃপক্ষ।’
এবার রোনালদোর বিরুদ্ধে ইরানে নগ্নতার অভিযোগের গুজবটা জানানো যাক। সৌদি ক্লাব আল নাসরের হয়ে সেপ্টেম্বরে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ খেলতে ইরানে গিয়েছিলেন রোনালদো। সেখানে শরীরের ৮৫ শতাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত নারী শিল্পী ফাতেম হাম্মামির সঙ্গে দেখা করেন পর্তুগিজ কিংবদন্তি। ফাতেম রোনালদোর প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন পা দিয়ে। সেই প্রতিকৃতি রোনালদো উপহার হিসেবে গ্রহণও করেন এবং ছয় বছর অপেক্ষার পর পছন্দের ফুটবলারের সাক্ষাৎ পেয়ে ভীষণ খুশিও হয়েছিলেন ফাতেম হাম্মামি। সাক্ষাতের সময় তাঁর গালে একটা চুমু দিয়েছিলেন রোনালদো। সেই চুমুর ছবিও তোলা হয়। আর তাতেই নাকি নড়েচড়ে বসেন ইরানের আইনজীবীরা।
ইরানের সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে স্পেনের সংবাদমাধ্যম ‘মুন্দো দেপোর্তিভো’ জানিয়েছিল, ইরানে স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোনো নারীকে স্পর্শ করাকে নগ্নতা হিসেবে দেখা হয় এবং সে জন্য রোনালদোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন আইনজীবীরা। যদিও মাদ্রিদে ইরানি দূতাবাস বিবৃতির দিয়ে খবরটি মিথ্যা বলে দাবি করেছে।