সাগরিকার মা–বাবা কাঁদলেন, মেয়েকে জড়িয়ে ধরেই
মোসাম্মাৎ সাগরিকার বাবা লিটন আলী আর মা আনজু বেগম আজ সকালেই ঢাকায় এসেছেন। মেয়ে জানতেনই না মা–বাবা সেই ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল থেকে খেলা দেখতে ঢাকায় চলে এসেছেন। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের ভিআইপি বক্সে বাফুফের ব্যবস্থাপনাতেই খেলাটি দেখেছেন তাঁরা। উপভোগ করেছেন মেয়ের পায়ের কারুকাজ। ভারতের বিপক্ষে ১–০ গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় ৯৩ মিনিটে গোল শোধ করে গ্যালারি উত্তাল করে দিয়েছেন তাঁদের আদরের মেয়েটি। শুধু কি সমতা, সাগরিকার ওই সমতাসূচক গোলের পর কী তুলকালামটাই না ঘটে গেল আজ সাফের ফাইনালে। ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ দোকানি লিটন আলী আর গৃহিণী আনজু বেগমের কাছে পুরো ব্যাপারটিই স্বপ্নের মতো।
সব কাণ্ড ঘটে যাওয়ার পর তাঁরা দুজনই মাঠে নেমে এলেন। সাগরিকা তো অবাক। মা–বাবা এখানে? স্বপ্ন নয় তো। ছুটে এসে মাকে জড়িয়ে ধরলেন। তখন সেকি কান্না দুজনের! বাবা একটু দূরে দাঁড়িয়ে চোখ মুছতে লাগলেন। তিনি আর মা–মেয়ের মধ্যে ঢুকলেন না। মুহূর্তটা যেন একান্তই মা আর মেয়ের।
সাগরিকা শান্ত হয়ে জানালেন তাঁর সেই গোলের গল্প, ‘আমি জানতাম, আমরা পারব। ওরা যদি পারে, আমরা পারব না কেন!’ এই বিশ্বাস থেকেই তাঁর তোলপাড় করে দেওয়া সেই গোল।
বাবা লিটন আলী ম্যাচ শেষে বললেন, ‘মেয়ের জন্য কত সম্মান আমাদের। আজকের দিনটি আমার জীবনের সেরা দিন। ওর মায়েরও। মেয়েটা আমাদের গর্বিত করেছে।’
লিটন আলী কৃতজ্ঞতা জানালেন রানীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সেই শিক্ষক তাজুল ইসলামের প্রতি। যিনি রাঙাটুঙ্গি ফুটবল একাডেমি গড়ে তাঁর মেয়ের মতো এমন অনেককে ফুটবল নামের স্বপ্নটি ছোঁয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। সাগরিকা যে তাঁর একাডেমিতে খেলেই এই জায়গায় এসেছেন।
বাংলাদেশের নারী ফুটবলে সাগরিকা–অধ্যায়ের শুরু আগেই হয়েছে। আজ ফাইনালে সমতাসূচক গোলটা তাঁকে ফুটবলপ্রেমীদের মনে স্থায়ী জায়গাই করে দেওয়ার কথা।